ফেইসবুকে শেয়ার করুন - টুইটারে টুইট
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস" ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) ৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম
●|● পবিত্র জুমুয়ার দিনে সূরা কাহাফ উপলব্ধি ও তিলাওয়াত ●|●
বেশ পরিচিত একটি সুরা। হাদীসে এসেছে এই যে ব্যক্তি এই সুরার প্রথম ১০ আয়াত আত্মস্ত করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ। আবার অন্য এক হাদীসে এসেছে যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন এই সুরা তিলাওয়াত করবে তার উপর একটি আলোক রশ্মি পরবর্তী শুক্রবার পর্যন্ত ছায়া হয়ে থাকবে। কী আছে এই সুরাতে এমন যে এটি নিয়ে এত এত হাদীস এসেছে? বলা হচ্ছে এটি দাজ্জালের ফিতনার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অস্ত্র?
সাধারণভাবে এই সুরাকে সবাই ৪টি গল্পের সমষ্টি হিসাবেই বলে থাকে। হ্যাঁ, বেশ উল্লেখ্যযোগ্য ৪টি কাহিনী এখানে আছে কিন্তু আসলে তার সাথে সাথে আরো ৪টি অংশ রয়েছে যাতে রয়েছে আমাদের জন্য আল্লাহর কিছু উপদেশ বা দিক নির্দেশনা। তাই সুরাটাকে আসলে মোটামুটি ৮ টি ভাগে ভাগ করা যায়।
আল্লাহর উপদেশ/ দিক নির্দেশনা
আয়াত ১-৯
এই পার্থিব দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ীত্ব বিষয়ে, আমরা যেন এই দুনিয়ার সৌন্দর্যে আসল সত্যটা ভুলে না যাই যে আল্লাহ্ তায়ালা একসময় এই দুনিয়াকে ধু ধু প্রান্তরে পরিণত করবেন, তিনি দুনিয়া বানিয়েছেন যাতে আমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন, কে আমাদের মাঝে কর্মে শ্রেষ্ঠ।
কাহিনী
আয়াত ১০-২৬
গুহাবাসী যুবকদের গল্প, যাদের আল্লাহ্ ছাড়া কোন সহায় ছিল না, শুধু ছিল আল্লাহর প্রতি ঈমান, আর সেটার উপর ভরসা করে তারা অত্যাচারী শাসকের জায়গা থেকে পালিয়ে গেল, আর আল্লাহ্ তাদেরকে নিদর্শন হিসাবে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন তিনশ নয় বছরের জন্য।
আল্লাহর উপদেশ/ দিক নির্দেশনা
আয়াত ২৭-৩১
এই জায়গায় প্রথমেই আবার সেই দুনিয়াবি মোহে যেন বিশ্বাসীরা আসক্ত না হয়ে পড়ে সেই কথা এসেছে। তারপর বলা হচ্ছে এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার পরীক্ষায় যারা সফল হবে তাদের জন্য কি থাকবে আর যারা ব্যর্থ হবে তাদের জন্য কি শাস্তি রয়েছে।
কাহিনী
আয়াত ৩২-৪৩
এরপর আসছে দুইটি সমৃদ্ধ বাগানের মালিকের কথা যে কিনা তার প্রতিবেশী, তুলনামূলক ভাবে দুর্বল্ এর সাথে বড়াই করছিল তার সম্পদ নিয়ে। কিন্তু আল্লাহ তার সেই বড়াই এক লহমায় ধুলিস্যাৎ করে দেন তার বাগান ধ্বংস করে দেন। আর সেও তখন তার ভুল বুঝতে পারে এবং আল্লাহর কাছেই সাহায্য চায়।
এই চারটি অংশের মাঝে যোগ সুত্র
দুইটা কাহিনীর মাঝে যেমন সুন্দর একটি যোগসূত্র রয়েছে তেমনি রয়েছে দুইটি উপদেশের মাঝেও। যেমন উপদেশ দুইটির মাঝে আল্লাহ্ আমাদেরকে বস্তুবাদ বা ভোগবাদে আসক্ত না হয়ে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেবার দিকেই মনোযোগ দিতে বলছেন।
এখানে বলে রাখা দরকার যে বস্তুবাদটা কি? বস্তুবাদ যে শুধু দুনিয়ার জীবনে আসক্তি তাই নয় বস্তুবাদ মানে এটা মনে করা যে সম্পদ, প্রাচুর্য এগুলো দিয়েই সব সম্ভব।
এখন আসা যাক দুইটি কাহিনীর দিকে। ভাল করে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে এই কাহিনী গুলোতেও মূলত আল্লাহ্ সেই বস্তবাদেরই দুইটি দিক তুলে ধরেছেন। যেমন গুহাবাসীর কথা, তাদের দুনিয়াবী কোন সহায় ছিল না, তাই যদি বস্তবাদের দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয় তাহলে তারা একদমই ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু তারপর আল্লাহ্ তাদেরকে বাঁচিয়েছেন। অন্যদিকে বাগানের মালিক, আপাত দৃষ্টিতে দেখলে তার দুনিয়াবি সবই ছিল, সম্পদ, লোকবল, কিন্তু তারপরও দিনশেষে সেই হয়ে গেল ক্ষতিগ্রস্ত।
এই থেকে যা আমরা শিখতে পারি যে তা হল যদি আমার কিছু নাও থাকে তাহলে এমন ভাবার কিছু নেই যে হায় আমার কিছু নাই, বরং আমার আল্লাহ্ আমার সাথে আছেন। অন্যদিকে যদি আমার সব কিছু থাকে তাহলেও ভাবার কিছু নেই যে আহা আমি কত বড়, বরং আল্লাহ্ তা যেকোন সময় আমার থেকে কেড়ে নিতে পারেন।
এবার যাওয়া যাক সুরার দ্বিতীয় অংশে
আল্লাহর উপদেশ/ দিক নির্দেশনা
আয়াত ৪৪-৫৯
এতে রয়েছে কিয়ামতের দিনের বর্ননা।
কাহিনী
আয়াত ৬০-৮২
মুসা (আঃ) এর কাহিনী যখন উনি আল খিদর এর সাথে বের হয়েছিলেন জ্ঞান অর্জনের জন্য, আর খিদর উনাকে বলেছিলেন যে তাঁর সাথে থাকতে হলে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। তার পর উনি তিনটি ঘটনার সম্মুখীন হন আর মুসা(আঃ) এর কাছে ঘটনা তিনটিই অত্যন্ত খারাপ বা অন্যায় মনে হয়েছিল। পরে খিদর মুসা (আ) কে ব্যাখ্যা করেন যে ঘটনাগুলোর পেছনের কারণ কি।
কাহিনী
আয়াত ৮৩-৯৯
যুলকারনাইন এর ঘটনা। তিনি তিনটি জায়গায় পৌছেছিলেন এবং সেসব জায়গায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চান।
আল্লাহর উপদেশ/ দিক নির্দেশনা
আয়াত ১০০-১১০
এতে রয়েছে কিয়ামতের দিনের বর্ননা।
এই চারটি অংশের মাঝে যোগ সুত্রঃ
লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে যে প্রথম এবং শেষ অংশটুকু রয়েছে দুইখানেই কিয়ামতের দিনের বর্ণনা রয়েছে। আর দুইটি কাহিনীর মাঝে মিলটা লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, দুই ক্ষেত্রেই, মুসা (আঃ) এবং যুলকারনাইন, দুইজনেই ন্যায় প্রতিষ্ঠার পক্ষে, কিন্তু একজনের কাছে ক্ষমতা ছিল না (মুসা (আঃ)) আর আরেকজনের কাছে তা ছিল। যেই শিক্ষাটা আল্লাহ আমাদেরকে দিতে চাচ্ছেন তা হল হতে পারে যে কখনও কখনও আমাদের কাছে হয়তো ক্ষমতা নাও থাকতে পারে সঠিক কাজটা করার জন্য। আবার আপাত দৃষ্টিতে যেটা সঠিক বলে মনে হচ্ছে না সেটা হয়তো আল্লাহর বড় কোন পরিকল্পনার একটি অংশ যা অনুধাবন করার সামর্থ্য আমাদের নেই।
সব মিলিয়ে যেটা বলা যায় এই সুরাতে আল্লাহ আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চাচ্ছেন যে দুনিয়াবী জীবন, ঘটনাবলী এগুলোর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে। ক্ষমতা থাকাই সবসময় ভাল সেটা যেমন নয় তেমনি ক্ষমতা না থাকাটাও কোন অভিশাপ নয়। যদি কারো সেটা থেকে থাকে তাহলে তাকে সেটা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আর যদি না থেকে থাকে তাহলেও বুঝতে হবে যে এই না থাকার পেছনে কোন কারণ আছে। দিনশেষে একজন মুসলিমের একমাত্র ভরসার জায়গা হচ্ছে আল্লাহ্তায়ালা। আর দাজ্জালের যেই ধারণা হাদিস থেকে পাওয়া যায় তাতে দাজ্জাল এমন একজন ব্যক্তি যে কিনা মানুষকে দুনিয়াবী জিনিসপত্র দিয়ে প্রলুব্ধ করবে যে মানুষের কাছে মনে হবে সেই সকল ক্ষমতার অধিকারী। এই সুরা একজন মুসলিমকে সেই মোহ থেকে রক্ষা করবে কারণ সে যখন সুরার শিক্ষাগুলো বুঝতে পারবে সে আর দুনিয়াবী মোহে তখন আকৃষ্ট থাকবে না।
দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট
আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করেআপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করেআপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]