বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭

সূরাহ ফাতিহাহ —আমরা যা শিখিনি --- (পর্ব ৫) আয়াত-- ৪

 


ইসলামিক জীবন সাজাতে অ্যাপস :                                                                    
১. "কুরআনের কথা" ২ ."বাংলা হাদিস"  ৩ ."আল-হাদিস" ৪ ."কম্পিউটার অ্যাপস -- "জিকির" ৫ .Al Quran (tafsir & by word) 
৬. Doa and Zikir (Hisanul Muslim) "হিসনুল মুসলিম"    ৭ . "green tech" এর সবগুলোই ভাল

مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
যিনি বিচার দিনের মালিক

মালিক :

আল্লাহ تعالى এখানে খুব অল্প কিছু শব্দ ব্যবহার করে আমাদেরকে বলে দিয়েছেন যে, যদিও তাঁর করুণা অসীম, কিন্তু তারপরেও আমাদেরকে আমাদের কাজের বিচার দিতে হবে এবং বিচারক হবেন স্বয়ং আল্লাহ تعالى। কেউ আমাদেরকে সেদিন তাঁর বিচার থেকে রক্ষা করতে পারবে না এবং কেউ কোনো কাজে আসবে না। কারণ আল্লাহ تعالى বিচার দিনের মালিক, যেই বিচার দিনের কোনো শেয়ার হোল্ডার নেই।
আরবি মালিক শব্দটির দুটো উচ্চারন রয়েছে, মালিক এবং মা-লিক। মালিক অর্থ রাজা। মা-লিক অর্থ অধিপতি। এখানে আল্লাহ تعالى লম্বা মা-লিক ব্যবহার করেছেন, যার অর্থ: আল্লাহ تعالى বিচার দিনের একমাত্র অধিপতি। এই দিন তিনি ছাড়া আর কারও কোনো ক্ষমতা থাকবে না। তিনি হবেন সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। যেমন: একজন রাজার হয়তো অনেক বড় রাজত্ব আছে এবং প্রতিটি প্রজা তার হুকুম শুনে। কিন্তু একজন প্রজা তার বাড়ির ভিতরে তার আসবাব পত্রের সাথে কী করবে, সেটা পুরোপুরি তার ব্যাপার। এখানে রাজার কিছুই বলার নেই। প্রজা হচ্ছে তার আসবাবপত্রের মা-লিক, সে যা খুশি তাই করতে পারে তার আসবাবপত্র নিয়ে। একই ভাবে আল্লাহ হচ্ছেন বিচার দিনের মা-লিক, সেদিন সব ক্ষমতা থাকবে তাঁর। তাকে কোনো বোর্ড মেম্বারদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে না।
এখানে একটা লক্ষ্য করার ব্যাপার রয়েছে: কেন বিচার ‘দিনের’ অধিপতি? কেন বিচারের অধিপতি নয়? আমরা যখন বলি – ওই বাড়িটা আমার, তার মানে সাধারণত দাঁড়ায় ওই বাড়ির ভেতরে যা কিছু আছে তার সবই আমার। এমনটা নয় যে বাড়িটা আমার, কিন্তু বাড়ির ভেতরে সব আসবাবপত্র অন্য কারো। একইভাবে আল্লাহ تعالى যখন বলেন: তিনি বিচার দিনের মালিক, তার অর্থ বিচার দিনে যা কিছু হবে, তার সব কিছুর একমাত্র অধিপতি তিনি। বিচার দিন একটা লম্বা সময় এবং সে দিনে অনেকগুলো ঘটনা ঘটবে, যার সবকিছুরই একমাত্র অধিপতি তিনি। তিনি হবেন একমাত্র জজ। তিনি নিজে প্রত্যেকের বিচার করবেন, কোনো উকিল ধরার সুযোগ থাকবে না।
আরবিতে ইয়াওম يَوْم এর বেশ কিছু অর্থ হয় – দিন, যুগ, পর্যায়, লম্বা সময়। যদিও সাধারণত ‘ইয়াওমি দ্দিন’ সবসময় ‘বিচার দিন বা প্রতিদানের দিন’ অনুবাদ করা হয়, কিন্তু আমরা যদি ইয়াওমের অন্য অর্থগুলো দেখি, তাহলে এটা ‘প্রতিদানের পর্যায়’ অনুবাদ করা যেতে পারে। এটা যে আমাদের একটি দিনের সমান নয় বরং একটা লম্বা পর্যায়, তা ইয়াওমের বাকি অর্থগুলো ইঙ্গিত করে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো: কেন আল্লাহ تعالى এর আগের আয়াতে তাঁর দয়ার কথা বলার পর এই আয়াতে শাস্তির কথা না বলে বিচারের কথা বললেন। এর কারণ হচ্ছে, কিয়ামতের দিন দুই ধরণের মানুষ থাকবে – ১) যারা আল্লাহর تعالىরহমত পেয়ে জান্নাতে যাবে, আর ২) যারা ন্যায় বিচার পেয়ে জাহান্নামে যাবে।
জাহান্নাম কোনো অন্যায্য শাস্তি নয়, সেটি ন্যায় বিচার। আল্লাহ تعالى কাউকে শাস্তি দেন না, তিনি ন্যায় বিচার করেন। যারা জান্নাত পায়, তারা আল্লাহর অসীম অনুগ্রহের জন্য জান্নাত পায়, বিচারের জন্য নয়। সত্যিই যদি আল্লাহ تعالىআমাদের ভালো কাজগুলোর শুধুমাত্র বিচার করে আমাদেরকে প্রতিদান দিতেন, তাহলে আমাদের সর্বনাশ হয়ে যেত। তখন আপনার আমার একটা নামাজও সঠিক নামাজ হতো না, কারণ আমরা নামাজে দাঁড়িয়ে এমন কিছু নাই যা ভাবি না। আমাদের একটা রোজাও ‘সিয়াম’ হতো না, কারণ আমরা রোজা রেখে মিথ্যা কথা বলি, হিন্দি সিরিয়াল দেখি, সুদ খাই, উল্টো পাল্টা জিনিসের দিকে তাকাই, আজে বাজে কথা শুনি ইত্যাদি। আমাদের যাকাত কোনো যাকাত হতো না, কারণ আমাদের অনেকের যাকাত হচ্ছে লোক দেখানো একটা ব্যাপার, যেখানে আমরা আমাদের মোট সম্পত্তির হিসাব যত কম করে করা যায় তা করে, তার ২.৫% যাদেরকে দিলে লোকমুখে অনেক নাম হবে, তাদেরকেই বেশি করে দেই। আমাদের বিরাট সৌভাগ্য যে আল্লাহ تعالى আমাদের কিছু ভালো কাজকে ১০ গুণ, কিছু ভালো কাজকে ১০০ গুণ, ১০০০ গুণ করে হিসাব করবেন। তা না হলে কেউ কোনোদিন জান্নাত পেত না।
আমরা প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহর تعالى সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ ধারণা পেলাম। এখন আমরা জানি আমাদের প্রভু কে। সুতরাং আমাদের এখন বলা উচিৎ—

দোয়া ও যিকির Doa and Zikir (Hisanul Muslim)
কুরআনের তাফসীর (word by word)
আল-হাদিস ডাউনলোড করুন 
"বাংলা হাদিস" download করুন
দ্বীনের ডাকের সকল পোষ্ট

আরো দেখুন :

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

"কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]



কোন মন্তব্য নেই:

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ফেইসবুকে শেয়ার করুন   টুইটারে টুইট   প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন...