শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল চাই।




আমি ৫ ওয়াক্ত ছালাত ঠিকমত আদায় করিনা। কিন্তু জানিস জুমার ছালাত মিস দেই না রে। 


আমি পহেলা বৈশাখ, ভালবাসা দিবস, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করি। কিন্তু জানিস? দুই ঈদে যেভাবে জীবন বাজি রেখে বাড়ী ফিরি কোন দিবসেই সেভাবে বাড়ী ফিরিনা রে। চাহে তা ১৬ই ডিসেম্বরই হোক আর ২১ শে ফেব্রুয়ারী। 

কুরআন হয়তো পড়তে পারিনা ভালভাবে । কিন্তু জানিস আমাদের বাড়ীতে সবচেয়ে যে বইটাকে বেশী সম্মান করা হয় তা কুরআন। অজু ছাড়া ভয়ে হাত লাগাইনা। কাপড়ে মোড়ানো থাকে তাকের উপর। সম্মানই আলাদা। 

বলিউড, হলিউডের নায়ক নায়িকাদের রোল মডেল মানি। ওদের মত লাইফ স্টাইল আমার। কিন্তু জানিস নিজের অজান্তেই হৃদয়ের কোনায় একটা মানুষের নাম খচিত আছে। তার কথা হয়তো মানিনা নিজের দোষে। কিন্তু তাকে কেউ অসম্মান করলে বরদাশত করতে পারিনা রে। তিনি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)। 

আমি নগ্ন অর্ধ নগ্ন মেয়েদের নাচ দেখি। কিন্তু জানিস হিজাব-নিকাব পরা কোন মেয়ে দেখলে সম্মান করি রে। 

আমি জানি আমি একজন পাপিষ্ঠ গুনাহগার বান্দা। কিন্তু জানিস হৃদয়ে সুপ্ত ঈমান বিক্রি করিনি।জন্মের পরেই যে আজানের ধ্বনি কানে বেজেছে তার সাথে আমার এক অব্যক্ত ভালবাসা আছে রে। আছে নাড়ির টান। আমারও খুব ইচ্ছা যেন আমার মরার সময় শেষ কালেমা ওই আজানের শেষ কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হয়।

 বাদশাহ জাহাংগীরের দরবারে একদা নুরজাহানের প্রিয়ভাজন শিয়া বিচারপতি আবু বকর ও ওমর (রাঃ)-এর শানে খারাপ বাক্য ব্যবহার করেছিল। বাক্য শুনে বাদশাহ রেগে যান। কিন্তু তার স্ত্রী নুরজাহান বাদশাহকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কেননা প্রধান বিচারপতির সাথে শিয়াদের বিরাট রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিল। যার পুরোটাই ডিল করছিল নুরজাহান। তখন বাদশাহ জাহাংগীর হুংকার দিয়ে বলে উঠেন 

নুরজাহান! হামনে তুমহে আপনা দিল দিয়া 
লেকিন আপনা ঈমান নাহি দিয়া। 

‘নুরজাহান! তোমাকে অন্তর দিয়েছি কিন্তু ঈমান দেইনি’। তারপর বাদশাহর নির্দেশে সেই বিচারপতির জিহব্বা টেনে হত্যা করা হয়। তার কবর আজও দিল্লির শাহী মসজিদের পাশের কবরস্থানে রয়েছে।

আমরা বাংলার সাধারণ মুসলমান হয়তো সব দিয়ে দিয়েছি তোমাদের কিন্তু আমাদের ধর্ম ইসলাম দেইনি। এটা নিয়ে খেলা কর না। নইলে সুপ্ত ঈমান একবার জাগ্রত হলে তাতে যে জোয়ার সৃষ্টি হয় তা কোন বাধ মানেনা। 

#রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল চাই।

আপনার ধর্ম কি ইসলাম তাহলে সাবধান!!!!!


ভাই মনোযোগ এর সাথে পড়েন। শিরক আরবি শব্দ। এর অর্থ অংশীদার করা, তুলনা করা বা সমতুল্য মনে করা। অর্থাৎ আল্লাহর জাত, সিফাত, মতা ও কর্মের সাথে অন্য কারো তুলনা করা, শরিক করা বা সমতুল্য মনে করা। এ ধরনের বিশ্বাস অন্তরে ধারণ করা, মুখে বলা এবং কার্যে পরিণত করা সবই হারাম। সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করতে পারেন, কিন্তু শিরকের গুনাহ আল্লাহ মাফ করেন না। সূরা লোকমানের ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন,স্মরণ করো, যখন লোকমান উপদেশ সহকারে তার পুত্রকে বলেছিল, হে বৎস! আল্লাহর কোনো শরিক করিও না। নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম। সূরা নিসার ১১৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন,নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে মাফ করেন না, যে তার সাথে কাউকে শরিক করে। এটা ছাড়া যাকে ইচ্ছা মাফ করেন।

 যে আল্লাহর সাথে শরিক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হবে। শিরকের ব্যাপারে রাসূল সা: ও তার সাহাবিদের সতর্কতা : রাসূল সা: ও তার সাহাবিরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিরকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। হজরত আয়েশা রা: ও আব্দুলাহ ইবনে আব্বাস রা: বর্ণনা করেন, নবী করিম সা: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগকালীন যখন মৃত্যুযন্ত্রণায় অস্থির ছিলেন সেই মুহূর্তে বললেন, ইহুদি ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক, তারা তাদের পয়গম্বরগণের কবরকে মসজিদ রূপে ব্যবহার করে। এই বলে রাসূল সা: স্বীয় উম্মতকে এ ধরনের অপকর্ম থেকে সতর্ক করেছেন ।(বুখারি ও মুসলিম)। নবী করিম সা: যে গাছটির নিচে বসে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সাহাবায়ে কেরামদের থেকে বায়াত গ্রহণ করছিলেন এবং আল্লাহ তায়ালা এই বায়াত সম্বন্ধে বলেন : মুমিনেরা যখন বৃক্ষতলে আপনার কাছে বায়াত হলো তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি অবগত ছিলেন। তাদের তিনি দান করলেন প্রশান্তি এবং তাদের পুরস্কার দিলেন আসন্ন বিজয় ।

 হজরত উমর রা: তার খেলাফতকালে দেখতে পেলেন, লোকেরা ওই গাছটিকে খুব বেশি বরকতময় গাছ মনে করে তার কাছে খুব বেশি যাতায়াত করে থাকে। ভবিষ্যতে মানুষ শিরক ও বেদাতের মধ্যে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কায় তিনি গাছটির মূলোৎপাটন করে দিলেন, যাতে শিরকের ফেতনা উদ্ভাবিত হতে না পারে। এ ছাড়া নবী করিম সা: মক্কা- মদিনার মধ্যপথে কোনো এক স্থানে নামাজ পড়েছিলেন। হজরত উমর রা: সেই স্থানে কিছু লোককে ফজরের নামাজের পর নামাজ পড়তে দেখে তাদের ওই স্থানে নামাজ পড়তে নিষেধ করলেন। নবী করিম সা: অভিশাপ করেছেন ওই সব স্ত্রীলোককে যারা কবর জিয়ারত করে এবং ওই সব লোকের প্রতি যারা কবরের ওপর মসজিদ নির্মাণ করে ও বাতি জ্বালায়। (আবু দাউদ, তিরমিজি ও নাসায়ি)। সুতরাং এ কথা পরিষ্কার যে, কবর পূজা অর্থাৎ কবরকেন্দ্রিক ইবাদত হারাম। আমাদের কেউ কেউ কবরের কাছে গিয়ে অনেক বিনয় ও নম্র ভাবে কাকুতি-মিনতি করে সন্তান চান। মানত করে আবার অসুখ- বিসুখের জন্যও সাহায্য চান। অনেক সময় দেখা যায় যার কাছে সন্তান চাওয়া হয়েছে তার নিজেরই সন্তান নেই। অর্থাৎ নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেছে। আর যার কাছে সুস্থতার জন্য সাহায্য চাওয়া হয় সে নিজেই কোনো না কোনো অসুস্থতায় মারা গেছেন। তার কবরের ওপরে আলোবাতি দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়, কিন্তু তিনি তো ভেতরে; সেখানে আলো দেবে কে? তিনি যদি সত্যিকার আল্লাহর নেক বান্দা হতেন তাহলে আল্লাহ কি তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করে দিতে পারেন না, অবশ্যই পারেন। আসমান ও জমিনের সম্পূর্ণ সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই। তিনি বিপদে সাহায্যকারী, তিনি সন্তান দানকারী, তিনিই আশ্রয়দানকারী এবং তিনিই রুজি- রোজগার দানকারী। সূরা ইউনুসের ১০৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, যদি আল্লাহ তোমাকে কোনো কষ্টে ফেলেন, তবে তিনি ছাড়া অন্য কোনো বিদূরনকারী নেই। আর যদি তিনি কোনো কল্যাণ দান করেন, তবে তার অনুগ্রহকে দূর করার মতো কেউ নেই।সূরা হুদের ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ আরো বলেন ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই। 

শিরক থেকে আমাদের কেন বাঁচা দরকার : 
১. আল্লাহ শিরকের গুনাহ মাফ করেন না, অন্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। 
২. শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে এবং সেখানে চিরকাল থাকবে।
 ৩. শিরক করা কাফের, মুশরিক ও ইহুদিদের কাজ।
 ৪. শিরক সবচেয়ে বড় জুলুম। 
৫. তাওহিদের বিপরীত হলো শিরক। 
৬. শিরক সর্বপ্রকার গোমরাহি ও ভিত্তিহীন মতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। 
৭. শিরককারী ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম জীব হিসেবে গণ্য হবে। 
৮. শিরককারী ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে অভিশপ্ত সৃষ্টি হিসেবে বিবেচিত হয়।
 ৯. শিরককারীর জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের দোয়াও করা যায় না। আসুন আমরা শিরক মুক্ত আমল করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি ।


Dr. Jakir naik mp3

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪

শির্ক কি জানতে চাইলে....


যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

শিরকের সংজ্ঞা: 
রব ও ইলাহ হিসাবে আল্লাহর সহিত আর কাউকে শরীক সাব্যস্ত করার নামই শিরক৷

অধিকাংশ ক্ষেত্রে উলুহিয়াত তথা ইলাহ হিসাবে আল্লাহর সাথে শরীক করা হয়৷ যেমন আল্লাহর সাথে অন্য কারো নিকট দোয়া করা কিংবা বিভিন্ন প্রকার ইবাদাত যেমন যবেহ, মান্নাত, ভয়, আশা, মহব্বত ইত্যাদির কোন কিছু গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা৷

আল্লাহকে ডাকার মত অন্যকে ডাকা, আল্লাহকে ভয় করার মত অন্যকে ভয় করা, তাঁর কাছে কামনা করা হয়, অন্যের কাছে তা কামনা করা। তাঁকে ভালোবাসার মত অন্যকেও ভালোবাসা।“মানুষের মধ্যে এমন একদল লোক আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে শরীক বানিয়েছে এবং তাদেরকে এমনভাবে ভালবাসে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসা উচিত, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকেই সর্বাধিক ভালবাসে”। (সূরা আল বাকারা: ১৬৫) আল্লাহর জন্যে সম্পাদনযোগ্য ইবাদতসমূহের যে কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা।


শিরকের ভয়াবহ পরিণাম :
শিরকের মাধ্যমে সৃষ্টিকে স্রষ্টার আসনে বসানো হয়, যা মহা অপরাধ এবং রীতি মত অবিচার।
আল্লাহ বলেন:
“নিশ্চয়ই শিরক একটি মস্ত বড় অন্যায়” (সুরা লোকমান: ১৩)

আল্লাহ তা’আলা শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া ক্ষমা করবেন না।
আল্লাহ বলেন-
• “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা
করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে
দিবেন” (সুরা নিসা: ৪৮)

আল্লাহ তা’আলা মুশরিকদের জন্যে জান্নাত হারাম বলে ঘোষণা করেছেন:
• “নিশ্চয় যে আল্লাহ’র সাথে শিরক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ: ৭২)

শিরক সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। আল্লাহ বলেন,
• “আর যদি তারা শিরক করে তাহলে তাদের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে।” (সুরা আনআম: ৮৮)
• আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন। (সূরা যুমার: ৬৫)

আল্লাহ তাআলা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিয়েছেন, শিরক করার পর যে ব্যক্তি তা থেকে তওবা করবেনা, তিনি তাকে ক্ষমা করবেন না৷ আল্লাহ বলেন:
• নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। (সূরা নিসা ৪৮)

শিরকই হল সবচেয়ে বড় গুনাহ। নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
# “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? আর তা হল, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা।” (বুখারি-মুসলিম)



শিরকের প্রকারভেদ:

শিরক দুই প্রকার।
  1. শিরকে আকবর বা বড় শিরক।
  2. শিরকে আসগর বা ছোট শিরক।

১. শিরকে আকবার(বড় শিরক) :
যা বান্দাকে মিল্লাতের গন্ডী থেকে বের করে দেয়৷ এ ধরণের শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি যদি শিরকের উপরই মৃতু্যবরণ করে, এবং তা থেকে তওবা না করে থাকে, তাহলে সে চিরস্থায়ী ভাবে দোজখে অবস্থান করবে৷

শিরকে আকবর হলো গায়রুল্লাহ তথা আল্লাহ ছাড়া যে কোন ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তুর উদ্দেশ্যে কোন ইবাদত আদায় করা, গায়রুল্লাহর উদ্দেশে কুরবানী করা, মান্নাত করা, কোন মৃত ব্যক্তি কিংবা জি্বন অথবা শয়তান কারো ক্ষতি করতে পারে কিংবা কাউকে অসুস্থ করতে পারে, এ ধরনের ভয় পাওয়া, প্রয়োজন ও চাহিদা পূর্ণ করা এবং বিপদ দূর করার ন্যায় যে সব ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ক্ষমতা রাখেনা সে সব ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে আশা করা৷

আজকাল আওলিয়া ও বুযুর্গানে দ্বীনের কবরসমূহকে কেন্দ্র করে এ ধরনের শিরকের প্রচুর চর্চা হচ্ছে৷ এদিকে ইশারা করে আল্লাহ বলেন:
• ‘তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর ইবাদত করে, যা না তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারে, না করতে পারে, কোন উপকার৷ আর তারা বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী৷’ (সূরা ইউনুস ১৮)

২.শিরকে আসগার (ছোট শিরক) 
শিরক আসগার বান্দাকে মুসলিম মিল্লাতের গন্ডী থেকে বের করে দেয়না, তবে তার একত্ববাদের আক্বীদায় ত্রুটি ও কমতির সৃষ্টি করে৷ এটি শিরকে আকবারে লিপ্ত হওয়ার অসীলা ও কারণ৷

এ ধরনের শিরক দু’প্রকার:

প্রথম প্রকার: স্পষ্ট শিরক

এ প্রকারের শিরক কথা ও কাজের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে৷

কথার ক্ষেত্রে শিরকের উদাহরণ:
আল্লাহর ব্যতীত অন্য কিছুর কসম ও শপথ করা৷ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
# রাসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করে, সে কুফরী করে অথবা শিরক করে।”[তিরমিযী]

অনুরূপভাবে এমন কথা বলা যে, ”আল্লাহ এবং তুমি যেমন চেয়েছ”
কোন এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ”আল্লাহ এবং আপনি যেমন চেয়েছেন” কথাটি বললে তিনি বললেন, ”তুমি কি আমাকে আল্লাহর সাথে সমকক্ষ স্থির করলে? বরং বল, আল্লাহ এককভাবে যা চেয়েছেন৷”

আর একথাও বলা যে, ”যদি আল্লাহ ও অমুক ব্যক্তি না থাকত” ৷ উপরোক্ত ক্ষেত্রদ্বয়ে বিশুদ্ধ হল নিম্নরূপে বলা – ”আল্লাহ চেয়েছেন, অতঃপর অমুক যেমন চেয়েছে” ”যদি আল্লাহ না থাকতেন, অতঃপর অমুক ব্যক্তি না থাকত” । তাই ”এবং ” শব্দের বদলে “তারপর” কিংবা “অতঃপর শব্দের ব্যবহার বান্দার ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার অধীনস্ত করে দেয়৷ যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:
•‘তোমরা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুরই ইচ্ছা করতে পারনা৷’ ( সূরা তাক'ওয়ীর : ২৯)

কাজের ক্ষেত্রে শিরকের উদাহরণ:
যেমন বিপদাপদ দূর করার জন্য কড়ি কিংবা দাগা বাঁধা, বদনজর থেকে বাঁচার জন্য তাবীজ ইত্যাদি লটকানো৷ এসব ব্যাপারে যদি এ বিশ্বাস থাকে যে, এগুলো বলাথ-মসীবত দূর করার মাধ্যম ও উপকরণ, তাহলে তা হবে শিরকে আসগার৷ কেননা আল্লাহ এগুলোকে সে উপকরণ হিসাবে সৃষ্টি করেননি৷ পক্ষান্তরে কারো যদি এ বিশ্বাস হয় যে, এসব বস্তু স্বয়ং বালা- মুসীবত দূর করে, তবে তা হবে শিরক আকবর৷ কেননা এতে গায়রুল্লাহর প্রতি সেই ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে যা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট৷


দ্বিতীয় প্রকার: গোপন শিরক
এ প্রকার শিরকের স্থান হলো ইচ্ছা, সংকল্প ও নিয়্যাতের মধ্যে৷ যেমন লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রসিদ্ধি অর্জনের জন্য কোন আমল করা৷ অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায় এমন কোন কাজ করে তা দ্বারা মানুষের প্রশংসা লাভের ইচ্ছা করা৷ যেমন সুন্দর ভাবে নামায আদায় করা, কিংবা সদকা করা এ উদ্দেশ্যে যে, মানুষ তার প্রশংসা করবে, অথবা সশব্দে যিকির- আযকার পড়া ও সুকন্ঠে তেলাওয়াত করা যাতে তা শুনে লোকজন তার গুণগান করে৷ যদি কোন আমলে রিয়া তথা লোক দেখানোর উদ্দেশ্য সংমিশ্রিত থাকে, তাহলে আল্লাহ তা বাতিল করে দেন৷ আল্লাহ বলেন:
• ‘অতএব যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন সত্কর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ ( সূরা কাহফ: ১১০)

# রাসূল (সাঃ) বলেন, “যে বিষয়ে আমি তোমাদের উপরে সবচেয়ে বেশি ভয় করি, তা হল ছোট শিরক”। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ছোট শিরক কি? তিনি বলিলেন, “ছোট শিরক হচ্ছে রিয়া (লোক দেখানো ইবাদত।)”[মুসলিম]

পার্থিব লোভে পড়ে কোন আমল করাও এ প্রকার শিরকের অন্তর্গত৷ যেমন কোন ব্যক্তি শুধু মাল- সম্পদ অর্জনের জন্যেই হজ্জ করে, আযান দেয় অথবা লোকদের ইমামতি করে, কিংবা শরয়ী জ্ঞান অর্জন করে বা জিহাদ করে৷

ইমাম ইবনুল কাইয়েম (র) বলেন সংকল্প ও নিয়্যাতের শিরক হলো এমন এক সাগর সদৃশ যার কোন কূল- কিনারা নেই৷ খুব কম লোকই তা থেকে বাঁচতে পারে৷ অতএব যে ব্যক্তি তার আমল দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কিছু ও গায়রুল্লার কাছে ঐ আমলের প্রতিদান প্রত্যাশা করে, সে মূলতঃ উক্ত আমল দ্বারা তার নিয়ত ও সংকল্প নিয়্যত খালেছ ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্যে করা৷ এটাই হলো সত্যপন্থা তথা ইব্রাহীমের মিল্লাত, যা অনুসরণ করার জন্য আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এতদ্ব্যতীত তিনি কারো কাছ থেকে অন্য কিছু কবুল করবেন না৷ আর এ সত্য পন্থাই হলো ইসলামের হাকীকত৷


উপরের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বাবে বুঝা যাচ্ছে যে, শিরকে আকবার ও শিরকে আসগারের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে৷
সেগুলো হল:
  1. কোন ব্যক্তি শিরকে আকবারে লিপ্ত হলে সে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের হয়ে যায়৷ পক্ষান্তরে শিরকে আসগারের ফলে সে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের হয় না৷
  2. শিরকে আকবরে লিপ্ত ব্যক্তি চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবে৷ পক্ষান্তরে শিরকে আসগারে লিপ্ত ব্যক্তি জাহান্নামে গেলে চিরকাল সেখানে অবস্থান করবেনা৷
  3. শিরকে আকবার বান্দার সমস্ত আমল নষ্ট করে দেয়, কিন্তু শিরকে আসগার সব আমল নষ্ট করেনা৷ বরং রিয়া ও দুনিয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে কৃত আমল শুধু তত্সংশ্লিষ্ট আমলকেই নষ্ট করে৷
  4. শিরকে আকবারে লিপ্ত ব্যক্তির জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল৷ পক্ষান্তরে শিরকে আসগারে লিপ্ত ব্যক্তির জান-মাল কারো জন্য হালাল নয়।

প্রচলিত কিছু শিরকী কথা:
মানুষের মাঝে একটা স্বভাব রয়েছে আর তাহলো তার চেয়ে ভাল অবস্থায় কেউ থাকলে বা তার নিজস্ব অবস্থানের চেয়ে কাউকে বড় দেখলে সে তাকে তার মনের মাঝে এমন একটা জায়গায় স্থান দিতে শুরু করে যে ধীরে ধীরে সে নিজের অজান্তে শিরকে জড়িয়ে পরে। আমাদের অনেকেই প্রায়ই এই ধরণের কথা বলে থাকিঃ

  • আপনি ছিলেন বলেই আজকে রক্ষা পেলাম!
  • আমি আপনার উপরই ভরসা করছি!
  • আপনি ছাড়া আর কে সাহায্য করবে!
  • আপনি যদি থাকতেন তাহলে কাজটা এরকম হতো না!
  • ভাই সাহায্য করেন, আপনিই একমাত্র পারেন আমাকে সাহায্য করতে!
  • হ্যালো, ভাই কেমন আছেন! কঠিন বিপদে আছি উদ্ধার করেন ভাই! (মোবাইল কথোপকথন)
  • হে দয়ার নবী রক্ষা কর মোরে!
  • হে দয়ার নবী রক্ষা যদি না কর বেহেশতে যেতে পারব না!
  • হে অমুক মাজারবাসী আমার অমুক আশাটা পূরণ করে দেন!
  • কেবলাবাবাই ভরসা!
  • দয়ালবাবা, বাবা ভান্ডারী রক্ষা কর মোরে!

আমি মোটামুটি কিছু প্রচলিত কথা তুলে ধরলাম, যার চর্চা করার মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত শিরক করে চলছি! যা মোটেই উচিত নয়, একজন মুসলিম হিসেবে এই বিষয়ে স্পষ্ট একটা ধারণা থাকা প্রয়োজন। কারণ, আল্লাহ তাআলা শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না।

শির্ক কি এবং তা কত প্রকার?


শির্ক কি এবং তা কত প্রকার?




উত্তর: শির্ক হচ্ছে তাওহীদের বিপরীত দিক, শির্ক তিন প্রকার: বড় শির্ক, ছোট শির্ক এবং গোপনীয় শির্ক।
ক: বড় শির্ক চার প্রকার:
 ১-দো‘আর ক্ষেত্রে শির্ক,
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَإِذَا رَكِبُواْ فِي ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّىٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥ ﴾ [العنكبوت: ٦٥] 

অর্থাৎ: তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধ চিত্তে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে; অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন তখন তারা শির্কে লিপ্ত হয়। [সূরা আনকাবূত ৬৫]
২- নিয়ত, ইচ্ছা এবং কথার ক্ষেত্রে শির্ক:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيۡهِمۡ أَعۡمَٰلَهُمۡ فِيهَا وَهُمۡ فِيهَا لَا يُبۡخَسُونَ ١٥ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيۡسَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٦ ﴾ [هود: ١٥،  ١٦]

অর্থাৎ: যে ব্যক্তি শুধু পার্থিব জীবন ও এর জাঁকজমক কামনা করে আমি তাদেরকে তাদের কৃতকর্মগুলির ফল দৃনিয়াতেই পরিপূর্ণভাবে প্রদান করে দেই এবং দুনিয়াতে তাদের জন্য কোনো কিছুই কম করা হয় না। তারা এমন লোক যে, আখেরাতে তাদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই, আর তারা যা কিছূ করেছিল তা সবই আখেরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং যা কিছু করছে তাও বিফল হবে। [সূরা হূদ ১৫-১৬]
৩- আনুগত্যের ক্ষেত্রে শির্ক:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ ٱتَّخَذُوٓاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَٰنَهُمۡ أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُوٓاْ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٣١ ﴾ [التوبة: ٣١] 

অর্থাৎ: তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম ও ধর্মযাজকদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং মরিয়মের ছেলে ঈসাকেও অথচ তাদের প্রতি শুধু এ আদেশ করা হয়েছে যে, তারা শুধুমাত্র এক মা’বূদের ইবাদত করবে, যিনি ব্যতীত যোগ্য কোনো উপাসক নেই, বস্তুত: তিনি তাদের অংশী স্থির করা হতে পবিত্র। [সূরা তাওবা ৩১]
৪- ভালবাসার ক্ষেত্রে শির্ক:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادٗا يُحِبُّونَهُمۡ كَحُبِّ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَشَدُّ حُبّٗا لِّلَّهِۗ وَلَوۡ يَرَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاْ إِذۡ يَرَوۡنَ ٱلۡعَذَابَ أَنَّ ٱلۡقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعٗا وَأَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعَذَابِ ١٦٥ ﴾ [البقرة: ١٦٥]

অর্থাৎ: এবং মানুষের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে সদৃস স্থির করে নেয়, তারা আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবেসে থাকে এবং যারা ঈমানদার আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসা অধিক দৃঢ়তর, আর যারা অত্যাচার করেছে তারা যদি শাস্তি অবলোকন করতো তাহলে বুঝতো যে, সমুদয় শক্তি আল্লাহর জন্যে এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা বাকারা ১৬৫]
খ: ছোট শির্ক আর এটি হচ্ছে সামান্য লোকদেখানো।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَمَن كَانَ يَرۡجُواْ لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلٗا صَٰلِحٗا وَلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدَۢا ١١٠ ﴾ [الكهف: ١١٠] 

অর্থাৎ: সূতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে আর তার প্রতিপালকের ইবাদতে যেন কাউকে শরীক না করে। [সূরা কাহাফ ১১০]
গ: গোপন শির্ক, এর দলীলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম) বলেন:
(এ উম্মতের মাঝে শির্ক এমন গোপনীয় ভাবে প্রবেশ করে যে ভাবে অন্ধকার রাত্রিতে কালো পাথরে পিপিলিকা হাটলে টের পওয়া যায় না।)


দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪

ঈমান ভঙ্গের কারণ-


📖⤵
     ঈমান ভঙ্গের  কারণ-
     ------------------------------
👉 আমরা ওযু ভঙ্গের কারণ জানি, নামায ভঙ্গের কারণ জানি কিন্তু ঈমান ভঙ্গের কারণ জানি কি??
এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় দুই মিনিট সময় ব্যয় করে একটু সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নিতে পারেন..! নিচে বিষয়গুলো সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো...!
-
🌹 এক:- 
শিরক!
     আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদতে শরীক করা।

📖 এ ব্যাপারে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ আল্লাহ্ বলেছেন:
“নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর সাথে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না।ইহা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেহ আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহা পাপ করে।”(সূরা নিসা ৪: আয়াত ৪৮)

🌹 দুই:-
     মধ্যস্থতা ধরা
      যে ব্যক্তি তার নিজের এবং আল্লাহর মধ্যে মধ্যস্থতা ও যোগাযোগের মাধ্যম বানায় এবং তাদের কাছে তার মনোস্কামনা পূরণের(শাফায়া) জন্য আবেদন নিবেদন করে এবং তাদের উপর নির্ভর করে, সে কাফির (অবিশ্বাসী) হয়ে যায়। ইহাই অতীত ও বর্তমানের আলেমদের ইজমা।

📖 প্রমাণ- মহান আল্লাহ বলেন,
“তারা আল্লাহকে ব্যতিত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না,উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, ‘এইগুলি আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিবে যা তিনি জানেন না?তিনি মহান, পবিত্র’ এবং তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি উর্দ্ধে।”(সূরা ইউনুস ১০: আয়াত ১৮)

🌹তিন:-
     যে ব্যক্তি বহু্ইশ্বরবাদকে প্রত্যখান না করে বা বহুইশ্বরবাদী(মুশরীক) কাফির কিনা এমন সন্দেহ পোষণ করে সে কাফির হয়ে যায়। উদাহরণ স্বরূপ যদি কোন ব্যক্তি বলে যে, সে নিশ্চিত নয় একজন খৃষ্টান কাফির কিনা, তাহলে সে নিজেই কাফির হয়ে যায়। কারণ সে ঈসা(আ)-কে আল্লাহ হিসেবে গ্রহণকারী খৃষ্টানদের প্রত্যাখান করে নি।

🌹চার:-
      যে ব্যক্তি মহানবী(সা) কর্তৃক দ্বীনের পরিপূর্ণতা ও দিক নির্দেশনা বা ফয়সালায় অবিশ্বাস করে সে কাফির। এর কারণ হচ্ছে আল্লাহর রাসূল(সা) ও তার ফয়সালা হচ্ছে সীরাতুল মুসতাক্কিমের উপর। আর যারা তাগুতের কাছে যাওয়া বেশি পছন্দ করে তারা সত্য সঠিক পথ হতে বহু দূরে। 

📖 এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
“কারও নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যে দিকে সে ফিরিয়া যায় সে দিকেই তাকে ফিরাইয়া দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করবেন না; ইহা ব্যতিত সব কিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, এবং কেহ আল্লাহর শরীক করলে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়।” (সূরা নিসা ৪: আয়াত ১১৫-১১৬)

🌹পাঁচ:-
      যে ব্যক্তি নবী মুহাম্মদ(সা) যা কিছু নিয়ে এসেছেন তাতে অসন্তুষ্ট হয় যদিও সে এ অনুযায়ী কাজ করে, সে কাফির হয়ে যায়। যেমন এক ব্যক্তি যে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে অথচ সে এগুলো করা অপছন্দ করে অথবা এমন এক মহিলা যে হিজাব পরে অথচ সে তা পরা অপছন্দ করে।

📖 মহান আল্লাহ বলেন-
“আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে,‘আমরা আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমান এনেছি’, কিন্তু তারা মু’মিন নয়।” (সূরা বাকারা ২; আয়াত ৮)

🌹ছয়:-
      যে ব্যক্তি দ্বীনের আওতার কোন কিছুর ব্যাপারে উপহাস করে বা কৌতুক করে অথবা ইসলামের কোন পুরষ্কার বা শাস্তির ব্যাপারে ব্যাঙ্গ করে সে কাফির হয়ে যায়। 

📖 এর প্রমাণ হচ্ছে—
“এবং তুমি তাদেরকে প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমারা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর নিদর্শন ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ ‘তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করিও না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ।….” (সূরা তওবা ৯ : আয়াত ৬৫-৬৬)

🌹সাত:-
   আস সিহর বা জাদু,
সকল প্রকার যাদু নিষদ্ধ, কেউ এতে অংশগ্রহণ করুক, সময় ব্যয় করুক বা চর্চার প্রতি সহানুভূতিশীল হোক না কেন। যে ব্যক্তি জাদু চর্চা করে বা জাদুতে খুশী হয়, সে কাফির হয়ে যায়। 

📖 মহান রবের বানী -
কারণ আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন:
“…সুলায়মান কুফরী করে নাই কিন্তু শয়তানরাই কুফরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত….।”(সূরা বাকারা ২ : আয়াত ১০২)

🌹আট:-
      যে ব্যক্তি মুশরিককে(বহু ঈশ্বরবাদী কাফের-ইহুদী,খ্রিষ্টান প্রভৃতি) সাহায্য সমর্থন করে এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাকে সহয়তা করে সে কাফির হয়ে যায় কারণ তার কাছে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে এমন একজন মুসলিমের তুলনায় আল্লাহর শত্রু বেশী প্রিয়।

📖 ইহার প্রমাণ "
“হে মু’মিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি ঈমানের মুকাবিলায় কুফরীকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে তাদেরকে অন্তরঙ্গরুপে গ্রহণ করে না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে অন্তরঙ্গরুপে গ্রহণ করে, তারাই যালিম।” (সূরা তওবা ৯:আয়াত ২৩)

🌹নয়:-
      যদি কোন ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, সে শারিয়ার মধ্যে (আল্লাহর আইন) বিভিন্ন জিনিস যোগ করা বা কতিপয় বিষয় বাদ দেওয়ার মাধ্যমে ইসলামের উন্নতি সাধন করতে পারব তাহলে সে কাফির হয়ে যায়।

ইহার কারণ হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালার পরিপূর্ণভাবে সকল মানুষের জন্য তার নবী মুহাম্মদ(সা)-এর কাছে ইসলামের বাণী পাঠিয়েছেন এবং যদি কেউ এটা অস্বীকার করে তাহলে সে কুরআনের এই আয়াতের বিরুদ্ধে যায়:

📖 “…আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।…”(সূরা মায়িদা ৫: আয়াত ৩)

🌹দশ: 
       মুহাম্মদ(সা)-এর প্রতি অবতীর্ণ বাণী শিক্ষা না করা অথবা সে অনুযায়ী কাজ না করার মাধ্যমে কেউ আল্লাহর বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে সে ইসলামের গন্ডির বাহিরে চলে যায়। 

📖 আল কুরানে এর প্রমাণ হচ্ছে-
“যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।” (সূরা সাজদা ৩২:আয়াত ২২)

শেষ কথা:-
*********
এইগুলোই দশটি বিষয় যা কোন ব্যক্তির ইসলামকে অকার্যকর করতে পারে এবং যদি সে তার ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত না হয় এবং সে মৃত্যু বরণ করার আগে আবার ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে সে একজন মুশরিক (পৌত্তলিক) বা একজন কাফিরের মৃত্যুবরণ করে, আর তার গন্তব্যস্থল হয় অনন্ত কালের জন্য দোজখের আগুন এবং কোনদিনও জাহান্নামের আগুন থেকে বের করা হবে না।
-
ঈমানের সাথে সম্পর্কিত অতি প্রয়োজনীয় উপরে উল্লেখিত বিষায়াদির প্রতিটি মানুষের নিজে জানা, উপলদ্ধি করা এবং সেই সাথে অন্যকেও জানিয়ে দেয়া আমাদের প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব।
আসুন আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হই এবং এই বক্তব্যটি অন্যর কাছে পৌঁছে দেই।

                           🌹🌹🌹🌹🌹🌹
                              🌾🌾🌾🌾
                                 🌴🌴🌴
                                   🍀🍀


Dr. Jakir naik mp3

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪

কোরআনের আলোকে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কি কি কর্তব্য রয়েছে?


প্রশ্নঃ কোরআনের আলোকে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কি কি  কর্তব্য রয়েছে?
______________________________________________
 উওরঃ
স্বামী-স্ত্রী একজন আরেকজনের পোশাকের মতো। পোশাক যেমন আমাদের ইজ্জত-আব্রু হেফাজত করে ও আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকাও ঠিক তেমনি।

স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে কোরআনের আলোকে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কিছু কর্তব্য পালন করা আবশ্যক। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কর্তব্য তুলে ধরা হল:

#স্বামীর_আনুগত্য:


স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। তবে যেকোন আনুগত্যই নয়, বরং যেসব ক্ষেত্রে আনুগত্যের নিম্ন বর্ণিত তিন শর্ত বিদ্যমান থাকবে।

(ক) ভাল ও সৎ কাজ এবং আল্লাহর বিধান বিরোধী নয় এমন সকল বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন সৃষ্টির আনুগত্য বৈধ নয়।

(খ) স্ত্রীর সাধ্য ও সামর্থ্যরে উপযোগী বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্বারোপ করেন না।

(গ) যে নির্দেশ কিংবা চাহিদা পূরণে কোন ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সে ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা। আনুগত্য আবশ্যক করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন—

وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ. ﴿ البقرة : ২২৭﴾

‘নারীদের উপর পুরুষগণ শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের অধিকারী।’[৭]

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন—

الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ. ﴿النساء : ৩৪﴾

‘পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী। কারণ আল্লাহ তাআলা-ই তাদের মাঝে তারতম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিধান রেখেছেন। দ্বিতীয়ত পুরুষরাই ব্যয়-ভার গ্রহণ করে।’[৮] উপরন্তু এ আনুগত্যের দ্বারা বৈবাহিক জীবন স্থায়িত্ব পায়, পরিবার চলে সঠিক পথে।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বামীর আনুগত্যকে এবাদতের স্বীকৃতি প্রদান করে বলেন—

إذا صلت المرأة خمسها، وصامت شهرها، وحصنت فرجها، وأطاعت بعلها، دخلت من أى من أبواب الجنة شاءت. مسند أحمد (১৫৭৩)

যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসের রোজা রাখে এবং নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে ও স্বীয় স্বামীর আনুগত্য করে, সে, নিজের ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে।

স্বামীর কর্তব্য, এ সকল অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করা। স্ত্রীর মননশীলতা ও পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে সত্য-কল্যাণ ও উত্তম চরিত্রের উপদেশ প্রদান করা কিংবা হিতাহিত বিবেচনায় বারণ করা। উপদেশ প্রদান ও বারণ করার ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ ও উন্নত মননশীলতার পরিচয় দেয়া। এতে সানন্দ চিত্তে ও স্বাগ্রহে স্ত্রীর আনগত্য পেয়ে যাবে।

#স্বামী-আলয়ে অবস্থান:

নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত। মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের সম্বোধন করে বলেন, সকল নারীই এর অন্তর্ভুক্ত-

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى. ﴿الأحزاب : ৩৩﴾

‘তোমরা স্ব স্ব গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মত নিজেদের কে প্রদর্শন করে বেড়িও না।

স্ত্রীর উপকার নিহিত এবং যেখানে তারও কোন ক্ষতি নেই, এ ধরনের কাজে স্বামীর বাধা সৃষ্টি না করা। যেমন পর্দার সাথে, সুগন্ধি ও সৌন্দর্য প্রদর্শন পরিহার করে বাইরে কোথাও যেতে চাইলে বারণ না করা। ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لاتمنعوا إماء الله مساجد الله. البخاري (৮৪৯)

আল্লাহর বান্দিদেরকে তোমরা আল্লাহর ঘরে যেতে বাধা দিয়ো না।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা: এর স্ত্রী যয়নব সাকাফী রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বলতেন,

إذا شهدت إحداكن المسجد فلا تمس طيبا. مسلم (৬৭৪)

তোমাদের কেউ মসজিদে যাওয়ার ইচ্ছে করলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে না।

নিজের ঘর এবং সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা:

স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করা। স্বামীর সাধ্যের অতীত এমন কোন আবদার কিংবা প্রয়োজন পেশ না করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

والمرأة راعية فى بيت زوجها ومسؤولة عن رعيتها. البخاري (২৫৪৬)

‘স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘরের জিম্মাদার। এ জিম্মাদারির ব্যাপারে তাকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে।

#নিজের_সতীত্ব ও সম্মান রক্ষা করা:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদিসে বলা হয়েছে, নিজেকে কখনো পরীক্ষা কিংবা ফেতনার সম্মুখীন না করা।

স্বামীর অপছন্দনীয় এমন কাউকে তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি না দেয়া:

হোক না সে নিকট আত্মীয় কিংবা আপনজন। যেমন ভাই-বেরাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

…ولكم عليهن أن لا يؤطئن فرشكم أحداً تكرهونه. مسلم (২১৩৭)

‘তোমাদের অপছন্দনীয় কাউকে বিছানায় জায়গা না দেয়া স্ত্রীদের কর্তব্য।

স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা। কারণ, রোজা নফল, আনুগত্য ফরজ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

لا يحل للمرأة أن تصوم و زوجها شاهد إلا بأذنه، ولا تأذن فى بيته إلا باذنه. البخاري (৪৭৯৬)

নারীর জন্য স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা বৈধ নয়। অনুরূপ ভাবে অনুমতি ব্যতীত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও বৈধ নয়।

এছাড়াও কোরআন হাদিসের আলোকে আরো বিভিন্ন দায়িত্ব-কর্তব্য আছে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর। তবে উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...