জাকির নায়েক এর পক্ষে বিপক্ষে এখন আর তর্ক করিনা ।
কিন্তু চোখের সামনে কেউ যদি বলে 'উনি খ্রিষ্টান
ইয়াহুদীদের দালাল' তখন কি আর চুপ থাকা সম্ভব!!
যা ঘটলো গতকাল রাত:
.
.
এশারের নামাজের পরে রুমমেট বন্ধুদের সাথে বসে
Peace tv তে ডা. জাকির নায়েকের লেকচায় শুনছিলাম ।
এক রুমমেটের একজন গেস্ট ও আমাদের সাথে
ছিলো ।
উনার কাওমী মাদ্রাসায় দাওরা পড়া শেষ,
সরকারি মাদ্রাসা থেকে আলিম পরিক্ষা দিয়ে এখন কুষ্টিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করছে, আবার হাফেজ ও।
নিঃসন্দেহে অনেক মেধাবী,
তবে কাওমী মাদ্রাসার ছাত্র (দেওয়াবন্দের অনুসারি তো)
তাই আগেই
বুঝতে পেরেছি মানসিকতা গোড়া হবে
হটাত্ করে উনি বলে উটলো "চ্যানেল চেন্জ কর,
এগুলো শুনলে গোমরা হয়ে যাবে ।"
এই কথা শোনার পর রুমের সবাই ভিতরে ভিতরে অট্রহাসি
দিলো কিন্তু মুখে প্রকাশ করেনি যেহেতু উনি গেস্ট ।
আমি বললাম
"ভাইয়া গোমরা হবো কেন ?"
আরে উনি আলেম না !
এরপর উনি চিরাচরিত উদাহরণ টি পেশ করিলেন
"একজন ডাক্তার ডাক্তারি বিষয়ে ভালো জানবে,
একজন ডাক্তার ধর্মের বিষয়ে জানবে কি ??"
...আমি বললাম
"আমি তো দেখছি উনি ইসলাম ধর্মের পন্ড়িতদের
থেকে আরো অনেক ভালো জানেন ইসলাম
সম্পর্কে"
যেমন ?
যেমন আমেরিকার পি এইচ ডি ধারী ডঃ উইলিয়াম ক্যাম্বেল
যিনি কিনা বহু বছর ধরে কোরআনের বৈজ্ঞানিক ভুল আছে
বলে মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন এবং তার
সাথে কেউ
চ্যালেঞ্জ করার সাহস পেত না,
২০০০ সালের দিকে ডাঃ জাকির কোরআন যে কোন ভুল
নেই
সেটাতো প্রমাণ করেছেন,
উল্টা বাইবেলের অসংখ্য ভুল রয়েছে তা প্রমাণ
করেছেন এবং ডঃ উইলিয়াম ক্যাম্বেল তা মেনে নিতে
বাধ্য হয়েছেন।
ডা. জাকির নায়েক ছাড়া কি অন্যকোন ইসলামিক পন্ড়িত
ছিলোনা ???
তারপর...... তিনি হিন্দু পণ্ডিত শ্রী শ্রী রবী শংকর এর
সাথে ডিবেট করে প্রমাণ করেন যে, হিন্দু ধর্মে
মূর্তিপূজা হারাম ।
এরপর তার বৈদ্ধ পণ্ডিত দালাই লামার সাথে ডিবেট হওয়ার কথা
ছিল, কিন্তু তিনি কথা দিয়েও পর পিছ- পা হন,
কারণ......
ডাঃ জাকির নায়েক আজ পর্যন্ত কোন ডিবেট এ পরাস্ত হন
নাই, কারণ তিনি কোরআন এবং হাদিস দ্বারা প্রমাণ করেন আর
এ জন্যই আল্লাহ্ তার সাথে আছেন ।
উনি বললেন "তুমি জান ডা. জাকির নায়েক বলেছে
আল্লাহকে ব্রাহ্ম-
বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা যাবে।’’
আমি বলেছি আপনার যদি আরো কোন অভিযোগ থাকে
তাহলে বলে যেতে পারেন।
উনি বললো "ডা. জাকির নায়েক বলেছে হায়েয ও
নেফাসওয়ালী মহিলা কুরআন পড়তে পারবে"
তৃতীয় নাম্বার হলো "উনি মাযহাব মানেনা"
আমি বললাম আর কোন অভিযোগ আছে ?
উনি বললো আগে এগুলো খন্ড়ন কর,
বিসমিল্লাহ পড়ে নেমে গেলাম উনার উত্তর দিতে।
ভাইয়া আপনার প্রথম অভিযোগ হলো ডা. জাকির নায়েক
বলেছে আল্লাহকে ব্রাহ্ম- বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা
যাবে।’’
ভাইয়া এবার বলুনতো আল্লাহর ৯৯ টি নাম কি অন্য ভাষায়
ট্রাসলেট
করে বলা যাবে ??
এর পর উনি হ্যাঁ ও বলেনা নাও বলেনা,
বুদ্ধিমান মানুষ তো বুইজা গেছে (জেগে ঘুমাইতাছে)।
যদি উনি বলে আল্লাহর ৯৯ টি নাম অন্যভাষায় ট্রান্সলেট
করে বলা যাবেনা তাহলে উনাকে এটার দলীল দেখাতে
হবে।
আবার যদি হ্যাঁ বলে তাহলে সংস্কৃত ভাষা অনুযায়ী
‘ব্রহ্ম’( বাংলা-সৃষ্টিকর্তা, আরবী- ‘খালিক’, যা আল্লাহ তায়ালার
৯৯টা গুণবাচক
নামের একটি),
‘বিষ্ণু’ ( বাংলা-পালনকর্তা, আরবী- রব, যা আল্লাহ তায়ালার
আরেকটি গুণবাচক নাম) বলতে পারবেন। তবে এর বাইরে
অন্যকিছু
বোঝালে অর্থাৎ দেবতা জাতীয় কিছু মনে করে
থাকলে বলা যাবে না।
আমি তার এই কথার বিরোধিতা করছি না এই জন্য যে, এটা
তো আল্লাহর গুণবাচক নামের বাইরে যাচ্ছে না। সংস্কৃত
ভাষার মানুষেরা তাদের ভাষায় আল্লাহর গুণবাচক নাম ধরে
ডাকতে না পারলে আমরা আমাদের বাংলা ভাষায়
আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা এবং পালনকর্তা ডাকি কেন ??
ভাই আপনার দ্বিতীয় অভিযোগ ছিলো "উনি বলেছে
হায়েয
ও নেফাসওয়ালী মহিলা কুরআন পড়তে পারবে"
আপনি কি আমাকে ভিড়িও দেখাতে পারবেন??
আমি এমন লেকচার শুনিনি,
আর যদি উনি এই বিষয়ে বলেও থাকেন তাহলে উনি এই
হাদীসটার
উপর আমল করেছেন...
হায়েয ও নেফাসওয়ালী মহিলা কুরান স্পর্ষ না করে
তেলাওয়াত
করতে পারবে।- বুখারি, হা/ ৩০৫- ৬।ফাতহুল বারী, ১/ ৪০৭-৮-
৯।
অপবিত্র অবস্থায় মহিলা কিংবা পুরুষ কুরান তেলাওয়াত করতে
পারবে না- মর্মে যত হাদিস এসেছে সবই যইফ, জাল
ইত্যাদী। তাই সহিহ হাদিসের মোকাবেলায় এই সব দুর্বল
হাদিস টিকবে না।
যইফ হাদিস বেশী হলেও সহিহ হাদিসের মোকাবেলায় তা
বর্জনীয়।
এরপর উনি হ্যাঁ , না করা শুরু করলো (উত্তর পেয়ে খুশি
নয়)
ভাইয়া আপনার তৃতীয় প্রশ্ন উনি মাযহাব মানেনা
ভাইয়া শুধু আপনি না পুরো দেওয়াবন্দের অনুসারিরাই উনাকে
এই
কারনে কাফের বলে গালি দেয় ।
যাক গে আমি বললাম
ভাইয়া মাযহাব পালন করতে হবে এই বিষয়ে কিছু দলীল
পেশ করেন।
উনি মাথার ঘাম পায়ে পেলে (যথেষ্ট দলীল দিয়ে)
প্রমাণ করলেন
যে মুজতাহিদ দের ইজতেহাদ পালন করা আমাদের উপর
ফরজ/
ওয়াজিব ।
আমি বললাম ভাইয়া আপনার সাথে তর্ক করে ভালো লাগছে
ঈমাম আজম আবু হানিফা এই হাদীস টা নিয়েছে আপনি হানাফি
তাই
এই হাদীস টাই নিলেন,
যদি এই হাদীসটার উপরে কোন সহীহ হাদীস থাকে
আপনি সেটা নিলেন না কেন ?
কারন এই হাদীসটা আবু হানিফা রহঃ নিয়েছেন,
আবার ঈমাম শাফেয়ী যে হাদীস টা নিলো আপনি সেটা
নিচ্ছেন
না কারন আপনি হানাফি।
ইমাম আবু হানিফা যে হাদীসটা নিয়েছে সেই হাদীসটা
আপনি ও নিলেন এবং এই হাদিসটা হানাফিরা নেয়াও ফরজ মানে
"অন্ধ অনুসরণ" এই বিষয়ে দলীল দেখাতে পারবেন ??
আর ডা. জাকির নায়েক মাযহাব সম্পর্কে বলেছে
"আমিই সবচাইতে বড় হানাফি,
কারন ঈমাম আবু হানিফা বলেছেন
'আমার কথার উপরে যদি কোন সহীহ হাদীস থাকে
তাহলে সেটাই
আমার মাযহাব'
এই উক্তি অনুসারে আমি নিজে সবচাইতে বড় হানাফি"
উনার সবগুলো উত্তর দেয়ার পর আমি বললাম ভাইয়া ডা.
জাকির নায়েক কে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিলো উনার
অনুষ্ঠানে কেন প্রশ্নোত্তর
পর্বটা চালু করেছে তখন তিনি উত্তরে কি বলেছিলো
জানেন ??
উনি বলেছে "আমি মানুষ আমার ভুল হতে পারে আমার ভুল গুলো যেন মানুষ আমার সামনেই ধরিয়ে দেই সে জন্য এই প্রশ্নোত্তর পর্বটা চালু করা হয়েছে"
সংগ্রহীত : ইসলাম 0 Muslim