রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭

কুর‘আন ও হাদীস থেকে নির্বাচিত দো‘আ সমূহ

আসসালামু আলাইকুম        Download PDF    ফেসবুক পেজ     Google plus    Web Site

  -  টুইটারে টুইট 

ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :      
             ১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word)     ৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"


কুর‘আন ও হাদীস থেকে নির্বাচিত দো‘আ সমূহ •

 কুরআনের নির্বাচিত দো‘আ:
 ১- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻗِﻨَﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ১। হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও।১

 ২- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻻ ﺗُﺆَﺍﺧِﺬْﻧَﺎ ﺇِﻥْ ﻧَﺴِﻴْﻨَﺎ ﺃَﻭْ ﺃَﺧْﻄَﺄْﻧَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﻻ ﺗَﺤْﻤِﻞْ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺇِﺻْﺮﺍً ﻛَﻤَﺎ ﺣَﻤَﻠْﺘَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻨَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﻻ ﺗُﺤَﻤِّﻠْﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻻ ﻃَﺎﻗَﺔَ ﻟَﻨَﺎ ﺑِﻪৃ ﻭَﺍﻋْﻒُ ﻋَﻨَّﺎ ﻭَﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺂ ﺃَﻧْﺖَ ﻣَﻮْﻻﻧَﺎ ﻓَﺎﻧْﺼُﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ ২। হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের রব! পূর্ববর্তীদের উপর যে গুরুদায়িত্ব তুমি অর্পণ করেছিলে সে রকম কোন কঠিন কাজ আমাদেরকে দিও না। হে আমাদের রব! যে কাজ বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই এমন কাজের ভারও তুমি আমাদের দিও না। তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের ক্ষমা কর। আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি আমাদের মাওলা। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর। [১]

 ৩- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻻ ﺗُﺰِﻍْ ﻗُﻠُﻮﺑَﻨَﺎ ﺑَﻌْﺪَ ﺇِﺫْ ﻫَﺪَﻳْﺘَﻨَﺎ ﻭَﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﻟَﺪُﻧْﻚَ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻮَﻫَّﺎﺏُ ৩। হে আমাদের রব! যেহেতু তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করেছ, কাজেই এরপর থেকে তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করিও না। তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। তুমিতো মহাদাতা।[২]

৪- ﺭَﺏِّ ﻫَﺐْ ﻟِﻲ ﻣِﻦْ ﻟَﺪُﻧْﻚَ ﺫُﺭِّﻳَّﺔً ﻃَﻴِّﺒَﺔً ﺇِﻧَّﻚَ ﺳَﻤِﻴﻊُ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀِ ৪। হে আমার পরওয়ারদেগার! তোমার কাছ থেকে আমাকে তুমি উত্তম সন্তান-সন্ততি দান কর। নিশ্চয়ই তুমিতো মানুষের ডাক শোনো।[৩]

৫- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﺫُﻧُﻮﺑَﻨَﺎ ﻭَﺇِﺳْﺮَﺍﻓَﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺃَﻣْﺮِﻧَﺎ ﻭَﺛَﺒِّﺖْ ﺃَﻗْﺪَﺍﻣَﻨَﺎ ﻭَﺍﻧْﺼُﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ ৫। হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দাও। যেসব কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন হয়ে গেছে সেগুলোও তুমি ক্ষমা কর। আর (সৎপথে) তুমি আমাদের কদমকে অটল রেখো এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর। [৪]

৬- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺁﺗِﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻨَﺎ ﻋَﻠٰﻰ ﺭُﺳُﻠِﻚَ ﻭَﻻَ ﺗُﺨْﺰِﻧَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺇِﻧَّﻚَ ﻻَ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴﻌَﺎﺩَ ৬। হে রব! নবী-রাসূলদের মাধ্যমে তুমি যে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছো তা তুমি আমাদেরকে দিয়ে দিও। আর কিয়ামতের দিন আমাদেরকে তুমি অপমানিত করিও না। তুমিতো ওয়াদার বরখেলাফ কর না।[৫]

৭- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻟْﺖَ ﻭَﺍﺗَّﺒَﻌْﻨَﺎ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻓَﺎﻛْﺘُﺒْﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺍﻟﺸَّﺎﻫِﺪِﻳﻦَ ৭। হে আমাদের রব! তুমি যা কিছু নাযিল করেছো, তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আমরা রাসূলের কথাও মেনে নিয়েছি। কাজেই সত্য স্বীকারকারীদের দলে আমাদের নাম লিখিয়ে দাও।[৬]

 ৮- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻇَﻠَﻤْﻨَﺎ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻨَﺎ ﻭَﺇِﻥْ ﻟَﻢْ ﺗَﻐْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺗَﺮْﺣَﻤْﻨَﺎ ﻟَﻨَﻜُﻮﻧَﻦَّ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳﻦَ ৮। হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের উপর যুলম করেছি। এখন তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আর আমাদের প্রতি রহম না কর তাহলে নিশ্চিতই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।[৭]

৯- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻻ ﺗَﺠْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ ৯। হে রব! আমাদেরকে জালিম সম্প্রদায়ের সাথী করিও না।[৮]

১০- ﺭَﺏِّ ﺍﺟْﻌَﻠْﻨِﻲ ﻣُﻘِﻴﻢَ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ﻭَﻣِﻦْ ﺫُﺭِّﻳَّﺘِﻲ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺗَﻘَﺒَّﻞْ ﺩُﻋَﺎূﺀِ ১০। হে আমার মালিক! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানাও এবং আমার ছেলে-মেয়েদেরকেও নামাযী বানিয়ে দাও। হে আমার মালিক! আমার দোয়া তুমি কবুল কর।[৯]

১১- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْﻟِﻲ ﻭَﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟْﺤِﺴَﺎﺏُ ১১। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যেদিন চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশ হবে সেদিন তুমি আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সকল ঈমানদারদেরকে তুমি ক্ষমা করে দিও। [১০]

 ১২- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﻟَﺪُﻧْﻚَ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻭَﻫَﻴِّﺊْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﺮِﻧَﺎ ﺭَﺷَﺪﺍً ১২। হে আমাদের রব! তোমার অপার অসীম করুণা থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। আমাদের কাজগুলোকে সঠিক ও সহজ করে দাও।[১১]

 ১৩- ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺏِّ ﺍﺷْﺮَﺡْ ﻟِﻲ ﺻَﺪْﺭِﻱ – ﻭَﻳَﺴِّﺮْ ﻟِﻲْ ﺃَﻣْﺮِﻱ – ﻭَﺍﺣْﻠُﻞْ ﻋُﻘْﺪَﺓً ﻣِﻦْ ﻟِﺴَﺎﻧِﻲْ – ﻳَﻔْﻘَﻬُﻮﺍ ﻗَﻮْﻟِﻲْ ১৩। হে আমার রব! আমার বক্ষকে তুমি প্রশস্ত করে দাও। আমার কাজগুলো সহজ করে দাও। জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও, যাতে লোকেরা আমার কথা সহজেই বুঝতে পারে। [১২]

১৪- ﺭَﺏِّ ﺯِﺩْﻧِﻲ ﻋِﻠْﻤﺎً ১৪। হে রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও।[১৩]

 ১৫- ﺭَﺏِّ ﻻَ ﺗَﺬَﺭْﻧِﻲْ ﻓَﺮْﺩﺍً ﻭَﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟْﻮَﺍﺭِﺛِﻴﻦَ ১৫। হে রব! আমাকে তুমি নিঃসন্তান অবস্থায় রেখো না। তুমিতো সর্বোত্তম মালিকানার অধিকারী।[১৪]

১৬- ﺭَﺏِّ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ – ﻭَﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﺭَﺏِّ ﺃَﻥْ ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ ১৬। হে রব! শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। আমি এ থেকেও তোমার নিকট পানাহ চাই যে, শয়তান যেন আমার ধারে কাছেও ঘেষতে না পারে।[১৫]

১৭- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﺻْﺮِﻑْ ﻋَﻨَّﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑَﻬَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﺮَﺍﻣﺎً ু ﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺳَﺎﺀَﺕْ ﻣُﺴْﺘَﻘَﺮّﺍً ﻭَّﻣُﻘَﺎﻣﺎً ১৭। হে আমাদের রব! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচিয়ে দিও। এর আযাব তো বড়ই সর্বনাশা। আশ্রয় ও বাস্থান হিসেবে এটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।[১৬]

 ১৮- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻨَﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻨَﺎ ﻗُﺮَّﺓَ ﺃَﻋْﻴُﻦٍ ﻭَّﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﺇِﻣَﺎﻣﺎً ১৮। হে আমাদের রব! তুমি আমাদেরকে এমন স্ত্রী-সন্তান দান কর যাদের দর্শনে আমাদের চক্ষুশীতল হয়ে যাবে। তুমি আমাদেরকে পরহেযগার লোকদের ইমাম (অভিভাবক) বানিয়ে দাও।[১৭]

(১৯-২২-) ﺭَﺏِّ ﻫَﺐْ ﻟِﻲْ ﺣُﻜْﻤﺎً ﻭَﺃَﻟْﺤِﻘْﻨِﻲ ﺑِﺎﻟﺼَّﺎﻟِﺤِﻴْﻦَ – ﻭَﺍﺟْﻌَﻞْ ﻟِﻲْ ﻟِﺴَﺎﻥَ ﺻِﺪْﻕٍ ﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮِﻳﻦَ – ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨِﻲْ ﻣِﻦْ ﻭَﺭَﺛَﺔِ ﺟَﻨَّﺔِ ﺍﻟﻨَّﻌِﻴﻢِ – ﻭَﻻ ﺗُﺨْﺰِﻧِﻲْ ﻳَﻮْﻡَ ﻳُﺒْﻌَﺜُﻮْﻥَ ১৯। হে রব! আমাকে জ্ঞান-বুদ্ধি দান কর এবং আমাকে নেককার লোকদের সান্নিধ্যে রেখো। ২০। এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমার সুখ্যাতি চলমান রেখো। ২১। আমাকে তুমি নিয়ামতে ভরা জান্নাতের বাসিন্দা বানিয়ে দিও। ২২। যেদিন সব মানুষ আবার জীবিত হয়ে উঠবে সেদিন আমাকে তুমি অপমানিত করো না। ১৯-২২

২৩- ﺭَﺏِّ ﺃَﻭْﺯِﻋْﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺷْﻜُﺮَ ﻧِﻌْﻤَﺘَﻚَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺃَﻧْﻌَﻤْﺖَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﻭَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﺃَﻥْ ﺃَﻋْﻤَﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤﺎً ﺗَﺮْﺿَﺎﻩُ ﻭَﺃَﺩْﺧِﻠْﻨِﻲ ﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻓِﻲ ﻋِﺒَﺎﺩِﻙَ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤِﻴﻦَ ২৩। হে প্রতিপালক! তুমি আমার ও আমার মাতা-পিতার প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছো এর শোকরগোজারী করার তাওফীক দাও এবং আমাকে এমন সব নেক আমল করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ কর। আর তোমার দয়ায় আমাকে তোমার নেক বান্দাদের মধ্যে শামিল করে দাও।২৩

 ২৪- ﺭَﺏِّ ﺍﻧْﺼُﺮْﻧِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻤُﻔْﺴِﺪِﻳﻦَ ২৪। হে রব! ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তুমি আমাকে সাহায্য কর।২৪


 ২৫- ﺭَﺏِّ ﻫَﺐْ ﻟِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤِﻴﻦَ ২৫। হে রব! আমাকে তুমি নেককার সন্তান দান কর।২৫

২৬- ﺭَﺏِّ ﺃَﻭْﺯِﻋْﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺷْﻜُﺮَ ﻧِﻌْﻤَﺘَﻚَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺃَﻧْﻌَﻤْﺖَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﻭَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﺃَﻥْ ﺃَﻋْﻤَﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤﺎً ﺗَﺮْﺿَﺎﻩُ ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﺫُﺭِّﻳَّﺘِﻲ ২৬। হে রব! তুমি আমার ও আমার মাতা- পিতার প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছ এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার তাওফীক দাও এবং আমাকে এমন সব নেক আমল করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার ছেলে-মেয়ে ও পরবর্তী বংশধরকেও নেককার বানিয়ে দাও।২৬

২৭- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﻹِﺧْﻮَﺍﻧِﻨَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺳَﺒَﻘُﻮﻧَﺎ ﺑِﺎﻹِﻳْﻤَﺎﻥِ ﻭَﻻ ﺗَﺠْﻌَﻞْ ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻨَﺎ ﻏِﻼًّ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺭَﺅُﻭﻑٌ ﺭَﺣِﻴْﻢٌ ২৭। হে আমাদের মালিক! তুমি আমাদের মাফ করে দাও। আমাদের আগে যেসব ভাইয়েরা ঈমান এনেছে, তুমি তাদেরও মাফ করে দাও। আর ঈমানদার লোকদের প্রতি আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিও না। হে রব! তুমিতো বড়ই দয়ালু ও মমতাময়ী।[১৮]

২৮- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺃَﺗْﻤِﻢْ ﻟَﻨَﺎ ﻧُﻮﺭَﻧَﺎ ﻭَﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻠٰﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ ২৮। হে আমাদের রব! আমাদের জন্য তুমি আমাদের নূরকে পরিপূর্ণ করে দাও। তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর। তুমি তো সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।[১৯]

২৯- ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﻟِﻤَﻦْ ﺩَﺧَﻞَ ﺑَﻴْﺘِﻲَ ﻣُﺆْﻣِﻨﺎً ﻭَﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ২৯। হে আমার রব! আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে, যারা মুমিন অবস্থায় আমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তাদেরকে এবং সকল মুমিন পুরুষ- নারীকে তুমি ক্ষমা করে দাও।[২০]

 ৩০- ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻨَﺎ ﺳَﻤِﻌْﻨَﺎ ﻣُﻨَﺎﺩِﻳﺎً ﻳُﻨَﺎﺩِﻱ ﻟِﻺِﻳْﻤَﺎﻥِ ﺃَﻥْ ﺁﻣِﻨُﻮﺍ ﺑِﺮَﺑِّﻜُﻢْ ﻓَﺂﻣَﻨَّﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﺫُﻧُﻮﺑَﻨَﺎ ﻭَﻛَﻔِّﺮْ ﻋَﻨَّﺎ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻨَﺎ ﻭَﺗَﻮَﻓَّﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺍﻷَﺑْﺮَﺍﺭِ ৩০। হে আমার রব! নিশ্চয়ই আমরা এক আহ্বানকারীকে আহ্বান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাতেই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, হে আমাদের প্রতিপালক! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা কর ও আমাদের পাপরাশি মোচন কর এবং পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে মৃত্যু দান কর।[২১] • হাদীসের নির্বাচিত দো‘আ: মন খুলে, হৃদয় উজাড় করে আল্লাহ তা’আলার নিকট দোয়া করুন।

 ৩১- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻭَﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻭَﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻐِﻨَﻰ ﻭَﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻔَﻘْﺮِ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴﺢِ ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﺴِﻞْ ﻗَﻠْﺒِﻲ ﺑِﻤَﺎﺀِ ﺍﻟﺜَّﻠْﺞِ ﻭَﺍﻟْﺒَﺮَﺩِ ﻭَﻧَﻖِّ ﻗَﻠْﺒِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﻄَﺎﻳَﺎ ﻛَﻤَﺎ ﻧَﻘَّﻴْﺖَ ﺍﻟﺜَّﻮْﺏَ ﺍﻟْﺄَﺑْﻴَﺾَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺪَّﻧَﺲِ ﻭَﺑَﺎﻋِﺪْ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎﻱَ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﻋَﺪْﺕَ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟْﻤَﺸْﺮِﻕِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻐْﺮِﺏِ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻜَﺴَﻞِ ﻭَﺍﻟْﻤَﺄْﺛَﻢِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻐْﺮَﻡِ ৩১। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, জাহান্নামের ফিতনা ও জাহান্নামের শাস্তি থেকে। কবরের ফিতনা ও কবরের ‘আযাব থেকে। আশ্রয় চাচ্ছি, সম্পদের ফিতনা ও দারিদ্রের ফিতনার ক্ষতি থেকে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি মাসীহিদ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে বরফ ও ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে দাও। আমার অন্তরকে গুনাহ থেকে পরিষ্কার করে দাও। যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে তুমি পরিষ্কার করে থাকো। হে আল্লাহ! থেকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত তুমি যে বিশাল দূরত্ব সৃষ্টি করেছ আমার আমলনামা থেকে আমার গুনাহগুলো ততটুকু দূরে সরিয়ে দাও। হে আল্লাহ! আমার অলসতা, গুনাহ ও ঋণ থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই। [২২]

 ৩২- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻌَﺠْﺰِ ﻭَﺍﻟْﻜَﺴَﻞِ ﻭَﺍﻟْﺠُﺒْﻦِ ﻭَﺍﻟْﻬَﺮَﻡِ ﻭَﺍﻟْﺒُﺨْﻞِ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ ﻭَﺍﻟْﻤَﻤَﺎﻡِ ৩২। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, বার্ধক্য, কৃপণতা থেকে। আশ্রয় চাই তোমার নিকট কবরের আযাব ও জীবন মরনের ফিতনা থেকে।[২৩]

৩৩- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺟَﻬْﺪِ ﺍﻟْﺒَﻼَﺀِ ﻭَﺩَﺭَﻙِ ﺍﻟﺸَّﻘَﺎﺀِ ﻭَﺳُﻮﺀِ ﺍﻟْﻘَﻀَﺎﺀِ ﻭَﺷَﻤَﺎﺗَﺔِ ﺍﻷَﻋْﺪَﺍﺀِ ৩৩। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই, কঠিন বালা-মুসিবত, দুর্ভাগ্য ও শত্রুদের বিদ্বেষ থেকে।[২৪]

৩৪- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲ ﺩِﻳﻨِﻲ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻫُﻮَ ﻋِﺼْﻤَﺔُ ﺃَﻣْﺮِﻱ – ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲ ﺩُﻧْﻴَﺎﻱَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﻌَﺎﺷِﻲ – ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲ ﺁﺧِﺮَﺗِﻲ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﻌَﺎﺩِﻱ – ﻭَﺍﺟْﻌَﻞِ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓَ ﺯِﻳَﺎﺩَﺓً ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺧَﻴْﺮٍ – ﻭَﺍﺟْﻌَﻞِ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﺭَﺍﺣَﺔً ﻟِﻲ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﺮٍّ ৩৪। হে আল্লাহ! আমার দ্বীনকে আমার জন্য সঠিক করে দিও যা কর্মের বন্ধন। দুনিয়াকেও আমার জন্য সঠিক করে দাও যেখানে রয়েছে আমার জীবন যাপন। আমার জন্য আমার পরকালকে পরিশুদ্ধ করে দাও, যা হচ্ছে আমার অনন্তকালের গন্তব্যস্থল। প্রতিটি ভাল কাজে আমার জীবনকে বেশী বেশী কাজে লাগাও এবং সকল অমঙ্গল ও কষ্ট থেকে আমার মৃত্যুকে আরামদায়ক করে দিও।[২৫]

৩৫- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﻬُﺪ্ﻯ ﻭَﺍﻟﺘُّﻘٰﻰ ﻭَﺍﻟْﻌَﻔَﺎﻑَ ﻭَﺍﻟْﻐِﻨٰﻰ ৩৫। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট হেদায়াত তাকওয়া ও পবিত্র জীবন চাই। আরো চাই যেন কারো কাছে দ্বারস্থ না হই।[২৬]

৩৬- ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻌَﺠْﺰِ ﻭَﺍﻟْﻜَﺴَﻞِ ﻭَﺍﻟْﺠُﺒْﻦِ ﻭَﺍﻟْﺒُﺨْﻞِ ﻭَﺍﻟْﻬَﺮَﻡِ ﻭَﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ- ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺁﺕِ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﺗَﻘْﻮَﺍﻫَﺎ ﻭَﺯَﻛِّﻬَﺎ ﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻴْﺮُ ﻣَﻦْ ﺯَﻛَّﺎﻫَﺎ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﻟِﻴُّﻬَﺎ ﻭَﻣَﻮْﻻَﻫَﺎ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋِﻠْﻢٍ ﻻَ ﻳَﻨْﻔَﻊُ ﻭَﻣِﻦْ ﻗَﻠْﺐٍ ﻻَ ﻳَﺨْﺸَﻊُ ﻭَﻣِﻦْ ﻧَﻔْﺲٍ ﻻَ ﺗَﺸْﺒَﻊُ ﻭَﻣِﻦْ ﺩَﻋْﻮَﺓٍ ﻻَ ﻳُﺴْﺘَﺠَﺎﺏُ ﻟَﻬَﺎ ৩৬। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, বার্ধক্য ও কবরের ‘আযাব থেকে। হে আল্লাহ! তুমি আমার মনে তাকওয়ার অনুভূতি দাও, আমার মনকে পবিত্র কর, তুমি-ই তো আত্মার পবিত্রতা দানকারী। তুমিই তো হৃদয়ের মালিক, অভিভাবক ও বন্ধু। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই এমন ‘ইল্ম থেকে যে ‘ইল্ম কোন উপকার দেয় না, এমন হৃদয় থেকে যে হৃদয় বিনম্র হয় না, এমন আত্মা থেকে যে আত্মা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন দোয়া থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই যে দোয়া কবূল হয় না। [২৭]

 ৩৭- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻫْﺪِﻧِﻲْ ﻭَﺳَﺪِّﺩْﻧِﻲ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﻬُﺪ্ﻯ ﻭَﺍﻟﺴَّﺪَﺍﺩَ ৩৭। হে আল্লাহ! আমাকে হেদায়াত দান কর, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত কর। হে আল্লাহ! তোমার নিকট হেদায়াত ও সঠিক পথ কামনা করছি।[২৮]

৩৮- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺯَﻭَﺍﻝِ ﻧِﻌْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﺗَﺤَﻮُّﻝِ ﻋَﺎﻓِﻴَﺘِﻚَ ﻭَﻓُﺠَﺎﺀَﺓِ ﻧِﻘْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﺟَﻤِﻴﻊِ ﺳَﺨَﻄِﻚَ ৩৮। হে আল্লাহ! তোমার দেয়া নেয়ামাত চলে যাওয়া ও অসুস্থতার পরিবর্তন হওয়া থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই তোমার পক্ষ থেকে আকষ্মিক গজব আসা ও তোমার সকল অসন্তোষ থেকে।[২৯]

৩৯- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻋْﻤَﻞْ ৩৯। হে আল্লাহ! আমি আমার অতীতের কৃতকর্মের অনিষ্টতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যে কাজ আমি করিনি তার অনিষ্টতা থেকেও আশ্রয় চাই।।[৩০]

৪০- ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِِﻧِّﻲْ ﺃِﻋُﻮْﺫُﺑِﻚَ ﺃِﻥْ ﺃُﺷْﺮِﻙَ ﺑِﻚَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃِﻋْﻠَﻢُ ﻭَﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُﻙَ ﻟِﻤَﺎ ﻻَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ৪০। হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর যদি অজান্তে শিক হয়ে থাকে তবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। [৩১]

৪১- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺣْﻤَﺘَﻚَ ﺃَﺭْﺟُﻮ – ﻓَﻼَ ﺗَﻜِﻠْﻨِﻲْ ﺇِﻟٰﻰ ﻧَﻔْﺴِﻲْ ﻃَﺮْﻓَﺔَ ﻋَﻴْﻦٍ – ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲْ ﺷَﺄْﻧِﻲْ ﻛُﻠَّﻪ – ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ৪১। হে আল্লাহ! তোমার রহমত প্রত্যাশা করছি। সুতরাং তুমি আমার নিজের উপর তাৎক্ষণিকভাবে কোন দায়িত্ব অর্পণ করে দিও না। আর আমার সব কিছু তুমি সহীহ শুদ্ধ করে দাও। তুমি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই।[৩২]

 ৪২- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻌَﻞِ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﺭَﺑِﻴﻊَ ﻗَﻠْﺒِﻲ ﻭَﻧُﻮﺭَ ﺻَﺪْﺭِﻱْ ﻭَﺟِﻼَﺀَ ﺣُﺰْﻧِﻲْ ﻭَﺫَﻫَﺎﺏَ ﻫَﻤِّﻲْ ৪২। হে আল্লাহ! কুরআনকে তুমি আমার হৃদয়ের বসন্তকাল বানিয়ে দাও, বানিয়ে দাও আমার বুকের নূর এবং কুরআনকে আমার দুঃখ ও দুঃশ্চিন্তা দূর করার মাধ্যম বানিয়ে দাও।[৩৩]

৪৩- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻣُﺼَﺮِّﻑَ ﺍﻟْﻘُﻠُﻮﺏِ ﺻَﺮِّﻑْ ﻗُﻠُﻮﺑَﻨَﺎ ﻋَﻠٰﻰ ﻃَﺎﻋَﺘِﻚَ ৪৩। হে অন্তরের পরিবর্তন সাধনকারী রব! আমাদের অন্তরকে তোমার অনুগত্যের দিকে পরিবর্তন করে দাও।[৩৪]

 ৪৪- ﻳَﺎ ﻣُﻘَﻠِّﺐَ ﺍﻟْﻘُﻠُﻮﺏِ ﺛَﺒِّﺖْ ﻗَﻠْﺒِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺩِﻳﻨِﻚَ ৪৪। হে অন্তরের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তুমি তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ।[৩৫]

 ৪৫- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﻌَﺎﻓِﻴَﺔَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ৪৫। হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা ও সুস্থতা কামনা করছি। [৩৬]

৪৬- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﺣْﺴِﻦْ ﻋَﺎﻗِﺒَﺘَﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻷُﻣُﻮﺭِ ﻛُﻠِّﻬَﺎ ﻭَﺃَﺟِﺮْﻧَﺎ ﻣِﻦْ ﺧِﺰْﻱِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ৪৬। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সকল কাজের পরিণতি সুন্দর ও উত্তম করে দাও এবং আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা, অপমান এবং আখেরাতের শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে দিও।[৩৭]

৪৭- ﺭَﺏِّ ﺃَﻋِﻨِّﻲ ﻭَﻻَ ﺗُﻌِﻦْ ﻋَﻠَﻲَّ – ﻭَﺍﻧْﺼُﺮْﻧِﻲ ﻭَﻻَ ﺗَﻨْﺼُﺮْ ﻋَﻠَﻲَّ – ﻭَﺍﻣْﻜُﺮْ ﻟِﻲ ﻭَﻻَ ﺗَﻤْﻜُﺮْ ﻋَﻠَﻲَّ ﻭَﺍﻫْﺪِﻧِﻲ ﻭَﻳَﺴِّﺮْ ﻫُﺪَﺍﻱَ ﺇِﻟَﻲَّ – ﻭَﺍﻧْﺼُﺮْﻧِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﺑَﻐَﻰ ﻋَﻠَﻲَّ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻌَﻠْﻨِﻲ ﻟَﻚَ ﺷَﺎﻛِﺮًﺍ ﻟَﻚَ ﺫَﺍﻛِﺮًﺍ ﻟَﻚَ ﺭَﺍﻫِﺒًﺎ ﻟَﻚَ ﻣِﻄْﻮَﺍﻋًﺎ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻣُﺨْﺒِﺘًﺎ ﺃَﻭْ ﻣُﻨِﻴﺒًﺎ – ﺭَﺏِّ ﺗَﻘَﺒَّﻞْ ﺗَﻮْﺑَﺘِﻲ – ﻭَﺍﻏْﺴِﻞْ ﺣَﻮْﺑَﺘِﻲ – ﻭَﺃَﺟِﺐْ ﺩَﻋْﻮَﺗِﻲ – ﻭَﺛَﺒِّﺖْ ﺣُﺠَّﺘِﻲ – ﻭَﺍﻫْﺪِ ﻗَﻠْﺒِﻲ – ﻭَﺳَﺪِّﺩْ ﻟِﺴَﺎﻧِﻲ – ﻭَﺍﺳْﻠُﻞْ ﺳَﺨِﻴﻤَﺔَ ﻗَﻠْﺒِﻲ ৪৭। হে আমার রব! তুমি আমাকে সাহায্য কর, আমার বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করো না। আমাকে সহায়তা কর, আমার বিপক্ষে কাউকে সহায়তা করো না। আমাকে কৌশল শিখিয়ে দাও, আমার বিপক্ষে কাউকে চক্রান্ত করতে দিও না। আমাকে হেদায়ত দাও, হেদায়তের পথ আমার জন্য সহজ করে দাও। আমার বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করে, তার বিপক্ষে আমাকে সাহায্য কর। আমাকে তোমার অধিক শুকরগুজার, যিক্রকারী বান্দা বানিয়ে দাও। তাওফিক দাও যাতে তোমাকে অধিক ভয় করি। তোমার আনুগত্য করি। তাওফিক দাও যাতে আমি তোমার প্রতি বিনয়ী হই, তাওবাকারী প্রত্যাবর্তনশীল বান্দা হই। হে আমার রব! তুমি আমার তাওবা কবূল কর। আমার অপরাধটুকু ধুয়ে ফেল। আমার দু’আ কবূল কর। আমার যুক্তিগুলো অকাট্য করে দাও। আর অন্তরকে হেদায়েতের পথে পরিচালিত কর, আমার ভাষাকে সঠিক করে দাও এবং আমার কলব থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দাও।[৩৮]

 ৪৮- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺳَﺄَﻟَﻚَ ﻣِﻨْﻪُ ﻧَﺒِﻴُّﻚَ ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- ﻭَﻧَﻌُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻌَﺎﺫَ ﻣِﻨْﻪُ ﻧَﺒِﻴُّﻚَ ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ – ﻭَﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻌَﺎﻥُ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺍﻟْﺒَﻼَﻍُ ﻭَﻻَ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ৪৮। হে আল্লাহ! তোমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার কাছে যেসব কল্যাণকর জিনিস চেয়েছিলেন সেগুলো আমাকেও তুমি দাও। আর তোমার নিকট ঐ অমঙ্গল-অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই, যে অমঙ্গল থেকে তোমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্রয় চেয়েছিলেন। সাহায্য তো শুধু তোমার কাছে চাইতে হয় এবং সবকিছু পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্বও তোমার। তুমি আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন নেক কাজ করা কিংবা গুনাহ করার কোন শক্তি নেই।[৩৯]

 ৪৯- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺳَﻤْﻌِﻲْ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺑَﺼَﺮِﻱْ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻟِﺴَﺎﻧِﻲْ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻗَﻠْﺒِﻲْ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﻨِﻴِّﻲْ ৪৯। হে আল্লাহ! আমার শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তি আমার জিহ্বা ও অন্তর এবং আমার ভাগ্য এসব অঙ্গের অনিষ্টতা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই।[৪০]

 ৫০- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺒَﺮَﺹِ ﻭَﺍﻟْﺠُﻨُﻮﻥِ ﻭَﺍﻟْﺠُﺬَﺍﻡِ ﻭَﻣِﻦْ ﺳَﻴِّﺊْ ﺍﻷَﺳْﻘَﺎﻡِ ৫০। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট শ্বেতরোগ পাগলামি ও কুষ্ঠ রোগসহ সকল জটিল রোগ থেকে আশ্রয় চাই। [৪১]

৫১- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻣُﻨْﻜَﺮَﺍﺕِ ﺍﻷَﺧْﻼَﻕِ ﻭَﺍﻷَﻋْﻤَﺎﻝِ ﻭَﺍﻷَﻫْﻮَﺍﺀِ ৫১। হে আল্লাহ! তোমার নিকট আমি অসৎ চরিত্র, অপকর্ম এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে আশ্রয় চাই।[৪২]

৫২- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋُﻔُﻮٌّ ﻛَﺮِﻳﻢٌ ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲْ ৫২। হে আল্লাহ! তুমিতো ক্ষমার ভাণ্ডার, ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ কর। কাজেই আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও। [৪৩]

৫৩- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻓِﻌْﻞَ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮَﺍﺕِ ﻭَﺗَﺮْﻙَ ﺍﻟْﻤُﻨْﻜَﺮَﺍﺕِ ﻭَﺣُﺐَّ ﺍﻟْﻤَﺴَﺎﻛِﻴﻦِ – ﻭَﺃَﻥْ ﺗَﻐْﻔِﺮَ ﻟِﻲ ﻭَﺗَﺮْﺣَﻤَﻨِﻲ – ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺩْﺕَ ﻓِﺘْﻨَﺔً ﻓِﻲ ﻗَﻮْﻡٍ ﻓَﺘَﻮَﻓَّﻨِﻲ ﻏَﻴْﺮَ ﻣَﻔْﺘُﻮﻥٍ – ﻭَﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺣُﺒَّﻚَ ﻭَﺣُﺐَّ ﻣَﻦْ ﻳُﺤِﺒُّﻚَ – ﻭَﺣُﺐَّ ﻋَﻤَﻞٍ ﻳُﻘَﺮِّﺑُﻨِﻲ ﺇِﻟَﻰ ﺣُﺒِّﻚَ ৫৩। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে নেক কাজ করা, অসৎ কাজ পরিত্যাগ এবং মিসকীনদের ভালবাসার গুণাবলী দাও। আরো প্রর্থানা করিছ যে, তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর। আর যখন তুমি কোন জাতিকে কোন প্রকার ফিতনায় ফেলার ইচ্ছা কর তখন আমাকে ফিতনামুক্ত মৃত্যু দান কর। তোমার ভালবাসা আমি চাই, যারা তোমাকে ভালবাসে তাদের ভালবাসাও চাই এবং এমন আমলের ভালবাসা আমি চাই, যে আমল আমাকে তোমার ভালবাসার নিকট পৌঁছে দেবে।[৪৪]

৫৪- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮِ ﻛُﻠِّﻪِ ﻋَﺎﺟِﻠِﻪِ ﻭَﺁﺟِﻠِﻪِ ﻣَﺎ ﻋَﻠِﻤْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻋْﻠَﻢْ – ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺸَّﺮِّ ﻛُﻠِّﻪِ ﻋَﺎﺟِﻠِﻪِ ﻭَﺁﺟِﻠِﻪِ ﻣَﺎ ﻋَﻠِﻤْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻋْﻠَﻢْ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺳَﺄَﻟَﻚَ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﻧَﺒِﻴُّﻚَ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﻋَﺎﺫَ ﺑِﻪِ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﻧَﺒِﻴُّﻚَ – ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻭَﻣَﺎ ﻗَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻝٍ ﺃَﻭْ ﻋَﻤَﻞٍ – ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻭَﻣَﺎ ﻗَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻝٍ ﺃَﻭْ ﻋَﻤَﻞٍ – ﻭَﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺃَﻥْ ﺗَﺠْﻌَﻞَ ﻛُﻞَّ ﻗَﻀَﺎﺀٍ ﻗَﻀَﻴْﺘَﻪُ ﻟِﻲ ﺧَﻴْﺮًﺍ ৫৪। হে আল্লাহ! দুনিয়া ও আখিরাতের আমার জানা অজানা যত কল্যাণ ও নেয়ামাত আছে তা সবই আমি চাই। দুনিয়া ও আখিরাতের আমার জানা- অজানা সকল অকল্যাণ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ঐ সব কল্যাণ চাচ্ছি যা তোমার বান্দা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চেয়েছিলেন এবং তোমার নিকট ঐ সব অমঙ্গল থেকে আশ্রয় চাচ্ছি যা থেকে তোমার বান্দা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্রয় চেয়েছিলেন। হে আল্লাহ! আমি তো বেহেশতে যেতে চাই। আর সে কথা ও কাজের তাওফীক চাই যা সহজেই আমাকে বেহেশতে পৌঁছাবে। হে আল্লাহ! জাহান্নামের আগুন থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই এবং যে কথা ও কাজ মানুষকে জাহান্নামবাসী করে সেগুলো থেকেও তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আর প্রতিটি কাজের বিচারে আমার জন্য কল্যাণকর ফায়সালা করে দিও।[৪৫]

৫৫- ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺣْﻔَﻈْﻨِﻲْ ﺑِﺎﻹﺳْﻼﻡِ ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﻭَﺍﺣْﻔَﻈْﻨِﻲْ ﺑِﺎﻹﺳﻼﻡِ ﻗَﺎﻋِﺪًﺍ ﻭَﺍﺣْﻔَﻈْﻨِﻲْ ﺑِﺎﻹﺳْﻼﻡِ ﺭِﺍﻗِﺪًﺍ ﻭَﻻَ ﺗﺸﻤﺖْ ﺑِﻲْ ﻋَﺪُﻭَّﺍ ﻭَﻻَ ﺣَﺎﺳِﺪًﺍ – ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺧَﻴْﺮٍ ﺧَﺰَﺍﺋِﻨُﻪُ ﺑِﻴَﺪِﻙَ ﻭَﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﺮٍّ ﺧَﺰَﺍﺋِﻨُﻪُ ﺑِﻴَﺪِﻙَ ৫৫। হে আল্লাহ! দাঁড়ানো অবস্থায় ইসলামের মাধ্যমে আমাকে হেফাযত করিও, বসা অবস্থা ইসলামের মাধ্যমে হেফাযত করিও এবং শোয়া অবস্থা ইসলামের মাধ্যমে আমাকে হেফাযত করিও। আমার বিপদে শত্রুকে আনন্দ করার সুযোগ দিও না। শত্রুকে আমার জন্য হিংসুটে হতে দিও না। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ঐ সব কল্যাণের প্রার্থনা করছি, যেসব কল্যাণ তোমার হাতে রয়েছে। সে সব অকল্যাণ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই যা তোমার হাতে রয়েছে।[৪৬]

৫৬- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨِﻲ ﻭَﺍﻫْﺪِﻧِﻲ ﻭَﻋَﺎﻓِﻨِﻲ ﻭَﺍﺭْﺯُﻗْﻨِﻲ ৫৬। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়াত কর, নিরাপদে রাখ এবং আমাকে রিযিক দান কর।[৪৭]

 ৫৭- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﻇَﻠَﻤْﺖُ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﻇُﻠْﻤًﺎ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻭَﻻَ ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮﺏَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﻣَﻐْﻔِﺮَﺓً ﻣِﻦْ ﻋِﻨْﺪِﻙَ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨِﻲ ﺇِﻧَّﻚ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻐَﻔُﻮﺭُ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢُ ৫৭। হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের প্রতি অনেক যুলম করে ফেলেছি। আর তুমি ছাড়া গুনাহ ক্ষমা করার কেউ নেই। অতএব তুমি তোমার পক্ষ থেকে আমাকে বিশেষভাবে ক্ষমা কর , আমার প্রতি দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি বড়ই ক্ষমাশীল ও অতিশয় দয়ালু রব।[৪৮]


 ৫৮- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻟَﻚَ ﺃَﺳْﻠَﻤْﺖُ ﻭَﺑِﻚَ ﺁﻣَﻨْﺖُ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺗَﻮَﻛَّﻠْﺖُ ﻭَﺇِﻟَﻴْﻚَ ﺧَﺎﺻَﻤْﺖُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻌِﺰَّﺗِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻻَ ﻳَﻤُﻮﺕُ ﻭَﺍﻟْﺠِﻦُّ ﻭَﺍﻟْﺈِﻧْﺲُ ﻳَﻤُﻮﺗُﻮﻥَ ৫৮। হে আল্লাহ! তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করেছি, তোমার প্রতি-ই ঈমান এনেছি এবং তোমার উপর-ই তাওয়াক্কুল করেছি। আর তোমার নিকট-ই ফায়সালা চেয়েছি। হে আল্লাহ! তোমার ইজ্জতের আশ্রয় চাচ্ছি তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তুমি চিরস্থায়ী, যাঁর মৃত্যু নেই। আর জ্বিন ও মানব তো সবাই মরে যাবে। [৪৯]

 ৫৯- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒِﻲ ﻭَﻭَﺳِّﻊْ ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﺩَﺍﺭِﻱ ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟِﻲ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺭَﺯَﻗْﺘَﻨِﻲ ৫৯। হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহকে ক্ষমা করে দাও, আমার ঘরে প্রশস্ততা দান কর এবং আমার রিযিকে বরকত দাও।[৫০]

৬০- ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﻓَﻀْﻠِﻚَ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻻَ ﻳَﻤْﻠِﻜُﻬَﺎ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ৬০। হে আল্লাহ! তোমার নিকট অনুগ্রহ ও দয়া চাই। কারণ অনুগ্রহ ও দয়ার মালিক তুমি ছাড়া কেউ না।[৫১]


দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতি একই

আসসালামু আলাইকুম        Download PDF    ফেসবুক পেজ     Google plus    Web Site

  -  টুইটারে টুইট 

ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :      
              ১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word)     ৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"


নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতি একই


পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতি একই প্রকার। সুতরাং মহিলাও ঐরুপ একই তরীকায় নামায পড়বে, যেরুপ ও যে তরীকায় পুরুষ পড়ে থাকে। কারণ, (নারী-পুরুষ উভয় জাতির) উম্মতকে সম্বোধন করে রসূল (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা সেইরুপ নামায পড়, যেরুপ আমাকে পড়তে দেখেছ।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ৬৮৩নং) আর উভয়ের নামায পৃথক হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীলও নেই।
সুতরাং যে আদেশ শরীয়ত পুরুষদেরকে করেছে, সে আদেশ মহিলাদের জন্যও এবং যে সাধারণ আদেশ মহিলাদেরকে করেছে তাও পুরুষদের ক্ষেত্রে পালনীয় -যদি বিশেষ হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার দলীল না থাকে। যেমন, “যারা সতী মহিলাদের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদের জন্য শাস্তি হল ৮০ কোড়া---।” (কুরআন মাজীদ ২৪/৪) পরন্তু যদি কেউ কোন সৎ পুরুষকে অনুরুপ অপবাদ দেয়, তবে তার জন্যও ঐ একই শাস্তি প্রযোজ্য।
সুতরাং মহিলারাও তাদের নামাযে পুরুষদের মতই হাত তুলবে, পিঠ লম্বা করে রুকূ করবে, সিজদায় জানু হতে পেট ও পায়ের রলাকে দূরে রেখে পিঠ সোজা করে সিজদাহ করবে। তাশাহ্‌হুদেও সেইরুপ বসবে, যেরুপ পুরুষরা বসে। উম্মে দারদা (রাঃ) তাঁর নামাযে পুরুষের মতই বসতেন। আর তিনি একজন ফকীহ্‌ ছিলেন। (আত্‌-তারীখুস স্বাগীর, বুখারী ৯৫পৃ:, বুখারী, ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ২/৩৫৫) আর মহিলাদের জড়সড় হয়ে সিজদাহ করার ব্যাপারে কোন হাদীস সহীহ নয়। (সিলসিলাহ যায়ীফাহ, আলবানী ২৬৫২ নং) এ জন্যই ইবরাহীম নাখয়ী (রহঃ) বলেন, ‘নামাযে মহিলা ঐরুপই করবে, যেরুপ পুরুষ করে থাকে।’ (ইবনে আবী শাইবা, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ১৮৯পৃ:)
পক্ষান্তরে দলীলের ভিত্তিতেই নামাযের কিছু ব্যাপারে মহিলারা পুরুষদের থেকে ভিন্নরুপ আমল করে থাকে। যেমন:-
১। বেগানা পুরুষ আশে-পাশে থাকলে (জেহরী নামাযে) মহিলা সশব্দে কুরআন পড়বে না। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৩/৩০৪) যেমন সে পূর্ণাঙ্গ পর্দার সাথে নামায পড়বে। তাছাড়া একাকিনী হলেও তার লেবাসে বিভিন্ন পার্থক্য আছে।
২। মহিলা মহিলাদের ইমামতি করলে পুরুষদের মত সামনে না দাঁড়িয়ে কাতারের মাঝে দাঁড়াবে।
৩। ইমামের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মহিলা পুরুষের মত ‘সুবহা-নাল্লাহ্‌’ না বলে হাততালি দেবে।
৪। মহিলা মাথার চুল বেঁধে নামায পড়তে পারে, কিন্তু (লম্বা চুল হলে) পুরুষ তা পারে না।
এ সব ব্যাপারে দলীলসহ্‌ বিস্তারিত আলোচনা যথাস্থানে দ্রষ্টব্য।
অনেক মহিলা আছে, যারা মসজিদে বা বাড়িতে পুরুষদের নামায পড়া না হলে নামায পড়ে না। এটা ভুল। আযান হলে বা নামাযের সময় হলে আওয়াল অক্তে নামায পড়া মহিলারও কর্তব্য। (মুত্বাসা ১৮৮-১৮৯পৃ:)

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

নারী-পুরুষের নির্জনবাস

আসসালামু আলাইকুম        Download PDF    ফেসবুক পেজ     Google plus    Web Site

  -  টুইটারে টুইট 

ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :      
            ১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word)     ৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"

নারী-পুরুষের নির্জনবাস


বেগানা ([1]) নারী-পুরুষের কোন নির্জন স্থানে একাকী বাস, কিছু ক্ষণের জন্যও লোক-চক্ষুর অন্তরালে, ঘরের ভিতরে, পর্দার আড়ালে একান্তে অবস্থান শরীয়তে হারাম। যেহেতু তা ব্যভিচার না হলেও ব্যভিচারের নিকটবর্তী করে, ব্যভিচারের ভূমিকা অবতারণায় সহায়িকা হয়। আল্লাহর নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘কোন পুরুষ যেন কোন নারীর সাথে একান্তে গোপনে অবস্থান না করে। কারণ, শয়তান উভয়ের কুটনী হয়।’’[2]
এ ব্যাপারে সমাজে অধিক শৈথিল্য পরিলক্ষিত হয় দেওর-ভাবী ও শালী-বুনাই-এর ক্ষেত্রে। অথচ এদের মাঝেই বিপর্যয় ঘটে অধিক। কারণ ‘পর চোরকে পার আছে, ঘর চোরকে পার নাই।’ তাই তো আল্লাহর নবী (সাঃ) মহিলাদের পক্ষে  তাদের দেওরকে মৃত্যুর সাথে তুলনা করেছেন।’’[3]
অতএব দেওরের সাথে মায়ের বাড়ি, ডাক্তারখানা, অনুরূপ বুনাই-এর সাথে বোনের বাড়ি, ডাক্তারখানা বা কোন বিলাস-বিহারে যাওয়া-আসা এক মারাত্মক বিস্ফোরক প্রথা বা ফ্যাশন।
তদনুরূপ তাদের সাথে কোন কামরা বা স্থানে নির্জনতা অবলম্বন, বাড়ির দাসী বা দাসের সাথে গৃহকর্তা বা কর্ত্রী অথবা তাদের ছেলে-মেয়ের সাথে নিভৃতবাস, বাগদত্ত বরকনের একান্তে আলাপ বা গমন, বন্ধু-বান্ধবীর একত্রে নির্জনবাস, লিফ্টে কোন বেগানা  যুবক-যুবতীর একান্তে উঠা-নামা, ডাক্তার ও নার্সের একান্তে চেম্বারে অবস্থান, টিউটর ও ছাত্রীর একান্তে নির্জনবাস ও পড়াশোনা,  স্বামীর অবর্তমানে কোন বেগানা আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে নির্জনবাস, ট্যাক্সি  ড্রাইভারের সাথে বা রিক্সায় রিক্সাচালকের সাথে নির্জনে গমন, পীর ও মহিলা মুরীদের একান্তে বায়াত ও তা’লীম প্রভৃতি একই পর্যায়ের; যাদের মাঝে  শয়তান কুট্নী সেজে অবৈধ বাসনা ও কামনা জাগ্রত করে কোন পাপ সংঘটিত করতে চেষ্টা করে।[4]
বারুদের নিকট আগুন রাখা হলে বিস্ফোরণ তো হতেই পারে। যেহেতু মানুষের মন বড় মন্দপ্রবণ এবং দুর্নিবার কামনা ও বাসনা মানুষকে অন্ধ ও বধির করে তোলে। তা ছাড়া নারীর মাঝে রয়েছে মনোরম কমনীয়তা, মোহনীয়তা এবং চপলতা। আর শয়তান তো মানুষকে অসৎ কাজে ফাঁসিয়ে দিয়ে আনন্দবোধ করে থাকে।
অনুরূপ কোন বেগানা মহিলার সাথে নির্জনে নামায পড়াও বৈধ নয়।[5]
তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর নিকট নিজের সন্তান দেখতে গিয়ে বা কোন কাজে গিয়ে তার সাথে নির্জনতাও অনুরূপ। কারণ, সে আর স্ত্রী নেই। আর এমন মহিলার সাথে বিপদের আশঙ্কা বেশী। শয়তান তাদেরকে তাদের পূর্বের স্মৃতিচারণ করে ফাঁসিয়ে দিতে পারে।[6]
বৃদ্ধ-বৃদ্ধার আপোসে বা তাদের সাথে যুবতী-যুবকের নির্জনবাস, কোন হিজড়ে বা খাসি করা নারী-পুরুষের আপোষে বা তাদের সাথে যুবক-যুবতীর, একাধিক মহিলার সাথে কোন একটি যুবক অথবা একাধিক পুরুষের সাথে এক মহিলার, কোন সুশ্রী কিশোরের সাথে যুবকের নির্জনবাসও অবৈধ। প্রয়োজন হলে এবং মহিলার মাহরাম না পাওয়া গেলে কোন মহিলার জামাআতে একজন পুরুষ থেকে সফর আদি করায়  অনেকের নিকট অনুমতি রয়েছে।[7]
প্রকাশ যে, মহিলার সাথে কোন নাবালক শিশু থাকলে নির্জনতা কাটে না।
  ব্যভিচার থেকে সমাজকে দূরে রাখার জন্যই ইসলামে নারী-পুরুষে অবাধ মিলা-মিশা, একই অফিসে, মেসে, ক্লাশরুমে, বিয়ে ও মরা বাড়িতে, হাসপাতালে, বাজারে প্রভৃতি ক্ষেত্রে উভয় জাতির একত্রে জমায়েত অবৈধ।[8]
  মুসলিম নারীর শিক্ষার অর্থ এই নয় যে, তাকে বড় ডিগ্রী, সুউচ্চ পদ, মোটা টাকার চাকুরী পেতে হবে। তার শিক্ষা জাতিগঠনের জন্য, সমাজ গড়ার জন্য, মুসলিম দেশ ও পরিবেশ গড়ার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু শিখতে পারলেই যথেষ্ট; যদিও তা ঘরে বসেই হয়। তা ছাড়া পৃথক গার্ল্স স্কুল-কলেজ না থাকলে মিশ্র শিক্ষাঙ্গনে মুসলিম নারীর শিক্ষায় ‘জল খেতে গিয়ে ঘটি হারিয়ে যাওয়া’র ঘটনাই অধিক ঘটে থাকে; যে সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত হওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু আদর্শ মুসলিম হওয়া যায় না। নারীর সবনির্ভরশীল হয়ে জীবন-যাপন করায় গর্ব আছে ঠিকই, কিন্তু সুখ নেই। প্রকৃতির সাথে লড়ে আল্লাহর আইনকে অবজ্ঞা করে নানান বিপত্তি ও বাধাকে উল্লংঘন করে অর্থ কামিয়ে স্বাধীনতা আনা যায় ঠিকই; কিন্তু শান্তি আনা যায় না। শান্তি আছে  স্বামীর সোহাগে,  স্বামীর প্রেম, ভালোবাসা ও আনুগত্যে। পরিত্যক্তা বা নিপীড়িতা হলে এবং দেখার কেউ না থাকলে মুসলিম রাষ্ট্র ও সমাজে তার কালাতিপাত করার যথেষ্ট সহজ উপায় আছে। যেখানে নেই সেখানকার কথা বিরল। অবশ্য দ্বীন ও দুনিয়ার প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারলে এ সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে উঠবে। যারা পরকালের চিরসুখে বিশ্বাসী তারা জাগতিক কয়েকদিনের সুখ-বিলাসের জন্য দ্বীন ও ইজ্জত বিলিয়ে দেবে কেন?[9]
ব্যভিচারের প্রতি নিকটবর্তী হওয়ার আর এক পদক্ষেপ মহিলাদের একাকিনী কোথাও বাইরে যাওয়া-আসা। তাই ‘সুন্দরী চলেছে একা পথে, সঙ্গী হইলে দোষ কি তাতে?’ বলে বহু লম্পট তাদের পাল্লায় পড়ে থাকে, ধর্ষণের হাত হতে অনেকেই রক্ষা পায় না, পারে না নিজেকে ‘রিমার্ক’ ও ‘টিস্’ এর শিলাবৃষ্টি হতে বাঁচাতে। এর জন্যই তো সমাজ-বিজ্ঞানী রসূল (সাঃ) বলেন,

وَلاَ تُسَافِرُ المَرْأةُ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ.

‘‘মহিলা যেন এগানা পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে।’’ (বুখারী ৫২৩৩, মুসলিম ১৩৪১ন)

المَرأَةُ عَورَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيطَان.

‘‘রমণী গুপ্ত জিনিস; সুতরাং যখন সে (বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়।’’[10]
ব্যভিচারের কাছে যাওয়ার আর এক পদক্ষেপ কোন এমন মহিলার নিকট কোন গম্য আত্মীয় বা অন্য পুরুষের গমন যার  স্বামী বর্তমানে বাড়িতে নেই, বিদেশে আছে। কারণ এমন স্ত্রীর মনে সাধারণতঃ যৌনক্ষুধা একটু তুঙ্গে থাকে, তাই বিপদ ঘটাই স্বাভাবিক। স্ত্রী বা ঐ পুরুষ যতই পরহেযগার হোক, তবুও না। এ বিষয়ে নীতি-বিজ্ঞানী (সাঃ) বলেন,

لَا تَلِجُوا عَلَى الْمُغِيبَاتِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنْ أَحَدِكُمْ مَجْرَى الدَّمِ.

‘‘তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের  স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ, শয়তান তোমাদের রক্তশিরায় প্রবাহিত হয়।’’[11]
সাহাবী (রাঃ) বলেন, ‘‘আল্লাহর নবী (সাঃ) আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের  স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।’’[12]
অনুরূপ কোন প্রকার সেন্ট বা পারফিউমড্ ক্রিম অথবা পাওডার ব্যবহার করে বাইরে পুরুষদের সম্মুখে (পর্দার সাথে হলেও) যাওয়া ব্যভিচারের নিকটবর্তী হওয়ার এক ভূমিকা। যেহেতু যুবকের প্রবৃত্তি এই যে, মহিলার নিকট হতে সুগন্ধ পেলে তার যৌন-চেতনা উত্তেজনায় পরিণত হয়। যার জন্যই সংস্কারক নবী (সাঃ) বলেন,

كُلُّ عَيْنٍ زَانِيَةٌ وَالْمَرْأَةُ إِذَا اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ بِالْمَجْلِسِ فَهِيَ كَذَا وَكَذَا يَعْنِي زَانِيَةً.

‘‘প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর রমণী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় তাহলে সে এক বেশ্যা।’’[13]
এমন কি এই অবস্থায় নামাযের জন্য যেতেও নিষিদ্ধ।[14]
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

أَيُّمَا امْرَأَة تَطَيَّبَت ثُمَّ خَرَجَت إِلَى المسجِدِ لَم تُقبَل لهَا صَلاَةٌ حَتى تَغتَسِل.

‘‘যে মহিলা সেন্ট্ ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোন নামায কবুল হবে না।’’ (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ২৭০৩নং)
কোন গম্য পুরুষের সাথে মহিলার প্রগল্ভতার সাথে কিংবা মোহনীয় কণ্ঠে সংলাপ ও কথোপকথন করাও ব্যভিচারের নিকটবর্তীকারী পথসমূহের অন্যতম ছিদ্রপথ। এ বিপজ্জনক বিষয়ে সাবধান করে আল্লাহ তা’আলা মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন,

﴿إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ﴾

‘‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে পরপুরুষদের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে ব্যাধিগ্রস্ত অন্তরের মানুষ প্রলুব্ধ হয়।’’[15]
এই জন্যই ইমাম ভুল করলে পুরুষ মুক্তাদীরা তসবীহ বলে স্মরণ করাবে, আর মহিলারা হাততালির শব্দে, তসবীহ বলেও নয়! যাতে নারীর কণ্ঠসবরে কতক পুরুষের মনে যৌনানুভূতি জাগ্রত না হয়ে উঠে। সুতরাং নারী-কণ্ঠের গান তথা অশ্লীল গান যে কি, তা রুচিশীল মানুষদের নিকট সহজে অনুমেয়।
  এমন বহু হতভাগী মহিলা আছে, যারা  স্বামীর সাথে কর্কশসবরে কথা বলে কিন্তু কোন উপহাসের পাত্রের (?) সাথে মোহন-সূরে সংলাপ ও উপহাস করে। এরা নিশ্চয়ই পরকালেও হতভাগী।
তদনুরূপ বেগানা নারীর সাথে মুসাফাহা বৈধ নয়। হাতে মোজা, দস্তানা বা কাপড়ের কভার রেখেও নয়। কামমনে হলে তা হাতের ব্যভিচার।[16] 
করতল চেপে ধরা এবং সুরসুরি দেওয়াও হল তার ইঙ্গিত! কোন গম্য নারীর দেহ স্পর্শ, বাসে-ট্রেনে, হাটে-বাজারে, স্কুলে-কলেজে প্রভৃতি ক্ষেত্রে গায়ে গা লাগিয়ে চলা বা বসা, নারী-পুরুষের ম্যাচ খেলা ও দেখা প্রভৃতি ইসলামে হারাম। কারণ, এ সবগুলিও অবৈধ যৌনাচারের সহায়ক। সমাজ সংস্কারক নবী (সাঃ) বলেন,

لأَنْ يُطْعَنَ فِي رَأْسِ رَجُلٍ بِمِخْيَطٍ مِنْ حَدِيدٍ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمَسَّ امْرَأَةً لا تَحِلُّ لَهُ.

‘‘কোন ব্যক্তির মাথায় লৌহ সুচ দ্বারা খোঁচা যাওয়া ভালো, তবুও যে নারী তার জন্য অবৈধ তাকে স্পর্শ করা ভালো নয়।’’[17]
বাইরে বের হয়ে রমণীর রমণীয়, মোহনীয় ও সৌন্দর্য-গর্বজনক চপল মধুর চলনও ব্যভিচার ও যৌন উত্তেজনার সহায়ক কর্ম। এরা সেই নারী যাদের প্রসঙ্গে নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘তারা পুরুষকে আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হয়; তারা জাহান্নামী।’’ [18]
অনুরূপ খট্খট্ শব্দবিশিষ্ট জুতো নিয়ে চট্পটে চলন, দেহের অলঙ্কার যেমন চুড়ি, খুঁটকাটি, নুপুর, তোরা প্রভৃতির বাজনা বাজিয়ে লাস্যময় চলনও যুবকের মনে যৌন-আন্দোলন আনে। সুতরাং এ কর্ম যে হারাম তা বলাই বাহুল্য। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿وَلاَ يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ﴾

‘‘তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে  সজোরে পদক্ষেপ না করে----।’’[19]
যেমন পথে চলার সময় পথের মাঝে চলা নারীর জন্য বৈধ নয়।[20]
মহিলাদের জন্য সবগৃহে গোসলখানা (বাথরুম) করা ওয়াজেব (সিমেন্টের হওয়া জরুরী নয়) এবং ফাঁকা পুকুরে, নদীতে, ঝর্ণায়, সমুদ্রতীরে বা সাধারণ গোসলখানায় গোসল করা তাদের জন্য হারাম। যেহেতু সমাজ-বিজ্ঞানী নবী (সাঃ) বলেছেন,

أَيُّمَا امْرَأَةٍ وَضَعَتْ ثِيَابَهَا فِي غَيْرِ بَيْتِهَا فَقَدْ هَتَكَتْ مَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ أَوْ سِتْرَ مَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.

‘‘যে নারী সবগৃহ ( স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি) ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) আল্লাহ তার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেন। (অথবা সে নিজে করে দেয়।)[21]

مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يُدْخِلْ حَلِيلَتَهُ الْحَمَّامَ.

‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহতে ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার স্ত্রীকে সাধারণ গোসলখানায় যেতে না দেয়।’’[22]
সবগৃহ ছেড়ে পরকীয় গৃহে বাস, বান্ধবী বা বান্ধবীর  স্বামীর বাড়িতে রাত্রিবাস ইত্যাদিও বিপজ্জনক ব্যভিচারের ছিদ্রপথ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে মহিলা নিজের  স্বামীগৃহ ছাড়া অন্য গৃহে নিজের কাপড় খোলে সে আল্লাহ আয্যা অজাল্লা ও তার নিজের মাঝে পর্দা বিদীর্ণ করে ফেলে।’’[23]
একই কারণে অপরের লজ্জাস্থান (নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত স্থান) দেখা এবং একই কাপড়ে পুরুষে-পুরুষে বা মহিলায়-মহিলায় শয়ন করাও নিষিদ্ধ।[24]
পর পুরুষের দৃষ্টিতে মহিলার সর্বশরীর লজ্জাস্থান। বিশেষ করে চক্ষু এমন এক অঙ্গ যার দ্বারা বিপত্তির সূচনা হয়। চোখাচোখি থেকে শুরু হয়, কিন্তু শেষ হয় গলাগলিতে। এই ছোট্ট অঙ্গার টুকরা থেকেই সূত্রপাত হয় সর্বগ্রাসী বড় অগ্নিকান্ডের। দৃষ্টির কথাই কবি বলেন,
‘‘আঁখি ও তো আঁখি নহে, বাঁকা ছুরি গো
কে জানে সে কার মন করে চুরি গো!’’
প্রেম জগতে চক্ষু কথা ব’লে এমন বিষয় বুঝিয়ে থাকে যা জিহ্বা প্রকাশ করতে অক্ষম। চোখের কোণেই আছে যাদুর রেখা।
‘‘নয়না এখানে যাদু জানে সখা এক আঁখি ইশারায়
  লক্ষ যুগের মহা-তপস্যা কোথায় উবিয়া যায়!’’
‘নজরবান’ মেরে অনেকে অনেককে ঘায়েল করে থাকে। চোরা চাহনিতে অনেকেই বুঝিয়ে থাকে গোপন প্রণয়ের সূক্ষ্ম ইঙ্গিত।
‘‘--গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি; ছল করে দেখা অনুখন,
    --চপল মেয়ের ভালোবাসা তার কাঁকন চুড়ির কন্কন্।’’
সুতরাং এ দৃষ্টি বড় সাংঘাতিক বিপত্তি। যার জন্যই আল্লাহপাক বলেন,

﴿قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ- وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ﴾

‘‘মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে (নজর ঝুকিয়ে চলে) এবং তাদের যৌনাঙ্গকে সাবধানে সংযত রাখে; এটিই তাদের জন্য উত্তম। ওরা যা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত। আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও লজ্জাস্থান সংরক্ষা করে---।’’[25]
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘(কোন রমণীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি) বারবার দৃক্পাত করো না। বরং নজর সত্বর ফিরিয়ে নিও।’’[26]
যেহেতু ‘‘চক্ষুও ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার হল (কাম)দৃষ্টি।’’[27]
সুতরাং এ দৃষ্টিকে ছবি থেকেও সংযত করতে হবে এবং পরপুরুষ থেকে আড়ালে রাখতে হবে। যাতে একহাতে তালি নিশ্চয়ই বাজবে না। আর এই বড় বিপদ সৃষ্টিকারী অঙ্গ চোখটি থাকে চেহারায়। চোখাচোখি যাতে না হয়, তাই তো নারীর জন্য জরুরী তার চেহারাকেও গোপন করা।
অত্যন্ত সখীত্বের খাতিরে হলেও বিনা পর্দায় সখীতে-সখীতে দৃঢ় আলিঙ্গন ও একে অপরকে নিজ নিজ সৌন্দর্য প্রদর্শন করা বৈধ নয়। কারণ এতে সাধারণতঃ প্রত্যেক সখী তার সখীর দেহ-সৌষ্ঠব নিজের  স্বামীর নিকট বর্ণনা করলে  স্বামী মনের পর্দায় তার স্ত্রীর ঐ সখীর বিলক্ষণ রূপ-দৃশ্য নিয়ে মনোতৃপ্তি লাভ করে থাকে।[28] হয়তো বা মনের অলক্ষ্যেই এই পুরুষ তার হৃদয়ের কোন কোণে ঐ মহিলার জন্য আসন পেতে দেয়। আর পরবর্তীতে তাকে দেখার ও কাছে পাওয়ার মত বাসনাও জাগ্রত করে তোলে।
নোংরা পত্র-পত্রিকা পাঠ, অশ্লীল ছায়াছবি ও থিয়েটার-যাত্রা দর্শনও একই পর্যায়ের; যাতে ধবংস হয় তরুণ-তরুণীর চরিত্র, নোংরা হয়ে উঠে পরিবেশ।
 স্বামী-স্ত্রীর মিলন-রহস্য প্রভৃতি জানার জন্য সঠিক সময় হল বিবাহের পর অথবা বিবাহের পাকা দিন হওয়ার পর। নচেৎ এর পূর্বে রতি বা কামশাস্ত্র পাঠ করে বিবাহে দেরী হলে মিলনতৃষ্ণা যে পর্যায়ে পৌঁছায় তাতে বিপত্তি যে কোন সময়ে ঘটতে পারে।
কারো রূপ, দ্বীনদারী প্রভৃতির প্রশংসা শুনে তাকে মনে মনে ভালোবেসে ফেলা দূষণীয় নয়। তাকে পেতে বৈধ উপায় প্রয়োগ করা এবং বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ করে সুখের সংসার গড়া উত্তম। কিন্তু অবৈধভাবে তাকে দেখা, পাওয়া, তার কথা শোনা ও তার সান্নিধ্যলাভের চেষ্টা করা অবশ্যই সীমালংঘন। অবৈধ বন্ধুত্ব ও প্রণয়ে পড়ে টেলিফোনে সংলাপ ও সাক্ষাৎ প্রভৃতি ইসলামে হারাম।
যুবক-যুবতীর ঐ গুপ্ত ভালোবাসা তো কেবল কিছু দৈহিক সুখ লুটার জন্য। যার শুরুতেও চক্ষে অশ্রু ঝরে এবং শেষেও। তবে শুরুতে ঝরে আনন্দাশ্রু, আর শেষে উপেক্ষা ও লাঞ্ছনার। কারণ, ‘কপট প্রেম লুকোচুরি, মুখে মধু, হূদে ছুরি’ই অধিকাংশ হয়। এতে তরুণী বুঝতে পারে না যে, প্রেমিক তার নিকট থেকে যৌনতৃপ্তি লাভ ক’রে তাকে বিনষ্ট ক’রে চুইংগামের মত মিষ্টতা চুষে নিয়ে শেষে আঠাল পদার্থটিকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
‘‘বন্ধু গো যেও ভুলে-
 প্রভাতে যে হবে বাসি, সন্ধ্যায় রেখো না সে ফুল তুলে।
 উপবনে ত্ব ফোটে যে গোলাপ প্রভাতেই তুমি জাগি,
 জানি, তার কাছে যাও শুধু তার গন্ধ-সুষমা লাগি।’’
সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিৎ মুসলিম তরুণীকে এবং তার অভিভাবককেও। কারণ, ‘বালির বাঁধ, শঠের প্রীতি, এ দুয়ের একই রীতি।’

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...