রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

আপনার নবীকে চিনুন

আসসালামু আলাইকুম        Download PDF    ফেসবুক পেজ     Google plus    Web Site

 

ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :                                                                    
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) 
৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম" 





আপনার নবীকে চিনুন

আপনার নবীকে চিনুন
মুহাম্মাদ ইবন আহমদ ইবন মুহাম্মাদ আল-আম্মারী
অনুবাদক: আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া



সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি মানুষকে (বিদ্যা) শিখিয়েছেন কলম দ্বারা। শিক্ষা দিয়েছেন এমন বিষয় যা সে জানত না। সকল স্তুতি তাঁর-ই জন্য, যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কথা বলতে শিখিয়েছেন। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক ওই সত্তার প্রতি, যিনি মনগড়া কিছু বলেন না; যা বলেন আল্লাহর অহী প্রাপ্তির আলোকেই বলেন।
পরকথা, প্রতিটি মানুষের কর্তব্য তার নবীর পরিচয় জানা। কেননা আমাদের যে কেউ মারা গেলে তাকে কবরে শোয়ানোর পর তার দেহে প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অতঃপর দু’জন ফিরিশতা আসবেন। তারা তাকে বসিয়ে তার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। যেমন, বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিন বান্দাকে কবরে রাখার পরের অবস্থা বর্ণনা করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
«فَتُعَادُ رُوحُهُ فِي جَسَدِهِ، فَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ، فَيُجْلِسَانِهِ، فَيَقُولَانِ لَهُ: مَنْ رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ: رَبِّيَ اللَّهُ، فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا دِينُكَ؟ فَيَقُولُ: دِينِيَ الْإِسْلَامُ، فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ؟ فَيَقُولُ: هُوَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَقُولَانِ لَهُ: وَمَا عِلْمُكَ؟ فَيَقُولُ: قَرَأْتُ كِتَابَ اللَّهِ، فَآمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ، فَيُنَادِي مُنَادٍ فِي السَّمَاءِ: أَنْ صَدَقَ عَبْدِي».
“তার দেহে প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তখন তার কাছে দু‘জন ফিরিশতা আসবেন। তাকে বসিয়ে তারা জিজ্ঞেস করবেন, তোমার রব কে? সে বলবে, আমার রব আল্লাহ। তারা জিজ্ঞেস করবেন, তোমার দীন কী? সে বলবে, আমার দীন ইসলাম। তারা তাকে বলবেন, তোমাদের মাঝে প্রেরিত এ ব্যক্তি কে ছিলেন? সে বলবে, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারা বলবেন, তুমি তা জানলে কী করে? সে বলবে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি। অতঃপর তাতে ঈমান এনেছি এবং তা সত্যে পরিণত করেছি। তখন আসমান থেকে এক ঘোষক ঘোষণা দেবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে।”
অতএব, আমরা জানলাম, যে কেউ পবিত্র কুরআন পড়বে সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিচয় জানতে পারবে। সে আল-কুরআন থেকে জানতে পারবে:

প্রথম: মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ হলেন আল্লাহর রাসূল
আল-কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
﴿مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ﴾ [الفتح: ٢٩]
“মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল”। [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ২৯]

দ্বিতীয়: আল্লাহর রাসূলের প্রতি ঈমান অপরিহার্য
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ ءَامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ﴾ [النساء: ١٣٦]
“হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলের প্রতি”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৩৬]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
﴿فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [الاعراف: ١٥٨]
“সুতরাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো ও তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখেন। আর তোমরা তাঁর অনুসরণ কর, আশা করা যায় তোমরা হিদায়াত লাভ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৮]

তৃতীয়: তাঁর রিসালতের প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٞ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُۚ ﴾ [ال عمران: ١٤٤]
“আর মুহাম্মাদ কেবল একজন রাসূল। তাঁর পূর্বে নিশ্চয় অনেক রাসূল বিগত হয়েছেন”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৪৪]

চতুর্থ: তিনি সর্বশেষ নবী
যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব পড়বে, সে জানতে পারবে তাঁর রিসালত পূর্বতন সব আসমানী রিসালতের পরিসমাপ্তিকারী। তাঁর পরে কোনো নবী বা রাসূল নেই। যে কেউ এমন দাবী উত্থাপন করবে সে মিথ্যাবাদী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٖ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَۗ ﴾ [الاحزاب: ٤٠]
“মুহাম্মাদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নয়, তবে আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০]

পঞ্চম: তাঁর রিসালত পূর্ববর্তী সব ধর্মকে রহিত করে দিয়েছে
যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব পড়বে, সে জানতে পারবে যে তাঁর রিসালত সব আসমানী রিসালতকে রহিত করে দিয়েছে। সেহেতু তাঁর নবুওয়তের পরে এসব অনুসরণ করে আমল চলবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ ﴾ [المائ‍دة: ٤٨]
“আর আমরা তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যথাযথভাবে, এর পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও এর উপর তদারককারীরূপে। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তুমি তার মাধ্যমে ফয়সালা কর এবং তোমার নিকট যে সত্য এসেছে, তা ত্যাগ করে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা নির্ধারণ করেছি শরী‘আত ও স্পষ্ট পন্থা”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৪৮]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
﴿وَلَن تَرۡضَىٰ عَنكَ ٱلۡيَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡۗ قُلۡ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلۡهُدَىٰۗ وَلَئِنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَآءَهُم بَعۡدَ ٱلَّذِي جَآءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ ١٢٠﴾ [البقرة: ١٢٠]
“আর ইয়াহূদী ও নাসারারা কখনো তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ কর। বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহর হিদায়াত-ই হিদায়াত, আর যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর তোমার কাছে যে জ্ঞান এসেছে তার পর, তাহলে আল্লাহর বিপরীতে তোমার কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী থাকবে না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১২০]
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ، وَلَا نَصْرَانِيٌّ، ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ»
“সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, এ উম্মত (উম্মাতুদ দাওয়ার) যেকোনো ইয়াহূদী কিংবা খ্রিস্টান আমার নাম শুনবে আর আমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছি তাতে ঈমান না এনে মারা যাবে, সে জাহান্নামের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবে”।
আবদুল্লাহ ইবন ছাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَوْ أَصْبَحَ فِيكُمْ مُوسَى ثُمَّ اتَّبَعْتُمُوهُ، وَتَرَكْتُمُونِي لَضَلَلْتُمْ، إِنَّكُمْ حَظِّي مِنَ الْأُمَمِ، وَأَنَا حَظُّكُمْ مِنَ النَّبِيِّينَ»
“সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, যদি তোমাদের মাঝে মূসা ‘আলাইহিস সালাম থাকতেন আর তোমরা আমাকে ছেড়ে তার অনুসরণ করতে, তবে অবশ্যই তোমরা পথভ্রষ্ট হতে। তোমরা উম্মতগুলোর মধ্যে আমার অংশ। আর আমি নবীদের মধ্যে তোমাদের অংশ”।
জাবের ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ مُوسَى كَانَ حَيًّا، مَا وَسِعَهُ إِلَّا أَنْ يَتَّبِعَنِي»
“সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, যদি মূসা ‘আলাইহিস সালাম জীবিত থাকতেন আমার আনুগত্য ব্যতিরেকে তারও কোনো উপায় থাকত না”। [মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১৫১৫৬ হাসান লিগাইরিহী সনদে বর্ণিত]

ষষ্ঠ: তাঁর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রাণাধিক ভালোবাসা অপরিহার্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلۡ إِن كَانَ ءَابَآؤُكُمۡ وَأَبۡنَآؤُكُمۡ وَإِخۡوَٰنُكُمۡ وَأَزۡوَٰجُكُمۡ وَعَشِيرَتُكُمۡ وَأَمۡوَٰلٌ ٱقۡتَرَفۡتُمُوهَا وَتِجَٰرَةٞ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَمَسَٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَآ أَحَبَّ إِلَيۡكُم مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَجِهَادٖ فِي سَبِيلِهِۦ فَتَرَبَّصُواْ حَتَّىٰ يَأۡتِيَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَٰسِقِينَ ٢٤﴾ [التوبة: ٢٤]
“বল, ‘তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর সে ব্যবসা যার মন্দা হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করছ এবং সে বাসস্থান, যা তোমরা পছন্দ করছ, যদি তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে, তবে তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত’। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ২৪]
এ আয়াতের দাবী অনুযায়ী আল্লাহর রাসূলকে ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি ঈমান সঠিক হওয়ার অপরিহার্য শর্ত। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ، حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ»
“তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হবে না, যতক্ষণ না আমি তার প্রিয়তম হই তার পিতা, সন্তান এবং সব মানুষের চেয়ে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫; সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৪]
সে ব্যক্তি তো ঈমানের স্বাদই পায় না যে আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসে না। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ: مَنْ كَانَ اللهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا، وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ بَعْدَ أَنْ أَنْقَذَهُ اللهُ مِنْهُ، كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ»
“তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে তা দ্বারা ঈমানের স্বাদ পাবে: যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল প্রিয়তম হবে তাদের ছাড়া আর সবার চেয়ে, যে মানুষকে কেবল একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসবে এবং যে আল্লাহ তাকে কুফুরী থেকে মুক্তি দেওয়ার পর পুনরায় তাতে ফিরে যাওয়া তেমনি অপ্রিয় জ্ঞান করবে, যেমন অপছন্দ করে আগুন নিক্ষেপিত হওয়াকে”।

সপ্তম: তাঁর আনুগত্য অপরিহার্য
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য ও অনুকরণ তার জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَوَلَّوۡاْ عَنۡهُ وَأَنتُمۡ تَسۡمَعُونَ ٢٠ وَلَا تَكُونُواْ كَٱلَّذِينَ قَالُواْ سَمِعۡنَا وَهُمۡ لَا يَسۡمَعُونَ ٢١﴾ [الانفال: ٢٠، ٢١]
‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, অথচ তোমরা শুনছ। আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বলে আমরা শুনেছি অথচ তারা শুনে না”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ২০-২১]
সুতরাং যে রিসালতে বিশ্বাস স্থাপন করবে তার জন্য আনুগত্যও ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ﴾ [النساء: ٦٤]
“আর আমরা যেকোনো রাসূল প্রেরণ করেছি তা কেবল এ জন্য, যেন আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৪]
﴿مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ ﴾ [النساء: ٨٠]
“যে রাসূলের আনুগত্য করে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করে”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮০]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ أَطَاعَنِي فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ، وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ عَصَى اللهَ، وَمَنْ أَطَاعَ أَمِيرِي فَقَدْ أَطَاعَنِي، وَمَنْ عَصَى أَمِيرِي فَقَدْ عَصَانِي»
“যে আমার আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করে, আর যে আমার অবাধ্যতা দেখায় সে আল্লাহরই আবাধ্য হয়। তেমনি যে আমার নির্বাচিত নেতার আনুগত্য করে সেও আমার আনুগত্য করে, আর যে আমার নেতার অবাধ্যতা দেখায় সে আমারই আবাধ্য হয়”।
যে নবীর আনুগত্য করে সে সুপথ প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِن تُطِيعُوهُ تَهۡتَدُواْۚ ﴾ [النور: ٥٤]
‘আর যদি তোমরা তাঁর (রাসূলের) আনুগত্য কর, তবে হিদায়াত পাবে”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৪]
﴿ يَوۡمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمۡ فِي ٱلنَّارِ يَقُولُونَ يَٰلَيۡتَنَآ أَطَعۡنَا ٱللَّهَ وَأَطَعۡنَا ٱلرَّسُولَا۠ ٦٦ ﴾ [الاحزاب: ٦٦]
“যেদিন তাদের চেহারাগুলো আগুনে উপুড় করে দেওয়া হবে, তারা বলবে, ‘হায়, আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম এবং রাসূলের আনুগত্য করতাম”! [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৬৬]

অষ্টম: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ ও তাঁর সমর্থিত বিষয়ের আনুগত্য ওয়াজিব
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যত কথা, কাজ ও তাঁর সমর্থন করা বিষয় আছে সেসবের আনুগত্য ও অনুকরণ তার জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [الاعراف: ١٥٨]
‘আর তোমরা তার অনুসরণ কর, যাতে তোমরা হিদায়াত লাভ কর”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৮]
সেহেতু যে কেউ আল্লাহকে ভালোবাসে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করবেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١﴾ [ال عمران: ٣١]
“বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]

নবম: তাঁর আদেশ-নিষেধ শিরোধার্য
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করা এবং তাঁর নিষেধ থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ ٧﴾ [الحشر: ٧]
“রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর”। [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭]

দশম: তাঁর বিপরীত অবস্থান হারাম
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশের বিপরীত অবস্থান গ্রহণ হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَلۡيَحۡذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنۡ أَمۡرِهِۦٓ أَن تُصِيبَهُمۡ فِتۡنَةٌ أَوۡ يُصِيبَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٦٣﴾ [النور: ٦٣]
“অতএব, যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬৩]

একাদশ: তাঁর বিরুদ্ধাচরণ হারাম
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ কিংবা তাঁর কথায় বা কাজের অন্যথা তার জন্য হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيلِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ١١٥﴾ [النساء: ١١٥]
‘আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব যেদিকে সে ফিরে এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর আবাস হিসেবে তা খুবই মন্দ”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৫]

দ্বাদশ: তাঁকে কষ্ট দেওয়া হারাম
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর আনীত দীন, তাঁর ব্যক্তিত্ব, পরিবার, আত্মীয়বর্গ, সাহাবী ও অনুসারীদের কষ্ট দেওয়া হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يُؤۡذُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمۡ عَذَابٗا مُّهِينٗا ٥٧﴾ [الاحزاب: ٥٧]
‘নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লানত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক আযাব।’ {সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৭}
আল্লাহ আরও বলেন,
﴿وَٱلَّذِينَ يُؤۡذُونَ رَسُولَ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ ٦١﴾ [التوبة: ٦١]
“এবং যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬১]
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ إِن نَّعۡفُ عَن طَآئِفَةٖ مِّنكُمۡ نُعَذِّبۡ طَآئِفَةَۢ بِأَنَّهُمۡ كَانُواْ مُجۡرِمِينَ ٦٦﴾ [التوبة: ٦٥، ٦٦]
“বল, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রূপ করছিলে’? তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৫-৬৬]

ত্রয়োদশ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিষ্পাপ জানা
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর কথা, কাজ ও সমর্থন দেওয়া কাজে নিষ্পাপ ও নির্ভুল বলে বিশ্বাস করা জরুরি।
আল্লাহ তাঁকে বচনে-বলনে মুক্ত করেছেন সব ধরনের ভুল-ভ্রান্তি ও বিচ্যুতি থেকে। পক্ষান্তরে পৃথিবীর কোনো আলেম-বিজ্ঞানী ভুলের ঊর্ধ্বে নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلۡهَوَىٰٓ ٣ إِنۡ هُوَ إِلَّا وَحۡيٞ يُوحَىٰ ٤﴾ [النجم: ٣، ٤]
“আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না। তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরণ করা হয়”। [সূরা আন-নাজম, আয়াত: ৩-৪]
﴿وَلَوۡ تَقَوَّلَ عَلَيۡنَا بَعۡضَ ٱلۡأَقَاوِيلِ ٤٤ لَأَخَذۡنَا مِنۡهُ بِٱلۡيَمِينِ ٤٥ ثُمَّ لَقَطَعۡنَا مِنۡهُ ٱلۡوَتِينَ ٤٦ فَمَا مِنكُم مِّنۡ أَحَدٍ عَنۡهُ حَٰجِزِينَ ٤٧﴾ [الحاقة: ٤٤، ٤٧]
“যদি তিনি আমার নামে কোনো মিথ্যা রচনা করত, তবে আমরা তার ডান হাত পাকড়াও করতাম। তারপর অবশ্যই আমরা তার হৃদপিণ্ডের শিরা কেটে ফেলতাম। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ-ই তাকে রক্ষা করার থাকত না”। [সূরা আল-হাক্কাহ, আয়াত: ৪৪-৪৭]
আল্লাহ তাঁকে কাজে-কর্মেও মুক্ত করেছেন সব ধরনের ভুল-ভ্রান্তি ও বিচ্যুতি থেকে। পক্ষান্তরে পৃথিবীর কোনো আলেম-বিজ্ঞানীই ত্রুটিমুক্ত নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [الاعراف: ١٥٨]
“আর তোমরা তাঁর আনুগত্য করো, যাতে তোমরা হিদায়াত পাবে।’ [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৮]
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
﴿قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١﴾ [ال عمران: ٣١]
“বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]
মালেক ইবন হুয়াইরীছ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي»
‘তোমরা সালাত আদায় কর যেভাবে আমাকে তোমরা সালাত আদায় করতে দেখ”।
জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لِتَأْخُذُوا مَنَاسِكَكُمْ، فَإِنِّي لَا أَدْرِي لَعَلِّي لَا أَحُجُّ بَعْدَ حَجَّتِي هَذِهِ»
“তোমরা তোমাদের হজের বিধান জেনে নাও। কারণ, আমি জানি না, সম্ভবত আমার এ হজের পর আমি আর হজ করতে পারব না”।
আল্লাহ তাঁকে তাঁর সমর্থনের ব্যাপারেও নিষ্পাপ বানিয়েছেন। ফলে তিনি কখনো মিথ্যাকে সমর্থন করেন নি কিংবা অবৈধ কিছু দেখে নীরব থাকেন নি। পক্ষান্তরে অন্য সব মনীষীই কখনো কখনো সিদ্ধান্তে ভুল করেন।
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ يَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٦٧﴾ [المائ‍دة: ٦٧]
“হে রাসূল, তোমার কাছে যা নাযিল করা হয়েছে তা প্রচার করো, যদি তা না কর তবে তো তুমি তাঁর রিসালাত প্রচার করলে না, আর আল্লাহ মানুষদের থেকে তোমাকে রক্ষা করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ কাফের কাওমকে হিদায়াত করেন না।”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৬৭]
যে ব্যক্তি কুরআন পড়বে, জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্মান ও ভক্তি করা অপরিহার্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لِّتُؤۡمِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُۚ﴾ [الفتح: ٩]
“যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আন, তাকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ পাঠ কর”।’ [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ৯]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্মানের আলামত সম্পর্কে জানতে পারবে। তাঁর সম্মানের বিষয়টিও আল্লাহ-রাসূল কর্তৃক নির্ধারিত। এটাকে আল্লাহ মানুষের রুচি বা ইচ্ছের ওপর ছেড়ে দেন নি।

♥ প্রথম আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ও কাজকে সম্মান করা। সেহেতু তাঁর কথার ওপর কারও কথা কিংবা তাঁর কাজের ওপর অন্য কারও কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تُقَدِّمُواْ بَيۡنَ يَدَيِ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٞ ١ ﴾ [الحجرات: ١]
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রবর্তী হয়ো না এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১}

♥ দ্বিতীয় আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ও কাজের অনুকরণ করা। সেহেতু তাঁর কথার বিপরীতে অন্য কারও কথা কিংবা তাঁর কর্মপন্থার বিপরীতে অন্য কারও কর্মপদ্ধতি গ্রহণ না করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٖ وَلَا مُؤۡمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمۡرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلۡخِيَرَةُ مِنۡ أَمۡرِهِمۡۗ وَمَن يَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَٰلٗا مُّبِينٗا ٣٦﴾ [الاحزاب: ٣٦]
‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না, আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৬}

♥ তৃতীয় আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ সর্বাংশে সম্মান করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَلۡيَحۡذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنۡ أَمۡرِهِۦٓ أَن تُصِيبَهُمۡ فِتۡنَةٌ أَوۡ يُصِيبَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٦٣﴾ [النور: ٦٣]
“অতএব, যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬৩]

♥ চতুর্থ আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিষেধ সর্বাংশে সম্মান করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَوۡمَئِذٖ يَوَدُّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ وَعَصَوُاْ ٱلرَّسُولَ لَوۡ تُسَوَّىٰ بِهِمُ ٱلۡأَرۡضُ وَلَا يَكۡتُمُونَ ٱللَّهَ حَدِيثٗا ٤٢ ﴾ [النساء: ٤٢]
“সেদিন আশা করবে যারা কুফরী করেছিল এবং রাসূলের অবাধ্য হয়েছিল, যদি যমীন তাদের নিয়ে সমান হয়ে যেতো, আর তারা আল্লাহর কাছে কোনো কথাই লুকাবে না”। [সূরা আন-নিসা: ৪২]
আরও বলেন,
﴿وَيَوۡمَ يَعَضُّ ٱلظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيۡهِ يَقُولُ يَٰلَيۡتَنِي ٱتَّخَذۡتُ مَعَ ٱلرَّسُولِ سَبِيلٗا ٢٧﴾ [الفرقان: ٢٦]
“সেদিন যালেম ব্যক্তি তার হাত কামড়াতে কামড়াতে বলতে থাকবে, হায় যদি রাসূলের সাথে কোনো পন্থা অবলম্বন করতাম!” [সূরা আল-ফুরকান: ২৭]
আরও বলেন,
﴿وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ﴾ [الحشر: ٧]
‘আর যা থেকে তিনি তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে বিরত হও।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭]

♥ পঞ্চম আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস বা বাক্যোচ্চারণকে সম্মান করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَرۡفَعُوٓاْ أَصۡوَٰتَكُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ ٱلنَّبِيِّ﴾ [الحجرات: ٢]
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের ওপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না”। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ২]

♥ ষষ্ঠ আলামত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতকে সম্মান করা এবং দৃঢ়ভাবে তা আঁকড়ে ধরা। ‘ইরবাদ ইবন সারিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ يَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّهَا ضَلَالَةٌ فَمَنْ أَدْرَكَ ذَلِكَ مِنْكُمْ فَعَلَيْهِ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ المَهْدِيِّينَ، عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ»
“(আমার পরে) তোমাদের যে কেউ বেঁচে থাকবে, সে অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। তোমরা নবআবিষ্কৃত ধর্মীয় বিষয় থেকে সাবধান। কারণ, তা পথভ্রষ্টতা। তোমাদের যে কেউ এ যুগ পাবে, তার কর্তব্য হবে আমার এবং হেদায়াত ও সুপথপ্রাপ্ত খলীফাদের আদর্শ অবলম্বন করবে এবং তা দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে”।

♥ সপ্তম আলামত: যখনই তাঁর নাম নিজে উচ্চারণ করা হবে বা অন্য কাউকে উচ্চারণ করতে শোনা যাবে, তাঁর ওপর দুরূদ পড়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا ٥٦﴾ [الاحزاب: ٥٦]
“নিশ্চয় আল্লাহ (ঊর্ধ্ব জগতে ফিরিতাদের মধ্যে) নবীর প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফিরিশতাগণ নবীর জন্য দো‘আ করে। হে মুমিনগণ, তোমরাও নবীর ওপর দুরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৬]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ »
“ঐ ব্যক্তির নাক ধূলি ধূসরিত হোক যার সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয় আর তখন সে আমার ওপর সালাত পাঠ করে না”।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাত কীভাবে পাঠ করতে হবে তা অহীর মাধ্যমেই শেখানো হয়েছে। একে মানুষের মর্জি বা রুচির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয় নি। আবু মাসঊদ আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
«أَتَانَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ فِي مَجْلِسِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، فَقَالَ لَهُ بَشِيرُ بْنُ سَعْدٍ: أَمَرَنَا اللهُ تَعَالَى أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ؟ قَالَ: فَسَكَتَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قُولُوا اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ فِي الْعَالَمِينَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَالسَّلَامُ كَمَا قَدْ عَلِمْتُمْ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদের সম্মুখে আগমন করলেন যখন আমরা সা‘দ ইবন উবাদার মজলিসে বসা ছিলাম। তখন তাঁর উদ্দেশে বাশীর ইবন সা‘দ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তা‘আলা তো আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আপনার ওপর দরূদ পড়তে; আপনার ওপর আমরা কীভাবে দরূদ পড়ব?’ তিনি বললেন, বলো: (উচ্চারণ) ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিঁও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া‘আলা আ-লি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ; আল্লাহুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিঁও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর এইরূপ রহমত নাযিল করো, যেমনটি করেছিলে ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ, তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর বরকত নাযিল করো, যেমন বরকত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়”।

যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই নিজের কোনো ভালো বা মন্দ করতে সক্ষম নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُل لَّآ أَمۡلِكُ لِنَفۡسِي نَفۡعٗا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ﴾ [الاعراف: ١٨٨]
“বল, ‘আমি আমার নিজের কোনো উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতা রাখি না, তবে আল্লাহ যা চান”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮৮]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যের কোনো ভালো বা মন্দ করতে সক্ষম নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلۡ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا رَشَدٗا ٢١﴾ [الجن: ٢١]
“বল, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য না কোনো অকল্যাণ করার ক্ষমতা রাখি এবং না কোনো কল্যাণ করার”। {সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ২১]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ থেকে ‘গায়ব’ সম্পর্কে জানতেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿تِلۡكَ مِنۡ أَنۢبَآءِ ٱلۡغَيۡبِ نُوحِيهَآ إِلَيۡكَۖ مَا كُنتَ تَعۡلَمُهَآ أَنتَ وَلَا قَوۡمُكَ مِن قَبۡلِ هَٰذَاۖ فَٱصۡبِرۡۖ إِنَّ ٱلۡعَٰقِبَةَ لِلۡمُتَّقِينَ ٤٩﴾ [هود: ٤٩]
“এগুলো গায়েবের সংবাদ, আমি তোমাকে অহীর মাধ্যমে তা জানাচ্ছি। ইতোপূর্বে তা না তুমি জানতে এবং না তোমার কওম। সুতরাং তুমি সবর কর। নিশ্চয় শুভ পরিণাম কেবল মুত্তাকীদের জন্য”। [সূরা হূদ, আয়াত: ৪৯]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
﴿قُل لَّآ أَمۡلِكُ لِنَفۡسِي نَفۡعٗا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ وَلَوۡ كُنتُ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ لَٱسۡتَكۡثَرۡتُ مِنَ ٱلۡخَيۡرِ وَمَا مَسَّنِيَ ٱلسُّوٓءُۚ إِنۡ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٞ وَبَشِيرٞ لِّقَوۡمٖ يُؤۡمِنُونَ ١٨٨﴾ [الاعراف: ١٨٨]
“বল, ‘আমি আমার নিজের কোনো উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতা রাখি না, তবে আল্লাহ যা চান। আর আমি যদি গায়েব জানতাম তাহলে অধিক কল্যাণ লাভ করতাম এবং আমাকে কোন ক্ষতি স্পর্শ করত না। আমিতো একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা এমন কওমের জন্য, যারা বিশ্বাস করে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮৮]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘গায়ব’ সম্পর্কে যা জানতেন তা নবুওয়াত ও রিসালতের সুবাদে, বিলায়াত বা ওলি হবার কারণে নয়, যেমন ধারণা করে কোনো কোনো সূফী ও তাসাওউফপন্থী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُل لَّآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِي خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ إِنِّي مَلَكٌۖ إِنۡ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَيَّۚ قُلۡ هَلۡ يَسۡتَوِي ٱلۡأَعۡمَىٰ وَٱلۡبَصِيرُۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ ٥٠﴾ [الانعام: ٥٠]
“বল, ‘তোমাদেরকে আমি বলি না, আমার কাছে আল্লাহর ভাণ্ডারসমূহ রয়েছে এবং আমি গায়েব জানি না এবং তোমাদেরকে বলি না, নিশ্চয় আমি ফিরিশতা। আমি কেবল তাই অনুসরণ করি যা আমার কাছে অহী প্রেরণ করা হয়’। বল, ‘অন্ধ আর চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? অতএব তোমরা কি চিন্তা করবে না?” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৫০]
কিছু কিছু সূফী বলে থাকেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত নয়, বিলায়াতের মাধ্যমে ‘গায়ব’ সম্পর্কে জানতেন, যাতে এ দাবীও করা যায় যে সূফী-ওলিরাও গায়েব সম্পর্কে অবগত হতে পারেন বিলায়াতের মাধ্যমে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের এমন দাবীর নাকচ করতে গিয়ে বলেন,
﴿مَّا كَانَ ٱللَّهُ لِيَذَرَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ عَلَىٰ مَآ أَنتُمۡ عَلَيۡهِ حَتَّىٰ يَمِيزَ ٱلۡخَبِيثَ مِنَ ٱلطَّيِّبِۗ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُطۡلِعَكُمۡ عَلَى ٱلۡغَيۡبِ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَجۡتَبِي مِن رُّسُلِهِۦ مَن يَشَآءُۖ فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۚ وَإِن تُؤۡمِنُواْ وَتَتَّقُواْ فَلَكُمۡ أَجۡرٌ عَظِيمٞ ١٧٩ ﴾ [ال عمران: ١٧٩]
“আল্লাহ এমন নন যে, তিনি মুমিনদেরকে (এমন অবস্থায়) ছেড়ে দেবেন যার ওপর তোমরা আছ। যতক্ষণ না তিনি পৃথক করবেন অপবিত্রকে পবিত্র থেকে। আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদেরকে গায়েব সম্পর্কে জানাবেন। তবে আল্লাহ তাঁর রাসূলদের মধ্যে যাকে চান বেছে নেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন। আর যদি তোমরা ঈমান আন এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে তোমাদের জন্য রয়েছে মহাপ্রতিদান”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৯]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
﴿عَٰلِمُ ٱلۡغَيۡبِ فَلَا يُظۡهِرُ عَلَىٰ غَيۡبِهِۦٓ أَحَدًا ٢٦ إِلَّا مَنِ ٱرۡتَضَىٰ مِن رَّسُولٖ فَإِنَّهُۥ يَسۡلُكُ مِنۢ بَيۡنِ يَدَيۡهِ وَمِنۡ خَلۡفِهِۦ رَصَدٗا ٢٧﴾ [الجن: ٢٦، ٢٧]
“তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া। আর তিনি তখন তার সামনে ও তার পেছনে প্রহরী নিযুক্ত করবেন”। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ২৬-২৭]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি শরী‘আত প্রবর্তক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আল্লাহর প্রবর্তিত শরী‘আত অনুসরণকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ثُمَّ جَعَلۡنَٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ فَٱتَّبِعۡهَا وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨ ﴾ [الجاثية: ١٨]
“তারপর আমরা তোমাকে দীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না”। [সূরা আল-জাছিয়া, আয়াত: ১৮]
﴿وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَيۡهِمۡ ءَايَاتُنَا بَيِّنَٰتٖ قَالَ ٱلَّذِينَ لَا يَرۡجُونَ لِقَآءَنَا ٱئۡتِ بِقُرۡءَانٍ غَيۡرِ هَٰذَآ أَوۡ بَدِّلۡهُۚ قُلۡ مَا يَكُونُ لِيٓ أَنۡ أُبَدِّلَهُۥ مِن تِلۡقَآيِٕ نَفۡسِيٓۖ إِنۡ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَيَّۖ إِنِّيٓ أَخَافُ إِنۡ عَصَيۡتُ رَبِّي عَذَابَ يَوۡمٍ عَظِيمٖ ١٥ قُل لَّوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَا تَلَوۡتُهُۥ عَلَيۡكُمۡ وَلَآ أَدۡرَىٰكُم بِهِۦۖ فَقَدۡ لَبِثۡتُ فِيكُمۡ عُمُرٗا مِّن قَبۡلِهِۦٓۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ١٦﴾ [يونس: ١٥، ١٦]
‘আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, ‘এটি ছাড়া অন্য কুরআন নিয়ে এসো। অথবা একে বদলাও’। বল, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোন পরিবর্তনের অধিকার নেই। আমিতো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আযাবের’। বল, ‘যদি আল্লাহ চাইতেন, আমি তোমাদের উপর তা পাঠ করতাম না। আর তিনি তোমাদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করতেন না। কেননা ইতপূর্বে আমি তোমাদের মধ্যে দীর্ঘ জীবন অতিবাহিত করেছি। তবে কি তোমরা বুঝ না?” [সূরা ইঊনুস, আয়াত: ১৫-১৬]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি শরী‘আত প্রবর্তক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আল্লাহর অহী বা প্রত্যাদেশের প্রচারক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ يَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٦٧﴾ [المائ‍دة: ٦٧]
‘হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৬৭]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি শরী‘আত প্রবর্তক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আল্লাহর ওহি বা প্রত্যাদেশের ভাষ্যকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلذِّكۡرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيۡهِمۡ وَلَعَلَّهُمۡ يَتَفَكَّرُونَ ٤٤﴾ [النحل: ٤٤]
“তোমার প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পার, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে”। [সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ৪৪]
যে কেউ কুরআন পড়বে সে জানতে পারবে যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করে তাদের ‘আকীদা ও আমল এবং বিশ্বাস ও কর্ম শুদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [الاعراف: ١٥٨]
“আর তোমরা তার অনুসরণ কর, আশা করা যায়, তোমরা হিদায়াত লাভ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৮] আরও বলেন,
﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١﴾ [ال عمران: ٣١]
“বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]
আরও বলেন,
﴿ لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِي رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَةٞ لِّمَن كَانَ يَرۡجُواْ ٱللَّهَ وَٱلۡيَوۡمَ ٱلۡأٓخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرٗا ٢١﴾ [الاحزاب: ٢١]
“অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ২১]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যথাযথ অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমিন।


সূত্র : Way To Jannah

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

নাবী ও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পার্থিব পরীক্ষা

আসসালামু আলাইকুম               Download PDF

 

ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :                                                                    
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) 
৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"    ৭ . "green tech" এর সবগুলোই ভাল



 নাবী ও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পার্থিব পরীক্ষা :


লেখক : মুহাম্মাদ আতাউর রহমান সালাফী
অনুলিখন : আফফান বিন তৈয়ব
মুসআব বিন সা’দ স্বীয় পিতা সা’দ বিন আবু ওয়াক্কাস থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (সা’দ) বলেন, “আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল ﷺ! কোন মানুষ সর্বাধিক কঠিন পরীক্ষাগ্রস্ত?’ তিনি ﷺ উত্তরে বলেন, ‘নাবীগণ, অতঃপর সর্বোত্তম ব্যক্তি, অতঃপর উত্তম ব্যক্তি। বান্দাকে তার দ্বীন অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়। যদি সে দৃঢ় দ্বীন সম্পন্ন হয়, পরীক্ষা কঠিন হয়। যদি দ্বীনে দুর্বলতা থাকে, দ্বীনের মান অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়। বান্দা সর্বদা পরীক্ষার সম্মুখীন হতে থাকে এমতাবস্থায় পরীক্ষা তাকে ছেড়ে দেয়, ধরার বুকে সে চলতে থাকে এবং তার কোনো পাপ থাকে না (সাহীহ ইবনু মাজাহ্ আলবানী/৩২৪৯, সাহীহাহ/১৪৩, তিরমিযী/২৩৯৮)।
মহান আল্লাহ্ সফলতা প্রদানের জন্য শুধুমাত্র ক্বিয়ামাত দিবসে হিসাবের সম্মুখীন করবেন তাই নয়, বরং আমরা তার দ্বীনে কতটুকু সঠিকভাবে অবস্থান করছি তার মূল্যায়ণের জন্য পার্থিব জীবনেই বহুভাবে পরীক্ষার সম্মুখীন করে আমাদের দ্বীনের মর্যাদা উন্নীত করেন; যদি আমরা এই পরীক্ষা সমূহে উত্তীর্ণ হতে পারি তবে পরকালীন পরীক্ষায় ইনঁশাআল্লাহ সফল হতে পারবো।
বক্ষ্যমাণ হাদীছে এ রকম পরীক্ষা ও তার ফাযীলাত বর্ণনা দিয়ে নাবী মুহাম্মাদ ﷺ বলেন, আল্লাহর প্রতি যে যত বেশি আস্থাশীল, সে ততবেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। যেহেতু নাবীগণ সর্বোচ্চ ঈমানদার ও আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল তাই তারা সব থেকে বেশি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। অতঃপর ক্রমানুযায়ী উত্তম ও আল্লাহর নিকটবর্তী লোকেরা স্বীয় মর্যাদা ও মানানুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হন। দ্বীনের দৃঢ়তা থাকলে পরীক্ষা কঠিন হয়। দ্বীনে দুর্বলতা থাকলে পরীক্ষা শিথিল হয়।
আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা পরীক্ষাগুলি বাহ্যতঃ বিপদ হলেও সেগুলি মূলতঃ রহমত স্বরূপ। কারণ আল্লাহ তাআ’লা এ রকম পরীক্ষার মাধ্যমে একজন মু’মিনকে শুধু বিপদগ্রস্ত করেন না বরং এর দ্বারা সর্বদা পরীক্ষা করতে করতে সম্পূর্ণরূপে পাপমুক্ত করেন ও একজন মু’মিন ব্যক্তি পূর্ণমাত্রায় নিষ্পাপ হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট প্রবেশ করলাম এমন অবস্থায় যে, তিনি ﷺ জ্বরাক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল ﷺ! আপনি চরম জ্বরাক্রান্ত হোন !’ তিনি ﷺ বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তোমাদের দু’জন মানুষের সমপরিমাণ জ্বরাক্রান্ত হই।’ আমি বললাম, ‘এটা এজন্যই যে, আপনি দ্বিগুণ প্রতিদান পেয়ে থাকেন।’ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ‘হ্যাঁ, বিষয়টি তেমনই; যখনই কোনো মুসলিম কোনো কাঁটার কষ্ট অথবা তার চেয়ে অধিক কষ্ট অনুভব করে, আল্লাহ তার পরিবর্তে তার পাপমোচন করে দেন, যেমন গাছ তার পাতা ঝরিয়ে দেয়” (বুখারী, হা/৫৬৪৮)।
নাবীগণের জীবন চরিতের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে মুহাম্মাদ ﷺ এর বাণী “নাবীগণ সর্বাধিক কঠিন পরীক্ষাগ্রস্ত” স্পষ্ট হয়ে যায়। কেননা নাবীগণ তাদের দ্বারা হয়ে যাওয়া ত্রুটি সংশোধনের জন্য কিংবা দ্বীনের দৃঢ়তার প্রমাণে অকল্পনীয় পরীক্ষা ও বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। আদম আলাইহিস সালাম এর পোষাক ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয়, অতঃপর তাওবার দ্বারা পাপমুক্ত হন। ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েও মুক্তি পাননি বরং শেষ পর্যন্ত আত্মীয়স্বজন, স্বীয় জন্মভূমি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হন। জনহীন, পানাহারহীন প্রান্তরে স্ত্রী-পুত্র নির্বাসন এবং পুত্র ক্বুরবানীর মতো পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে দ্বীনের দৃঢ়তা প্রমাণ করেন।
ইয়াকুব আলাইহিস সালাম পুত্র বিয়োগে শোকাহত হয়ে অন্ধ হয়ে যান। ইউসুফ আলাইহিস সালাম নির্জন কুপে নিক্ষিপ্ত, বিক্রিত ও কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। মূসা আলাইহিস সালাম সদ্য জন্মের পরে পরেই প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে বাক্সবন্দি অবস্থায় সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত হন। ফিরআউনের মতো শত্রুর তত্বাবধানে পালিত হয়ে তার বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করে দেশ ত্যাগ করতে হয়। আইয়ুব আলাইহিস সালাম অনেক সন্তানের অধিকারী ও বিত্তবান নাবী ছিলেন। আল্লাহ তাকে পরীক্ষা করার জন্য সকল সম্পদ নষ্ট করে দেন, আবাস ভেঙে ঘর চাপা দিয়ে সন্তানাদি ছিনিয়ে নেন। শেষ পর্যন্ত আপাদমস্তক দুরারোগ্য চর্মরোগে আক্রান্ত হন। ফলস্বরূপ শরীর থেকে মাংস খসে খসে পড়তে থাকে। এ রোগগ্রস্ত অবস্থা দীর্ঘ ১৮ বছর মতান্তরে ১৩ বছর স্থায়ী হয়। একমাত্র তার স্ত্রী ব্যতীত সকলেই সঙ্গ ত্যাগ করে। [উল্লেখ্য যে, একথাগুলো ইয়াহুদীদের তৈরি করা, যা ব্যাপক প্রসিদ্ধি লাভ করেছে; নবীদের কাহিনী ১/২৫৬ (অনুলেখকের সংযোজন)]তবুও ঈমান ও ধৈর্য্যে বিন্দুমাত্র ত্রুটি দেখা যায় নি। তাই চরমভাবে কোনো ব্যক্তি বিপদগ্রস্ত হলে আইয়ুব আলাইহিস সালাম এর ন্যায় ধৈর্য্য ধারণ করার উপদেশ প্রদান করা হয়।
আল্লাহ তাআ’লা তার প্রশংসায় বলেন,
إِنَّا وَجَدْنَاهُ صَابِرًا ۚ نِّعْمَ الْعَبْدُ ۖ إِنَّهُ أَوَّابٌ
“আমি তাঁকে (আইয়ুব) পেয়েছি ধৈর্য্যশীল, কত উত্তম বান্দা সে। সে ছিল আমার অভিমুখী।” (সূরা সোয়াদ ৩৮/৪৪) (মুখতাসার কাসাসুল আম্বিয়া, ফাতহুল বারী)
আমাদের নাবী মুহাম্মাদ ﷺ কতভাবে পরীক্ষার সম্মুখীন হন সে বিষয়ে সবিস্তার পাঠকমহল অবগত। বিভিন্নভাবে অত্যাচারের সম্মুখীন হওয়ার পরে যখন দ্বীন থেকে পিছুপা করানো সম্ভব হয় নি, তখন রুদ্ধদ্বার বৈঠক করা হয়। যে বৈঠকে ইবলিশ শয়তানও অংশগ্রহণ করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ফলস্বরূপ জন্মভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হন। মহান আল্লাহ শুধু নাবীগণকে পরীক্ষা করেন নি। ঈমান ও দ্বীনের মান অনুযায়ী অন্যদেরও পরীক্ষা করেন সে ইঙ্গিতও এ হাদীছে রয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
أُولَٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ  الْمُهْتَدُونَ
“নিশ্চয়ই আমি তোমাদের ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, প্রাণ ও ফল শস্যের অভাবের কোনও একটি দ্বারা পরীক্ষা করবো, (হে মুহাম্মাদ ﷺ) তুমি ঐ সকল ধৈর্য্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান করো, যাদের উপর কোনও বিপদ এলে তারা বলে, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ (নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা তারই দিকে ফিরে যাবো), এদের উপর তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে করুনা বর্ষিত হয় এবং এরাই হল সুপথপ্রাপ্ত” (সূরা বাক্বারাহ ২/১৫৫-৫৭)।
উপরের আয়াতে বর্ণিত পরীক্ষাসমূহ একজন মানুষের জীবনে আমরা সচরাচর প্রত্যক্ষ করি। এ রকম পরীক্ষা আমাদের জীবনে এলে আমরা তাকে বিপদ বলে থাকি। এরূপ বিপদনামী আল্লাহর পরীক্ষায় একজন মু’মিনের ধৈর্য্যধারণই হল মূল হাতিয়ার। নিজেকে তিরস্কৃত কিংবা পর্যুদস্ত মনে করে অবিচল হয়ে আল্লাহর প্রতি আস্থা হারানো কোনও মতেই সমীচীন নয়। আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল হয়ে বিপদ থেকে মুক্তি তার নিকটেই কামনা করা উচিৎ। ধৈর্য্যধারণের মাধ্যমে ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মর্যাদা বৃদ্ধি এবং পাপমোচনের পথ সুগম করে জান্নাতের সুবাস অনুভব করা উচিৎ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “মু’মিনের ব্যথা-বেদনা কিংবা ক্লান্তি কিংবা অসুস্থতা কিংবা দুশ্চিন্তা এমনকি ভাবনা যা তাকে ভাবিয়ে তোলে এদের বিনিময়ে আল্লাহ তাআ’লা তার পাপ মিটিয়ে দেন।” (মুসলিম/৬৭৩৩)
ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আবু রাবাহকে বলেন, আমি কি তোমাকে এক জান্নাতী মহিলা দেখাব? আবু রাবাহ বলেন, হ্যাঁ। ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এই কৃষ্ণকায় মহিলাটি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকটে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল ﷺ!আমি মৃগীগ্রস্ত হই এবং আমি আমার লজ্জাস্থান খুলে যাওয়ার ভয় করছি, কাজেই আমার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করে দিন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “তুমি চাইলে ধৈর্য্যধারণ করো, জান্নাত পাবে; আর চাইলে আল্লাহর নিকট সুস্থতার দুআ করে দিচ্ছি।” মহিলাটি বললেন, ‘ধৈর্য্যধারণ করবো।’ পুনরায় মহিলাটি বললো, ‘আমি লজ্জাস্থান খুলে যাওয়ার ভয় করছি, যেন লজ্জাস্থান খুলে না যায় সে দুআ করে দিন।’ তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তার জন্য দুআ করে দিলেন। (বুখারী/৬৭৩৬)
আমাদের আপনজন বিদায় নিলে অনেকে মাসজিদে যথারীতি হাজিরা দেয়। আবার অনেকে বিপদ ঘনীভূত হলে আল্লাহকে ডাকে। পায়খানার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হয় না, কিন্তু যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় অথবা আমাশয়ের ফলে পেটে কুনকুনে ব্যথা হয়, তখন নিষেধের কথা ভুলে আল্লাহ, আল্লাহ বলে তাকে স্মরণ করা হয়। এর থেকেও বুঝা যায় যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত পরীক্ষা আমাদের জন্য বিশেষ অনুগ্রহ। কারণ এর ফলে তাকে স্মরণ করা আমাদের জন্য সহজ হয়ে যায়, যার অর্থ হল অপরাধ হ্রাস। আর অপরাধ হ্রাসের অর্থই হল মর্যাদা বৃদ্ধি ও পাপমোচন। বিপদ কেটে গেলে আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া মু’মিনের লক্ষণ বিরোধী কাজ।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَإِذَا مَسَّ الْإِنسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنبِهِ أَوْ قَاعِدًا أَوْ قَائِمًا فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُ ضُرَّهُ مَرَّ كَأَن لَّمْ يَدْعُنَا إِلَىٰ ضُرٍّ مَّسَّهُ ۚ كَذَٰلِكَ زُيِّنَ لِلْمُسْرِفِينَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
“আর যখন মানুষকে কোনও ক্লেশ কষ্ট স্পর্শ করে তখন আমাকে ডাকতে থাকে শুয়ে, বসে এবং দাঁড়িয়েও; অতঃপর যখন আমি ওর কষ্ট দূর করে দিই তখন সে নিজের পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে, যে কষ্ট তাকে স্পর্শ করেছিল তা মোচন করার জন্য সে যেন আমাকে কখনো ডাকেই নি। এই সীমালঙ্ঘনকারীদের কার্যকলাপ তাদের কাছে এইরূপই চাকচিক্যময় মনে হয়” (সূরা ইউনুস ১০/১২)।
আল্লাহর পরীক্ষায় করণীয় :
আল্লাহর পরীক্ষায় করণীয় হিসাবে মহান আল্লাহ তাআ’লা সূরা বাক্বারাহ এর ১৫৫-১৫৬ নং আয়াতে ধৈর্য্যধারণ ও ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠের শিক্ষা দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো সংযোজন করে যে দুআ পাঠের শিক্ষা দিয়েছেন তা হল —
إِنَّا ِللهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ
اَللَّهُمَّ أَجِرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِيْ وَأَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহুম্মা জুরনী ফী মুসিবাতী ওয়া আখলিফ লী খাইরাম মিনহা)।
অর্থ : নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা তারই দিকে ফিরে যাবো। হে আল্লাহ তুমি আমাকে এই পরীক্ষার প্রতিদান দাও এবং এর চাইতে উত্তম বিকল্প দান করো (মুসলিম/২১৬৫)।
সাহাবিয়া উম্মু সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এর স্বামী আবু সালামা ইন্তেকাল করলে উক্ত দুআ তিনি পাঠ করেন ও মনে মনে ভাবেন যে, রাসূলের ﷺ ডাকে সাড়া দিয়ে প্রথম হিজরতকারী আবু সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর থেকে কোন মুসলিম ব্যক্তি আর উত্তম আছে যে আবু সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বিকল্প হিসাবে আমার স্বামী হবে? তিনি বলেন, “তবুও আমি এ দুআ পাঠ করি। ফলস্বরূপ আল্লাহ আমাকে তার উত্তম বিকল্প হিসাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে স্বামী হিসাবে দান করেন” (মুসলিম/২১৬৫)।
পরিশেষে আল্লাহর কাছে দুআ – হে আল্লাহ, তোমার পরীক্ষায় আমাদের ধৈর্য্যধারণ করার তাওফীক দাও। পরীক্ষা শুধু বিপদ নয়, পাপমোচনের ওয়াসীলা বানাও এবং পরকালে জান্নাতুল ফিরদাউস দান কর (আমীন)
***মাসিক সরল পথ থেকে সংগৃহিত

সূত্র : Way To Jannah

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...