ফেইসবুকে শেয়ার করুন
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস" ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) ৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম" ৭ . "green tech" এর সবগুলোই ভাল
(১) # মাযহাব_কি ?(২) # হানাফী_মাযহাব_কি ?
(৩) # মাযহাব_কেন_মানব
েন_কেন_মানবেননা ??
_______________________________
অনেকে হানাফী মাযহাব কি বুঝেন না। আমাদের কি
মাযহাব মানতে হবে নাকি হবেনা, এনিয়ে প্রশ্ন করেন।
তাদের জন্য অত্যন্ত সহজ ভাষায় কিছু কথা পেশ করা
হলো।
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ নামের একজন
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী বিদ্বান লোক ছিলেন (তাবেয়ী হচ্ছে
যারা কোন না কোন একজন সাহাবীর সাক্ষাৎ
পেয়েছিলেন)। তাঁর জন্ম হয়েছিলো ৮০ হিজরীতে, এবং
মৃত্যু হয়েছিলো ১৫০ হিজরীতে। আবু হানীফা ছিলো
তার ‘ক্বুনিয়া’ বা উপনাম, তাঁর আসল নাম হচ্ছে
নুমান বিন সাবিত।
ইমাম আবু হানীফা হচ্ছেন আহলে
সুন্নত ওয়াল জামআ’তের একজন সম্মানিত আলেম ও
ইমাম (অনুসরণীয় ব্যক্তি), অত্যন্ত দানশীল ও
পরহেযগার একজন ব্যক্তি।
ইমাম আয-যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ আবু হানীফা
সম্পর্কে লিখেছেন, “ইমাম আবু হানীফা মুসলিম
জাতির জন্যে একজন উস্তাদ (মহান শিক্ষক),
অত্যন্ত মুত্তাক্বী (পরহেজগার ব্যক্তি), আল্লামাহ
(মহা বিদ্বান), যাহিদ (দুনিয়া বিমুখ ও পরকালমুখী),
আ’রিফ (আল্লাহর জন্যে নিজেকে একনিষ্ঠভাবে
উৎসর্গীকৃত বান্দা) ছিলেন।
তিনি জীবনে কোনদিন
সরকারী ভাতা বা পুরষ্কার গ্রহণ করেন নাই, নিজ
ব্যবসা দ্বারা স্বীয় জীবিকা নির্বাহ
করতেন।” [তাযকিরাতুল হুফফাজঃ ১ম খন্ড, ১৫১পৃষ্ঠা]
“মাযহাব” শব্দের অর্থ হচ্ছে রাস্তা, পথ বা চলার
পদ্ধতি।
সুতরাং, ‘হানাফী মাযহাব’ কথাটির দ্বারা
উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইমাম আবু হানীফার চলার পদ্ধতি বা
তাঁর অনুসৃত তরীকা। এখন প্রশ্ন হতে পারে, ইমাম
আবু হানীফার কিভাবে চলতেন? এ প্রসঙ্গে তিনি
নিজেই বলেন, “ইযা সাহহাল হাদীস, ফাহুয়া মাযহাবি।”
অর্থাৎ, যখন কোনো সহীহ হাদীস পাবে, জেনে
রাখো সেটাই হচ্ছে আমার মাযহাব।” [হাশিয়াহ ইবনে
আবেদীনঃ ১/৬৩, রাদ্দুল মুহতারঃ ১ম খন্ড, ৪৬২
পৃষ্ঠা]
অর্থাৎ তিনি কখনো কোনো ফতোয়া দিলেন আর
পরে দেখা গেলো যে, সেটা সহীহ হাদীস সম্মত নয়,
তখন সহীহ হাদীসই হবে তাঁর মাযহাব। কারণ,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম
আমাদের মাঝে আদর্শ হিসেবে ‘কুরআন’ ও ‘সুন্নাহ’
রেখে গেছেন, কোনো নির্দিষ্ট একজন ইমাম বা পীর-
বুজুর্গকে রেখে যান নাই। তাই কুরআন ও সুন্নাহর
বিপরীত সমস্ত কিছুই ভুল ও বাতিল।
সুন্নাহর লিখিত রূপ বা দলিল হচ্ছে- হাদীস।
হাদীসের
মাঝে কিছু আছে মিথ্যা (জাল), আর কিছু আছে জয়ীফ
(দুর্বল), যেইগুলো দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য না।
এজন্যে ইমাম আবু হানীফা একথা বলেন নি যে, হাদীস
পেলেই সেটা আমার মাযহাব। বরং, তিনি বলেছেন,
“যখন কোনো “সহীহ” হাদীস পাবে, সেটাই আমার
মাযহাব।”
সমস্ত আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত, বুখারী ও
মুসলিমের সবগুলো হাদীস সহীহ। সুতরাং, বুখারী ও
মুসলিমে বর্ণিত বা অন্য যেকোনো হাদীসের কিতাবে
বর্ণিত কোন “সহীহ হাদীস” যদি ইমাম আবু হানীফার
মতের সাথে সামাজস্যপূর্ণ না হয় অথবা, বিপরীত হয়,
সেক্ষেত্রে সহীহ হাদীসটাই হবে ইমাম আবু হানীফার
মাযহাব।
________________________________
# আমরা_মাযহাব_কিভাবে_মানবো ?
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা
রাহিমাহুল্লাহর কাছে একবার এক লোক এসে বললো,
“শায়খ আমি আমার মাযহাব পরিবর্তন করতে চাই।
কারণ, আমি দেখলাম আমার মাযহাবের অনেক
ফতোয়াই আসলে সহীহ হাদীসের বিপরীত।”
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ তখন তাকে
বললেন, “দেখুন আপনি যদি আপনার মাযহাব
পরিবর্তন করে অন্য মাযহাবে যান, তাতে কি লাভ?
কারণ, কিছুদিন পরে আপনি দেখবেন আপনার নতুন
মাযহাবেও কম বেশি কিছু ভুল ফতোয়া আছে।
[ব্যাখ্যাঃ- চারটা মাযহাবেই আসলে কিছুনা কিছু ভুল
ফতোয়া আছে, যা কুরআন অথবা সহীহ হাদীসের সাথে
সামাজস্যপূর্ণ নয়। এই ভুল ফতোয়া আছে বলেইতো
মানুষ চারটা ভাগে ভাগ হয়েছে।
সবাই যদি ১০০% সঠিক
থাকতো, তাহলেতো আর কোন ভাগাভাগিই
হতোনা, তাইনা?
সুতরাং আপনি যখন নতুন মাযহাবে গিয়ে সেখানেও
কিছুনা কিছু ভুল দেখবেন, তখন বলবেন, আমি আবার
মাযহাব পরিবর্তন করবো। অথবা, তখন আফসোস
করে বলবেন, আগের মাযহাবইতো ভালো ছিলো!
তাই আপনি মাযহাব পরিবর্তন না করে বরং এক কাজ
করুন, আপনি যেই মাযহাবে আছেন সেই মাযহাবেই
থাকুন, কিন্তু সেটাকে তিন ভাগে ভাগ করুন।
(১) প্রথম ভাগ হচ্ছে, আপনি যেই মাযহাবে আছেন
সেই মাযহাবের যেই ফতোয়াগুলো কুরান ও সুন্নাহ
দ্বারা প্রমানিত এবং সঠিক বলে বিবেচিত, দলীল-
প্রমান অনুযায়ী যেই ফতোয়াগুলি গ্রহণযোগ্য ও
অনুসরণীয়, আপনি সেইগুলো মেনে চলুন, সেইগুলোর
উপর আমল করুন।
এতে তো আপনি আসলে নবী
মুহা’ম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই
অনুসরণ করছেন।
(২) দ্বিতীয় ভাগ হচ্ছে, আপনার মাযহাবের যেই
ফতোয়াগুলি কুরান ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী ভুল,
আপনার মাযহাবের যেই ফতোয়াগুলো অন্যান্য
হক্কপন্থী নির্ভরযোগ্য মুহাক্কিক আলেমরা ভুল
বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন, আপনি সেইগুলো ছেড়ে
দিয়ে কুরান ও সুন্নাহ ও আলেমদের সঠিক ফতোয়াকে
মেনে নিন। সে ব্যপারে মাযহাবের কোন ভুল ফতোয়া
থাকলে সেটা ছেড়ে দিয়ে সুন্নতের উপর আমল করুন।
(৩) আর যেই ফতোয়ার ব্যপারে সরাসরি কুরান ও
হাদীসের কোন বক্তব্য নেই, যেই ব্যপারে আসলে
আমরা কোন না কোন ইমাম বা আলেমের কথা
মানছি, অর্থাৎ ফকীহগণের “ইজতিহাদ” বা
“কিয়াসের” অনুসরণ করছি, সে ব্যপারে আসলে এই
সবগুলো হচ্ছে আলেমদের অনুমান বা যুক্তি। কেউই
চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত না, কারণ কুরান ও হাদীসে
এ ব্যপারে সরাসরি কিছু আসেনাই। এইরকম ব্যাপারে
আসলে আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে, ইমাম ও
আলেমদের অনুসরণ করতে। সুতরাং, এই ব্যপারে
আপনার কাছে যেটা সঠিক এবং সহজ মনে হবে, সেটা
করুন।
(উৎসঃ ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহর
ফতোয়াটা শায়খ উয়াসী উল্লাহ আব্বাস
হা’ফিজাহুল্লাহর একটা প্রশ্নোত্তর পর্বের টেপ
থেকে নেওয়া।)
এখন এতো গেলো যার পক্ষে সম্ভব যাচাই বাছাই
করা, আসলে কোনো ব্যপারে দলীল আছে কি নেই,
এখন অনেকে আছে, যার পক্ষে আসলে কুরান ও
হাদীসের দলীল যাচাই করা সম্ভব না। ধরুন কেউ
আরবীই জানেনা, পড়তে জানেনা, আলেমদের কাছ
থেকে শেখার কোনো সুযোগ নাই যে আসলে কোনটা
সঠিক কোনটা ভুল ধরতে পারবে না, অথবা ধরুন
আমাদের নানী দাদী, যাদের বয়স ৭০-এর উপরে, তাদের
পক্ষেতো কোনদিনই সম্ভব না যে, এইগুলো ঘেটে
দেখা।
তাহলে তারা কি করবেন?
সাধারণ মানুষ যারা কুরআন ও হাদীস থেকে গবেষণা
করে কোনো মাসয়ালা-মাসায়েলের উত্তর বের করার
যোগ্যতা রাখেন না, তারা নির্ভরযোগ্য কোনো
আলেমকে জিজ্ঞাসা করে সেটার উত্তর জেনে নেবেন।
যেমন- আল্লাহ তাআ’লা আদেশ করে বলেছেন, “ফাস-
আলু আহলায-যিকরি ইন কুনতুম লা তাআ'লামুন।”
অর্থঃ যদি তুমি না জানো, তাহলে যারা জ্ঞানী
তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাস করে জেনে নাও। [সুরা
আল-আম্বিয়াঃ ৭]
কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, যাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে
তিনি একজন সৎ ও যোগ্য আ’লিম ব্যক্তি যেন হোন।
কোন
বিদাতী বা জাহেল, যে কিনা আলেমের পোশাক পরে
সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে, তাদের কাছ থেকে
দ্বীন নেওয়া যাবেনা।
আজকাল এমন অনেক বের
হয়েছে, বড় বড় টাইটেল আর ডিগ্রী দেখিয়ে বেড়ায়,
কিন্তু মূলত তারা পথভ্রষ্ট।
এমন মনপূজারী, বিদাতী
আলেমদের থেকে ��সাবধান�।
আপনারা চেষ্টা করবেন নির্ভরযোগ্য আলেমদের বই-
পুস্তক বা ওয়াজ লেকচার সংগ্রহ করার জন্যে, এবং
তাঁদের থেকে ইসলাম জানা ও শেখার জন্যে।
# ইসলাম
শেখাটা দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম কাজ। সুতরাং,
কোনো প্রতারককে আপনার দ্বীনকে ধ্বংস করার
সুযোগ দিবেন না।
কেয়ামতের দিন কেউ কারো
উপকারে আসবেনা।
সবসময় আল্লাহর কাছে দুয়া
করবেন, আল্লাহ যেনো আমাকে হেদায়েতের উপরেই
মৃত্যু দান করেন।
আর চেষ্টা করেন, যতটুকু বুঝেন তার
উপর আমল করার জন্য এবং মানুষের কাছে পৌঁছে
দেওয়ার জন্যে।
আশা করা যায়, আপনি ভ্রান্ত
মতবাদ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন ইনশা’আল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের সকলের প্রতি রহম
করুন, আমীন,ছুম্মাআমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন