মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০১৭

নামাযে যা কিছু পড়া হয় তার সব কিছুর অর্থ কি আমরা জানি? না জানা থাকলে আসুন জেনে নিই।

নামাযে যা কিছু পড়া হয় তার সব কিছুর অর্থ কি আমরা জানি? না জানা থাকলে আসুন জেনে নিই।


বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। এই যুগে আমরা যেকোনো কাজ করার আগে তার অর্থ বা এই কাজ করার যৌক্তিকতা তালাশ করি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত/নামায ফরজ করেছেন তা আমরা বুঝে পড়ি না বা বোঝার চেষ্টাও করিনা(সালাত/নামায কেন এবং কীভাবে পড়বো তাও হয়তো জানি না)। হাশরের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সালাত/নামাযের হিশাব সর্বপ্রথম নিবেন। তাই আমাদের সকলকে সালাত/নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। নিচে সালাত/নামাযে আমরা কী পড়ি সে সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।
.তাকবীরে তাহরীমাঃ
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার অর্থঃ আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
.ছানাপড়াঃ
উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওবিহামদিকাওতাবারাকাছমুকা ওতাআলাজাদ্দুকা ওলাইলাহাগইরুক।
অর্থঃ আয়আল্লাহ! আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছিতোমার প্রশংসার সহিত, বরকতময় তোমার নাম। সুউচ্চতোমার মহিমা। এবং তুমি ভিন্ন কোন মাবুদনাই।
.আউযুবিল্লাহ পড়াঃ
উচ্চারণঃ আউযুবিল্লা হিমিনাশ শায়তানির রাঝিম। অর্থঃআমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয়প্রার্থনা করছি।
.বিসমিল্লাহ পড়াঃ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। অর্থঃপরমকরুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
.সূরা ফাতিহা পড়াঃ
উচ্চারণঃ ()আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন, ()আররাহমানির রাহিম, ()মালিকি ইয়াওমিদ্দিন, ()ইয়্যাকা নাবুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন, ()ইহদিনাসসিরাতাল মুসতাকীম, ()সিরাতল্লাযিনা আনআমতা আলাইহিম, ()গাইরিলমাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দ—লিন।(আমীন)
অর্থঃ ()সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, ()যিনি সমস্ত জগতসমূহের সৃষ্টিকর্তারক্ষাকর্তাপালনকর্তা। ()যিনি দয়াময়অত্যন্ত দয়ালুযিনি বড় মেহেরবান। ()যিনি কর্মফল দিবসের একচ্ছত্র মালিক। ()আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করিতেছি এবং তোমারই নিকট সাহায্য  প্রর্থনা করিতেছি। ()আমাদেরকে দোখাও সঠিক সরল পথ। ()তাদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করিয়াছ। যারা তোমার অনুগ্রহের পাত্র হইয়াছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার পক্ষ থেকে গযব নাযিল হয়েছে।
বিঃ দ্রঃ উক্ত সূরা(ফাতিহাশেষ করার পর আমীন বলতে হবে এবং সূরা ফাতিহা তথা আলহামদুর সাথে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব। তবে ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে তা নির্দিষ্ট।


রুকুর তাসবীহ পড়াঃ
উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম। অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
রুকু হইতে উঠিবার সময়ের তাসবীহ পড়াঃ
উচ্চারণঃ সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ অর্থঃ যে আল্লাহর প্রশংসা করিয়াছেআল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করিয়াছেন।
রুকু থেকে উঠে দাড়িয়ে থেকে পড়তে হবেঃ
উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়্যেবান মুবারাকানফিহ। অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক অধিক অধিক প্রশংসা ও পবিত্রতা তোমারই। (এখানে  রাব্বানা লাকাল হামদ পর্যন্ত পড়লেও হবে।)
সেজদায় তাসবীহ পড়াঃ
উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আলা। অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
১০উভয় বৈঠকে(বসা অবস্থায়তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পড়াঃ
উচ্চারণঃ আত্যাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওস্ সলাওয়াতু ওত্ তয়্যেবাতু আসসালামুআলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওরাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু আসসালামুআলাইনা ওয়ালা ঈবাদিল্লাহি সসলিহিনা আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদাং আবদুহু ওয়ারাসূলুহ।
অর্থঃ সমস্ত মৌখিক ইবাদাতসমস্ত শারীরিক ইবাদাত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবী!আপনার উপর শান্তি ও তাহার বরকতসমূহ নাযিল হউক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তাআলার নেক বান্দাদের প্রতি তাঁহার শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যেআল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন মাবুদ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিতেছি যেহযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
১১.দুরুদ পড়াঃ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লেআলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মদ কামা সল্লেইতাআলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিকআলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মদ কামা বারাকতাআলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।
অর্থঃ হে আল্লাহতুমি রহমত বর্ষণ কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতিযেমন রহমত বর্ষণ করিয়াছ ইবরাহীম(.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত। হে আল্লাহতুমি বরকত নাযিল কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতিযেমন বরকত নাযিল করিয়াছ ইবরাহীম(.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত।
১২দুআয়ে মাসূরা পড়াঃ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতুনাফসি যুলমাং কাসিরাও ওলা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আংতা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিনইংদিকা ওয়ারহামনি ইন্নাকা আংতাল গফুরুর রাহিম।
অর্থঃ হে আল্লাহআমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করিয়াছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ সমূহ ক্ষমা করিবার আর কেহই নাই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর তোমার নিজের পক্ষ হইতে এবং আমাকে দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীলদয়াবান।
এখন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলে ডানদিকে ও বামদিকে সালাম দিয়ে নামায শেষ করতে হবে।
অর্থঃ (হে মুক্তাদী ও ফেরেশ্তাগনতোমাদের উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোউক।

সংগ্রহীত - কুরআন ও বিজ্ঞান 

কোন মন্তব্য নেই:

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...