শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭

ইমাম বুখারী (রঃ) এর জীবনী।

 ইমাম বুখারী (রঃ) এর জীবনী। 

                                              আসসালামু আলাইকুম
Save as PDF
                                                                                                        আমার ফেসবুক পেজ

 

     

                                                                            ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :                                                                    
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) 
৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"    ৭ . "green tech" এর সবগুলোই ভাল
নামঃ  মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল। কুনিয়াতঃ আবূ আবদুল্লাহ। লকবঃ শায়খুল ইসলাম ও আমীরুল মু’ মিনীন ফীল হাদিস।

বংশ পরিচয়ঃ  মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল ইবন ইবব্রাহীম ইবন মুগীরা ইবন বারদিযবাহ, আল জু’ফী আল বুখারী (রঃ)। ইমাম বুখারী (রঃ) এর ঊর্ধ্বতন পুরুষ বারদিযবাহ ছিলেন অগ্নিপূজক। বারদিযবাহ শব্দটি ফারসি। এর অর্থ কৃষক। তার পুত্র মুগীরা বুখারার গভর্নর ইয়ামান আল জু’ফি এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। এজন্য ইমাম বুখারীকে আল জু’ফী আর বুখারার অধিবাসী হিসেবে বুখারী বলা হয়।
ইমাম বুখারীর প্রপিতামহও মুগীরা এবং পিতামহ ইবরাহীম সম্বন্ধে ইতিহাসে বিশেষ কোন তথ্য পাওয়া যায় না। অবশ্য জানা যায় যে, তার পিতা ইসমা’ঈল (রঃ) একজন মুহাদ্দিস ও বুজুর্গ ব্যাক্তি ছিলেন। ইমামা মালিক, হাম্মাদ ইবন যায়েদ ও আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রঃ) প্রমূখ প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসের কাছে তিনি হাদিস শিক্ষা লাভ করেন। তিনি জীবনে কখনো হারাম বা সন্দেহজনক অর্থ উপার্জন করেননি। তার জীবিকা নির্বাহের উপায় ছিল ব্যবসাবাণিজ্য। তার আর্থিক অবস্থা ছিল সচ্ছল।
জন্ম ও মৃত্যুঃ  ইমাম বুখারী ১৯৪ হিজরীর ১৩ই শাওআল জুমু’আর দিন সালাতের কিছু পরে বুখারায় জন্ম গ্রহণ করেন। এবং ২৫৬ হিজরীর ১লা শাওয়াল শনিবার ঈদের রাতে ইশার সালাতের সময় সমরকন্দের নিকট খারতাংগ পল্লীতে ইনতিকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ১৩ দিন কম বাষট্টি বছর। খারতাংগ পল্লীতেই তাঁকে দাফন করা হয়।
ইমাম বুখারী (রঃ)-এর শিশু কালেই পিতা ইসমাইল (রঃ)ইনতিকাল করেন। তার মাতা ছিলেন পরহেজগার ও বুদ্ধিমতী। স্বামীর রেখে যাওয়া বিরাট ধনসম্পত্তির দ্বারা তিনি তার দুই পুত্র আহামদ ও মুহাম্মাদকে লালন-পালন করতে থাকেন। শৈশবে রোগে আক্রান্ত হলে মুহাম্মাদের চোখ নষ্ট হয়ে যায়, অনেক চিকিৎসা করে ও যখন তার দৃষ্টিশক্তি কিছুতেই ফিরে এল না, তখন তার মা আল্লাহ্‌র দরবারে খুব কান্নাকতি র দু’আ করতে থাকেন। এক রাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, এক বুযুর্গ ব্যাক্তি তাঁকে এই বলে সান্তনা দিচ্ছেন যে, তোমার কান্নাকাটির ফলে আল্লাহ তা’আলা তোমার ছেলের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।  সপ্নেই তিনি জানতে পারলেন সেই বুযুর্গ হজরত ইব্রাহীম (আঃ)। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলেন যে, সত্যিই তার পুত্রের চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে এসেছে। বিস্ময় আর আনন্দে তিনি আল্লাহ্‌র দরবারে দু’রাকাত শোকরানা সালাত আদায় করেন।*
পাঁচ বছর বয়সেই মুহাম্মাদকে বুখারার এক প্রাথমিক মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়া হয়। মুহাম্মাদ বাল্যকাল থেকেই প্রখর স্মৃতিশক্তি ও মেধার অধিকারী ছিলেন। মাত্র ছয় বছর বয়সেই তিনি কুরআন মজীদ হিফজ করে ফেলেন এবং দশ বছর বয়সে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। দশ বছর বয়সে তিনি হাদীসশাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য বুখারার শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম দাখিলী (রঃ)-এর হাদিস শিক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সে যুগের নিয়মানুসারে তার সহপাঠীরা খাতা কলম নিয়ে উস্তাদ থেকে শ্রুত হাদীস লিখে নিতেন, কিন্তু ইমাম বুখারী (রঃ) খাতা কলম কিছুই সঙ্গে নিতেন না। তিনি মনোযোগের সাথে উস্তাদের বর্ণিত হাদীস শুনতেন। ইমাম বুখারী (রঃ) বয়সে সকলের থেকে ছোট ছিলেন। সহপাঠীরা তাঁকে এই বলে ভৎসনা করত যে, খাতা কলম ছাড়া তুমি অনর্থক কেন এসে বস? একদিন বিরক্ত হয়ে তিনি বললেনঃ তোমাদের লিখিত খাতা নিয়ে এস। এতদিন তোমরা যা লিখেছ তা আমি মুখস্থ শুনিয়ে দেই। কথামতো তারা খাতা নিয়ে বসল আর এত দিন শ্রুত কয়েক হাজার হাদীস ইমাম বুখারী (রঃ) হুবহু ধারাবাহিক শুনিয়ে দিলেন। কথাও কোন ভুল করলেন না। বরং তাঁদের লেখার ভূল-ত্রুতি হয়েছিল, তারা তা সংশোধন করে নিল। বিস্ময়ে তারও হতবাক হয়ে গেল। এই ঘটনার পর ইমাম বুখারী (রঃ) এর প্রখর স্মৃতিশক্তির কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
ষোল বছর বয়সে ইমাম বুখারী (রঃ) বুখারা ও তার আশপাশের শহরের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ থেকে বর্ণিত প্রায় সকল হাদীস মুখস্থ করে নেন। সেই সাথে মুসলিম বিশ্বের খ্যাতিমান মুহাদ্দিস আবদুল্লাহ ইবনুল-মুবারক ও ওয়াকী ইবনুল-জাররাহ (রঃ)-এর সংকলিত হাদীস গ্রন্থসমূহ মুখস্থ করে ফেলেন। এরপর তিনি মা ও বড় ভাই আহম্মদের সাথে হজ্জে গমন করেন। হজ্জ শেষে বড় ভাই ও মা ফিরে আসেন। ইমাম বুখারী (রঃ) মক্কা মুকাররামা ও মদীনা তাইয়্যেবাহ কয়েক বছর অবস্থান করে উভয় স্থানের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণের নিকট থেকে হাদীস শিক্ষা লাভ করতে থাকেন। এই সময় তিনি ‘কাযায়াস-সাহাবা ওয়াত-তাবিঈন’ শীর্ষক তাঁর প্রথম গ্রন্থ রচনা করেন। এরপর মদীনায় অবস্থানকালে চাঁদের আলোতে ‘তারীখে কবীর’ লিখে।।

ইমাম বুখারী (রঃ)হাদীস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র কূফা, বসরা, বাগদাদ, সিরিয়া, মিসর, খুরাসান প্রভৃতি শহরে বার বার সফর করেন। সেই সকল স্থানের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসদের থেকে তিনি হাদীস শিক্ষালাভ করেন। আর অন্যদের তিনি হাদীস  শিক্ষাদান করতে থাকেন এবং সঙ্গে সঙ্গে গ্রন্থ রচনায়ও ব্যাপৃত থাকেন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘জামি’ সহীহ বুখারী  শরীফ সর্বপ্রথম মক্কা মুকাররামায় মসজিদে হারামে প্রণয়ন শুরু করেন এবং দীর্ঘ ষোল বছর সময়ে এই বিরাট বিশুদ্ধ গ্রন্থ রচনা সমাপ্ত করেন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইমাম বুখারী (রঃ) অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। তিনি নিজেই বলেছেন যে, একলাখ সহীহ ও দুইলাখ গায়ের সহীহ হাদীস তাঁর মুখস্থ ছিল। তাঁর এই অস্বাভাবিক ও বিস্ময়কর স্মৃতিশক্তির খ্যাতি সারা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিভিন্ন শহরের মুহাদ্দিসগণ বিভিন্নভাবে তাঁর এত স্মৃতিশক্তির পরীক্ষা করে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছেন এবং সকলের স্বীকার করেছেন যে, হাদীসশাস্ত্রে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। এ সম্পর্কে তাঁর জীবনী গ্রন্থে বহু চমকপ্রদ ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। মাত্র এগার বছর বয়সে বুখারার বিখ্যাত মুহাদ্দিস দাখালী’র হাদীস বর্ণনা কালে যে ভুল সংশোধন করে দেন, হাদীস বিশারদগণের কাছে তা সত্যিই বিস্ময়কর । ইমাম বুখারি এক হাজারেরও বেশী সংখ্যক মুহাদ্দিস থেকে হাদীস শিক্ষা লাভ করেছেন। তাঁদের মধ্যে মাক্কী ইবন ইবরাহীম, আবূ আসিম, ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল, আলী ইবনুল মাদানী, ইসহাক ইবন রাহওয়াসহ, হুমাইদী , ইয়াহইয়া, উবায়দুল্লাহ ইবন মূসা, মুহাম্মদ ইবন সালাম আল বায়কান্দী ও মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ আল ফারইয়াবী (রঃ) প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর উস্তাদদের অনেকেই তাবিঈদের থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবার তিনি তাঁর বয়ঃকনিষ্ঠদের থেকেও হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী (রঃ) এর থেকে বুখারী শরীফ শ্রবণকারীর সংখ্যা নব্বই হাযারেরও অধিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর ছাত্রসংখ্যা বিপুল। তাঁদের মধ্যে ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, আবূ হাতিম আর রাযী (রঃ) প্রমুখ প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসের নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।


ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

"কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

কোন মন্তব্য নেই:

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...