শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭

উলামাদের দৃষ্টিতে বুখারী ও মুসলিমের হাদীস

উলামাদের দৃষ্টিতে বুখারী ও মুসলিমের হাদীস----


০১. হাফেয আবূ নাসর ওয়ায়েলী বলেন, “আহলে ইলম তথা ফুকাহাগণ এ কথায় একমত যে, ‘যদি কেউ কসম করে বলে, বুখারীতে যত হাদীস এসেছে, তার সবগুলি সহীহ, নিঃসন্দেহে সেগুলি আল্লাহর রসূল (সা:) এর মুখনি:সৃত বানী, এ কথা সত্য না হলে আমার স্ত্রী তালাক।’ তাহলে তার স্ত্রীর তালাক হবে না।” [উলূমুল হাদীস ২২ পৃ:]

০২. ইমামুল হারামাইন বলেন, যদি কেউ কসম খেয়ে বলে যে, ‘বুখারী-মুসলিমে যত হাদীস এসেছে তার সবগুলি নবী (সা:) এর উক্তি; তানা হলে আমার স্ত্রী তালাক।’ তাহলে তালাক হবে না। যেহেতু উক্ত দুই কিতাবের সহীহ হওয়ার ব্যাপারে মুসলিমদের উলামাগণ একমত। [তাদরীবুর রাবী ১/১৩১-১৩২]
– আবূ ইসহাক ইসফারাইনী বলেন, “হাদীস-বিশেষজ্ঞগণ এ ব্যাপারে একমত যে, বুখারী-মুসলিমের ‘উসূল’ ও ‘মতন’-এ যত হাদীস আছে, নিঃসন্দেহে তা সহীহ।” [ফাতহুল মুগীস ১/৪৭]

০৩. ইবনে স্বালাহও প্রায় একই কথা বলেন। (দেখুন: শারহুন নাওয়াবী ১/১৯)
০৪. ইমাম নাওয়াবী বলেন, “উলামা (রাহিমাহুমুল্লাহ) গণ এ ব্যাপারে একমত যে, কুরআনে আযীযের পর সবচেয়ে বেশী সহীহ কিতাব হল সহীহায়ন বুখারী ও মুসলিম। যেহেতু উম্মাহ (সহীহরূপে) তার বরণ করে নিয়েছে।” [শারহুন নাওয়াবী ১/১৪]

০৫. ইমাম নাওয়াবী বলেন, “উম্মাহ এ ব্যাপারে একমত যে, এই কিতাবদ্বয় সহীহ এবং উভয়েরর ভিত্তিতে আমল ওয়াজেব।” [তাহযীবুল আসমা অল-লুগাত ১/৭৩]

০৬. শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেন, “আকাশের নিচে কুরআনের পর বুখারী-মুসলিম ছাড়া অন্য কোন কিতাব সবচেয়ে বেশী সহীহ নয়।” [মাকানাতুস সহীহায়ন ৬ পৃ:]

০৭. হাফেয মুহাদ্দিস আল-আলাঈ বলেন, “উম্মত এ ব্যাপারে একমত যে, বুখারী ও মুসলিম তাঁদের কিতাব সহীহায়নে সনদসহ যে সকল হাদীস বর্ণনা করেছেন, তার সবটাই সহীহ, তা পুনঃবিবেচ্য নয়।” [আন-নাক্বদুস সাহীহ, মুলত্বাক আহলিল হাদীস ৮৮/৪৩৮]

০৮. শায়খ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী বলেন, “বুখারী-মুসলিমের ব্যাপারে একমত যে, উভয় গ্রন্থে যে মুত্তাসিল মারফূ হাদীস রয়েছে, তা সুনিশ্চিতভাবে সহীহ। উক্ত গ্রন্থদ্বয় গ্রন্থকার পর্যন্ত মুতাওয়াতির। যে ব্যক্তি উভয়ের ব্যাপারে অবজ্ঞা প্রদর্শন করবে, সে ব্যক্তি বিদআতী এবং মু’মিনীনদের পথ ছেড়ে অন্য পথের অনুসারী।” [হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ১/২৮৩]

০৯. শায়খ আহমাদ শাকের বলেন, “হাদীস বিষয়ক তাহকীকারী আহলে ইলম এবং দলীল দেখে তাঁদের পথ অনুসরণকারীদের নিকট সন্দেহহীন হক কথা এই যে, সহীহায়নের সমস্ত হাদীসই সহীহ। এর মধ্যে কোন একটি হাদীসের মধ্যে কোন খোঁচা মারা বা দুর্বলতার স্থান নেই। অবশ্য দারাকুৎনী প্রমুখ কিছু হাদীসের হাফেযগণ তার কিছু হাদীসের সমালোচনা করেছেন। আর তা এই অর্থে যে, তাঁরা উভয়ে সহীহর যে শর্তে গ্রন্থ রচনা করেছেন, সেই শর্ত সব হাদীসের ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি; অর্থাৎ, সব হাদীসগুলি উচ্চ পর্যায়ের সহীহ নয়। পক্ষান্তরে হাদীস সহীহ হওয়ার ব্যাপারে কেউ মতবিরোধ করেন নি। সুতরাং রটনাকারীদের রটনা এবং ধারণাকারীদের ধারণা যেন আপনাকে শঙ্কিত না করে যে, সহীহায়নের হাদীস সহীহ নয়।” [আল-বাইসুল হাসীস ২৯ পৃ:]

১০. ইমাম নাওয়াবী (রহ.) এর অভিমত হলঃ
# বুখারী-মুসলিমের হাদীসসমূহেকে উম্মাহ সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছে।
# উভয় গ্রন্থের সকল হাদীসের উপর আমল ওয়াজেব।

# গ্রন্থ দু’টি কুরআনে আযীমের পর সবচেয়ে বেশী সহীহ গ্রন্থ।

# পরবর্তীকালের উভয়ের সনদ নিয়ে কোন প্রকার চিন্তা-গবেষণার কোন প্রয়োজন নেই।

# মুতাওয়াতির না হলে উভয় গ্রন্থের হাদীস সুদৃঢ় ধারণা সৃষ্টি করে।
[শারহে মুসলিম, ১৪-১৯ পৃ:]
-
মূল লেখকঃ আব্দুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী


Dr. Jakir naik mp3

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪

সম্মিলিত মুনাজাত করার ভুল পদ্ধতি


ফরজ নামাজ শেষে ঈমামগন মুসুল্লীদের কে নিয়ে যে সম্মিলিত মুনাজাত করে থাকেন,
এই ব্যাপারে উপমহাদেশের উলামারা কি বলেছেন:
--------------- --------------- ----------------------------------------------
* আল্লামা আঃ হাই লখনভী রহ. বলেন: বর্তমান সময়ে প্রচলিত প্রথা যে ঈমাম সালাত
শেষে সম্মিলিত ভাবে হাত তুলে দুয়া করেন সবাই কে নিয়ে এবং মুসুল্লীগন আমীন আমীন বলেন ! এ প্রথা রাসূল (সাঃ) এর যুগে ছিল না। (ফৎয়ায়ে আঃ হাই, ১ম খন্ড, ১০০ পৃঃ)* আল্লামা আবুল কাসেম নানুতুবী বলেনঃ ফরজ নামাজের শেষে সম্মিলিত মুনাজাত করা একটি নিকৃষ্ট বিদ'আত। (এমাদুদ্দিন পৃঃ৩৯৭)

* আশরাফ আলী থানভী রহ. বলেনঃ সালাতের পর এই সম্মিলিত মুনাজাত সম্পর্কে ঈমাম আরফাহ এবং ঈমাম গাবরহিনী বলেন, এই মুনাজাত কে মুস্তাহাব মনে করাও না-জায়েজ।( ইস্তিহবাবুদ দাওয়াহ পৃঃ৮)

* আল্লামা মুফতী শফী রহ. বলেনঃ সালাতের পর এই ভাবে সম্মিলিত ভাবে মুনাজাতের প্রমান রাসূল (সাঃ) অথবা কোন তাবেঈ বা কোন মাযহাবের ঈমাম এর নিকট হতেও পাওয়া যায় না, মূল কথা হলো এই পন্থাটা-ই হলো কুরান- সুন্নাহর বিপরীত কাজ। (আহকামে দুয়া পৃঃ১৩)

* মুফতী আযম ফয়জুল্লাহ হাটহাজারি রহ.বলেনঃ এই ভাবে মুনাজাত করার নিয়ম
শারীয়তে নেই আর না আছে কোন সাহীহ হাদিছে বা না কোন জাল অথবা দূর্বল
হাদিছে ! আর না কোন ফিকাহের কিতাবে ! এ দুয়া অবশ্য-ই বিদ'আত। (আহকামে দুয়া ২১ পৃঃ) !!! এর পরেও আমার বুঝে আসেনা আমাদের দেশের মসজিদ গুলোতে ঈমামগনেরা কিভাবে এই বিদ'আতটির নেতৃত্ব তাদের মসজিদে দিয়ে যাচ্ছেন ! আর
বর্তমানে আমার দেশে ইলমের চর্চা কত নিম্নে পৌছেছে যে হাজার হাজার আলেম-মুফতি, তারাও এ ব্যাপারে নীরব!!!
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে কোরান-সুন্নাহর পথে চলার তৌফিক দান করুক আমীন..

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...