সাংবাদিক ইকবাল হাসান জাহিদ ভাইর post থেকে .................
খেলাফত মজলিসের আমার শ্রদ্ধেয় এক নেতা মাওলানা নেজামির ফাঁসির পরের দিন লন্ডনে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন- "বাংলার ঘরে ঘরে নেজামি তৈরি হবে।"
আমি তাঁর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেছিলাম, বক্তব্য যদি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে হয়ে থাকে তাহলে তাঁকে অবশ্যই খেলাফত মজলিসের রাজনীতি বাদ দিয়ে জামায়াতে যোগ দেয়া উচিত। কারণ খেলাফত মজলিস ঘরে ঘরে আল্লামা আজিজুল হক, মাওলানা ইসহাক, প্রিন্সিপ্যাল হাবিবুর রহমান হওয়ার কথাই শেখায়। সেজন্য তিনি নিজে দায় স্বীকার করে বের হয়ে যাওয়া উচিত।
আর যদি তিনি আবেগে অনিচ্ছাবশত বলেই ফেলেন, তাইলে তাকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ফিরে আসা উচিত।
সেদিন আমার এই সরল চিন্তা ও রাজনৈতিক দর্শনের সাথে খেলাফত মজলিসের অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করলেও জমিয়তের নেতাকর্মীদের অনেকেই বাহবা দিয়ে পিটচাপড়ে দিয়েছিলেন। তারা আমার ইনবক্স সমৃদ্ধ করেছিলেন ধন্যবাদ আর মারহাবা দিয়ে।
গতকাল জমিয়তের নৈতিক কিছু বিষয়াবলী নিয়ে আলোচনা করায় জমিয়তের নেতাকর্মীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ইনবক্সে ডিলিট করার অনুরোধও করেছেন। তবে খেলাফতের কেউ বাহবা দেয়নি এখনো।
কথা হচ্ছে, ভাই! নিজের দলের বিষয়ে কিচ্ছু লিখলেই সেটা ইন্টারনাল হয়ে যায়। আর, রানা প্লাজার যুবলীগের রানা ডাকাতের কারণে তার দলকে বলা হয় ডাকাতলীগ, শ্রমীকলীগের তুফানের ধর্ষণের কারণে বলা হয় ধর্ষকলীগ! সেইটা কোন যুক্তিতে বলেন? আর তারাও তো সহ্য করে যেতে হয় বছরের পর বছর। এক জনের কারণে পুরা দলকে খারাপ মন্তব্য করেন। আপনারা যদি আওয়ামীলীগ বিএনপির সমালোচনাকে গণতান্ত্রিক অধিকার মনে করেন, তাইলে যৌক্তিক কারণে আপনাদের দলের সমালোচনাকে অগণতান্ত্রিক বা অনাধীকারচর্চা বলবেন কেনো? নাকি "বিচার মানি তালগাছ আমার" এইটাই চলছে। ভাইরে গণতান্ত্রিক রাজনীতি করলে গণতন্ত্রের সবগুলোই মানতে হবে। "মাংশ খাই না, ঝুল খাই" নীতিতে আর যাই হোক রাজনীতি হবে না।
কথা হলো, কোনো দল ভালো কোনো কাজ করলে তাকে ভালো বলে উতসাহ দেয়া, খ্রাপ কোনো কাজ করলে তার খারাপের বিষয়টা দেখিয়ে দেয়া এটাইতো গণতন্ত্র। নাকি নিজের বগলতলীর সব পারফিউম, অন্যেরটা ডাস্টবিন থেকেও নিকৃষ্ট।
কারো কথা আপনার হজম নাও হতে পারে। ছেলে প্রতিদিন স্কুলে যাক, সকল বাবাই সেটা চায়। কিন্তু সকল সন্তানের জন্য বাবার এই চাওয়া অন্যায্য মনে হয়। হজম হতে চায় না। সকল সন্তানই চায় ডায়াবেটিস রোগী-বাবাকে মিষ্টি থেকে বাঁচিয়ে কম খাইয়ে দুইদিন বেশি জিন্দা রাখতে। কিন্তু অনেক মিষ্টিখেকো প্রাণের বাবারা সন্তানের কেয়ারে বিরক্তিবোধ করেন। এই বিরক্তির কারণে বাবাকে তো আর মিষ্টি খাইয়ে নির্ঘাত মরণের দিকে ঠেলে দিতে পারে না।
যাই হোক। দেশে রাজনৈতিক দল করবেন আর মক্কার ইমাম সাহেবের মতো একেবারে নিষ্কলুষ থাকার দাবী ও আশা করবেন এইটা কেমন কথা। আমি কোনো ইসলামি দলকেই অপছন্দ করি না। কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে আমাদেরকে অটল থাক্তেই হবে। দ্বিমুখি নীতি নিয়ে রাজনীতি করলে আপনার বাহ্যিক উন্নতি হলেও জাতির কপালে দুর্যোগই ডেকে আনবেন।
আমাদের এখনো বোধোদয় ঘটুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন